ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

জয়পুরহাটে অনাবৃষ্টিতে দুশ্চিন্তায় পান চাষিরা

শাহিদুল ইসলাম সবুজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৮ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
জয়পুরহাটে অনাবৃষ্টিতে দুশ্চিন্তায় পান চাষিরা ছবি: পান চাষে ব্যস্ত চাষি

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ভারত সীমান্ত ঘেঁষা ধরঞ্জী ইউনিয়নের শালুয়া গ্রামের বাসিন্দা ভগিরত চন্দ্র বর্মণ দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে পান চাষ করে আসছেন। কিন্তু এ বছর তীব্র তাপদাহ এবং পোকার আক্রমণে ৪০ শতাংশ পানের বরজে দেখা দিয়েছে নানা ধরনের সংক্রমণ।

ফলে পুঁজি উঠানো নিয়ে চিন্তায় দিন পার করছেন তিনি।

পান চাষি ভগিরত চন্দ্র বর্মণ বলেন, গত ২/৩ বছর থেকে আমার পানের বরজে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে কাণ্ড পচে যাওয়ায় আশানুরুপ ফল পাচ্ছি না।

শুধু ভগিরত চন্দ্র বর্মণই নয়, এমন সমস্যায় দিন পার করছেন ধরঞ্জী ইউনিয়নের শালুয়া, উচনা, হাটখোলা, শ্রীমন্তপুর ও বাগজানা ইউনিয়নের রাম ভদ্রপুর, চেচড়া, আটাপাড়া, রাম চন্দ্রপুর ও ত্রিপুরা গ্রামের অন্তত তিন শতাধিক পান চাষি।  

তারা বলেন- অনাবৃষ্টির কারণে পান শুকিয়ে যাওয়া এবং গোড়া ও কাণ্ড পচে যাওয়ার পাশাপাশি নাভি ধস ও শিকড় পচার কারণে আশানুরুপ ফল পাচ্ছেন না তারা। এক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের পরামর্শও কাজে লাগছে না বলে অভিযোগ পান চাষিদের।

পান চাষি অনিল চন্দ্র বর্মণ বলেন, এসব রোগের কারণে পানের কাণ্ডে পচন ধরছে এবং পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিলেও কোনো কাজে দিচ্ছে না।

জানা গেছে, প্রতি বিঘা জমিতে পান চাষ করতে বাঁশ, মাটি, পাটকাঠি, সরঞ্জাম, সার, কীটনাশক ও মজুরিসহ খরচ পড়ে ৩ লাখ টাকার মতো। আর বছর শেষে পান বিক্রি করতে পারেন ৫-৬ লাখ টাকা। কিন্তু পাঁচবিবি উপজেলার পান চাষিদের জন্য জয়পুরহাট জেলায় এখনো কোনো বাজার গড়ে ওঠেনি।

এ বিষয়ে শালুয়া গ্রামের পান চাষি ও ব্যবসায়ী চঞ্চল জানায়, বাপ- দাদার পেশা আকড়ে ধরে এই পান চাষ ও পান বিক্রির ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু অদ্যবধি জয়পুরহাট জেলায় পানের একটি পাইকারি বাজার গড়ে ওঠেনি। যে কারণে পার্শ্ববতী হাকিমপুর উপজেলা কিংবা বিরামপুর উপজেলায় পান বিক্রি করতে গিয়ে আমাদের লাভের ভাগ টিয়াই খায়।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (পিপি)  মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, পান উৎপাদনের ক্ষেত্রে কাণ্ড বা গোড়া পচা একটি প্রধান রোগ। তবে এক্ষেত্রে পান চাষিদের প্রতি কপার জাতীয় ছত্রাক নাশক স্পে করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জয়পুরহাট জেলায় এবার ৩৪ হেক্টর জমিতে মিঠা পান, ছাচি পান, গেছো পান, মশা পান, সাদা পান ও টিকন পান চাষ হয়েছে। যার মধ্যে পাঁচবিবি উপজেলাতেই সবচেয়ে বেশি ২৪ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২৩
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।