বরিশাল: আর মাত্র কয়েকদিন বাদে শুরু হবে বোরো ধান কাটা। আগাম জাতের ধান ইতোমধ্যে পাকতে শুরু করেছে।
আগৈলঝাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, আগৈলঝাড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে চলতি বোরো মৌসুমে ৯ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদ করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪৮ হাজার ১শ ৪৮ মেট্রিক টন চাল। খেতে চলতি বছর ধানের ভালো ফলন হয়েছে। ভালো ফলন হলেও তীব্র তাপদাহের কারণে এখন পর্যন্ত গোপলগঞ্জ, ফরিদপুর, খুলনা, বাগেরহাট, শরনখোলা, মোড়লগঞ্জ জেলা-উপজেলার ধান কাটা শ্রমিকরা আসেনি। এবার যে পরিমাণ তাপদাহ শুরু হয়েছে তাতে বেশির ভাগ শ্রমিকরা আসবে না বলে জানিয়ে দেয় কৃষকদের। ফলে আগৈলঝাড়ার ধান চাষ করা কৃষকরা পড়েছে মহাবিপদে। শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান বেশ ভালো হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা মনে করছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ বালাই না থাকায় ধানের অনেক ভালো ফলন হবে। তবে কিছু কিছু জমিতে ব্লাষ্ট রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, ইতোমধ্যে আগাম জাতের ধান পাক ধরেছে। হয়তো আগামী সপ্তাহের শেষের দিকে এসব ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু বর্তমানে এত পরিমাণ তাপদাহের কারণে কোনো কৃষকরাই জমিতে যেতে পাড়ছে না। তারপরে আবার যদি বন্যা শুরু হয়ে যায় তাহলে তো ধান ঘরে তোলাই কষ্টকর হয়ে যাবে।
কৃষক রহিম সরদার বলেন, উপজেলাজুড়ে ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলাথেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দেন। কিন্তু এবার কি হবে! সময় মতো শ্রমিকরা না এলে কিভাবে ধান ঘরে উঠবে এমন দুশ্চিন্তাই কৃষকদের ঘুম নেই। এমন ভাবনা যেন দুর্বল করে ফেলছে কৃষকদেরকে।
উপজেলার গৈলা গ্রামের মিনাল রায়, কালুপাড়া গ্রামের জহিরুল হাওলাদার, মধ্য শিহিপাশা গ্রামের হেলাল সরদার, কোদালধোয়া গ্রামের নবীন হালদারসহ একাধিক কৃষকরা বলেন, আমন আবাদে ধান পাকার পরেও ধান কাটতে হাতে কিছু সময় পাওয়া যায়। কিন্তু ইরি-বোরো মৌসুমে নানান রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই থাকে। ফলে ধান পাকার সঙ্গে সঙ্গেই কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। কয়েক বছর ধরে এমনিতে ধানের আবাদে নানা কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে। এই মৌসুমেও যদি শ্রমিক সংকটে সময় মতো ধান ঘরে তোলা না যায় তাহলে ব্যাপক লোকসানের কবলে পড়তে হবে। তাই ধান ঘরে তুলতে কৃষি শ্রমিকদের আসার ব্যাপারে অনুরোধ জানিয়েছেন কৃষকরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দোলন চন্দ্র রায় বলেন, শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধান বেশ ভালো হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রোগ বালাই না থাকায় ধানের অনেক ভালো ফলন হয়েছে। ধান কাটা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক এসে ধান কেটে ঘরে তুলে দিত। কিন্তু বর্তমানে দেশে প্রচণ্ড তাপদাহ চলছে। এর কারণে এখন পর্যন্ত ধান কাটা শ্রমিক আসেনি। এবার ধান কাটা শ্রমিকরা যাতে এসে কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলে দিতে পারে সে ব্যাপারে বিভিন্ন এলাকার শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।
এছাড়াও তিনি বোরো ধান সাধারণত ৮০ শতাংশ পাকলেই কেটে ফেলার জন্যও কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। অন্যথায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ইরি-বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি বয়ে আনতে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০২৩
এমএস/এএটি