মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিষমুক্ত সবজি চাষে খ্যাতি অর্জন করেছে ইতোমধ্যে। আসন্ন রমজানের বাজার ধরতে উপজেলার ধানকোড়া ইউনিয়নের কামতা এলাকায় এক জমিতে করলা,শসা ও চাল কুমড়ার আবাদ করেছেন রাহেদুল ইসলাম নামের এক চাষি।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আশানুরূপ ফলনও ভালো হয়েছে। সেই সঙ্গে আর্থিক লাভবান হওয়ারও স্বপ্ন দেখছেন তিনি । তার এই সাফল্য দেখে অনেকেই এখন একইভাবে একসঙ্গে তিন সবজির আবাদে ঝুঁকছেন।
কামতা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, চলতি সবজির মৌসুমে ২৮৮ শতাংশ জমিতে করলা, শসা ও চাল কুমড়ার আবাদ করেছেন রাহেদুল ইসলাম। সবজির বাগানে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পাড় করছেন ওই চাষির কলেজপড়ুয়া ছেলে রবিউল ইসলাম। যাতে কোনো পোকামাকড় সবজির বাগান নষ্ট না করতে পারে। সেজন্য সবজি বাগানের শ্রমিকেরা স্প্রে করছেন।
চাষি রাহেদুল ইসলাম জানান, জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে সবজি বাজারে নেওয়ার পর্যন্ত প্রতি শতাংশের হিসাব অনুসারে ৯ বিঘা জমিতে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হবে। রমজান মাসে যদি বাজার ভালো থাকে তবে আনুমানিক ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারবেন এমনটাই আশাবাদী তিনি ।
এক জমিতে তিনটি সবজি আবাদের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বেশ কয়েক বছর যাবৎ এই পদ্ধতি অবলম্বন করে সবজির আবাদ করে আসছি। এতে করে আমি তিনটি সবজি একসঙ্গে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে পারি এবং লাভও অনেকাংশেই ভালো হয়। যা কিনা একটি সবজি আবাদ করে লাভ করা সম্ভব না , সেজন্য একসঙ্গে তিনটি সবজির আবাদ এ বছরও করেছি আশা করছি যে টাকা খরচ হবে তার দ্বিগুণেরও বেশি লাভ হবে, যদি রমজানের বাজার ধরতে পারি।
তিনি আরও বলেন , আমি আমাদের এই অঞ্চলের পাইকারি বাজারে কোনো সবজি বিক্রি করি না। সবজি পরিবহনের জন্য নিজস্ব গাড়ি আছে আমার। সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বড় বড় চারটি পাইকারি আড়তে সবজি সরবরাহ করে থাকি। নিজে থেকে সবজি বিক্রি করার কারণে অন্য চাষিদের চেয়ে আমার লাভ অনেকাংশেই বেশি হয় ।
ওই চাষির একমাত্র ছেলে রবিউল ইসলাম বলেন , আমি মুন্নু ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। আমরা পুরো পরিবার কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি যেটুকু সময় পাই বাবার কাজে সহায়তা করি। এখন যাতে কোনোভাবেই সবজির বাগানে পোকামাকড় আক্রমণ করতে না পারে সেজন্য শ্রমিকদের নিয়ে স্প্রে দিচ্ছি।
কামতা এলাকার মোশারফ,আওয়াল ও রহিম নামের আরো অনেক চাষি বলেন , রাহেদুল ভাইয়ের এই মিশ্র পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেকেই এখন সবজির আবাদ করছেন। এই পদ্ধতি অবলম্বন করলে চাষাবাদে খরচ অনেকাংশেই কম হয়। কীটনাশক,সার বা অন্য যে কোন কিছু একবার প্রয়োগ করতে হয়, এই পদ্ধতিতে আবার ফলনও আশানুরূপ হচ্ছে।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন , বিষমুক্ত সবজি আবাদে খ্যাতি অর্জন করেছে এই অঞ্চল। এ অঞ্চলের সবজির চাহিদা রয়েছে দেশজুড়ে। যার কারণে এখানকার চাষিরা সবজি চাষে ঝুঁকছেন। এক জমিতে তিনটি সবজির আবাদ অনেক আগে থেকেই চাষ হয়ে আসছে।
আমাদের কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের সব সময় পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে আসছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা ।
বাংলাদেশ সময়: ২২৫১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৪
এসএএইচ