ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কৃষি

ইউটিউব দেখে সাম্মাম চাষে চমক দেখালেন মুন্নাফ

শরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৮ ঘণ্টা, মে ৪, ২০২৩
ইউটিউব দেখে সাম্মাম চাষে চমক দেখালেন মুন্নাফ

ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে কৃষক মুন্নাফ আলী মন্ডল ১৫ বছর ধরে কৃষি পেশার সঙ্গে জড়িত। প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের ফল চাষ করে থাকেন তিনি।

এবারে ইউটিউব দেখে সাম্মাম ফল চাষ করে সফল হয়েছেন এই কৃষক।  

তার এই সফলতা ইতোমধ্যে  সাড়া ফেলেছে  ঠাকুরগাঁও জেলা জুড়ে।

মধ্যপ্রাচ্যে বেশ জনপ্রিয় ফল ‘সাম্মাম’ যা বাংলাদেশে ‘রকমেলন’ নামেও পরিচিত।  

মরুভূমির ফল হলেও এখন এ দেশের মাটিতেও এ চাষ হচ্ছে। মালচিং পদ্ধতিতে শাম্মাম চাষ করা হয়। চারা রোপণের ৬০-৭০ দিনে এ ফল সংগ্রহ করা যায়।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মুন্নাফ আলী মন্ডল। উপজেলার তেঁতুলতলা এলাকায় ভাতারমারি ফার্মের পশ্চিম পাশে ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সাম্মাম ফলটির চাষ শুরু করেছেন তিনি।  

ফলটি চাষে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ করে ইতিমধ্যে আয় করেছেন দুই লাখের বেশি টাকা। ফলন শেষ হওয়ার আগেই আরও দুই লাখ টাকা আয়ের আশা করছেন মুন্নাফ।

কৃষক মুন্নাফ আলী বলেন, ইউটিউবে ভিডিও দেখে সাম্মাম চাষ শুরু করি। এর চাহিদা ও বাজারমূল্য ভালো। তাই লাভ বেশি হবে ভেবে ফলটির চাষ শুরু করি। তিন বিঘা জমিতে চাষ করতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। প্রথম দিকে ঢাকার কারওয়ান বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছি। এখন ক্ষেত থেকেই পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়ভাবে এ ফলের বাজার তৈরি হয়নি। তবে ঢাকার বাজারে ব্যাপক চাহিদা আছে। সাম্মাম বা রক মেলন ফলটি সর্বনিম্ন ৫০০ গ্রাম থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। প্রতি কেজি ১২০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয় বাজারে। আমি ৮০-১০০ টাকা কেজিতে ক্ষেত থেকে ফল বিক্রয় করেছি।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, এবার দ্বিতীয় বারের মতো সাম্মাম চাষ করা হচ্ছে। এর আগে গতবার সদর উপজেলার রাহুল রায় নামে এক কৃষক সর্ব প্রথম চাষ শুরু করেন। এবার জেলায় মোট ২ একর জমিতে শাম্মাম চাষ করা হচ্ছে।

সাম্মাম ক্ষেত পরিদর্শন করা মাঠ পরিদর্শক বলেন, এটি একটি বিদেশী ফল। এই ফলের চাহিদা ঢাকায় খুব বেশি। আমাদের কৃষক এই ফল চাষ করে ফলন যেমন ভালো পেয়েছেন তেমনি ফল বেচে লাভবান হয়েছেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের কৃষকেরা এখন বিভিন্ন রকম ফলের আবাদ করছে। এই সাম্মাম ফল আবাদের মাধ্যমে আমাদের কৃষিতে একটি নতুন মাত্রা সংযোজন করেছে। কৃষকরা এ ফলের চাষ বাড়ালে তারা যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবেন। তেমনি পুষ্টির চাহিদাও পূরণ হবে।

তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন দেশে সাম্মাম একটি জনপ্রিয় ফল। আমাদের দেশে এটি নতুন এলেও সুপার শপগুলোতে এর ব্যাপক চাহিদা আছে। সদর উপজেলার এক কৃষক এর আগেও সাম্মাম চাষ করে ভালো মূল্য ও সাড়া পেয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ের আবহাওয়া সাম্মাম চাষে উপযোগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের এ বিষয়ে যথাযথ সহায়তা দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০২৩
এসএএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।