ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ আমনে খাদ্য নিরাপত্তা দেবে

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ আমনে খাদ্য নিরাপত্তা দেবে

গোপালগঞ্জ: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ আমন ধানে খাদ্য উৎপাদন বাড়বে। স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন এ ধান বিঘায় (৩৩ শতাংশ) ২১ মণ ফলন দিয়েছে।

এ ধানে রোগ বালাই ও পোকা-মাকড়ের আক্রমণ কম। তাই অল্প খরচে অধিক ধান পাচ্ছেন কৃষক। আগামীতে লাভজনক এ ধানের আবাদে কৃষক ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।  আমন মৌসুমে দেশে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ জাতের ধান কৃষকের মাঝে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা মালোপাড়া গ্রামের কৃষক গৌরাঙ্গ ঠাকুর বলেন, গত বছর আমন মৌসুমে এ জমিতে ব্রি-৭৪ জাতের ধান চাষ করে বিঘায় ১৫ মণ ধান পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বছর ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ জাতের ধান চাষ করে বিঘায় ২১ মণ ধান পেয়েছি। ধান কেটে একই জমিতে রবি ফসল করার পর বোরো ধান করতে পারব। এতে ফসলের উৎপাদন বাড়বে।  

একই উপজেলার সুকতাইল গ্রামের কৃষক লিটু শেখ বলেন, ব্রি  গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় থেকে ৪ কেজি ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ ও প্রয়োজনীয় সার বিনামূল্যে পাই। তাদের পরামর্শে দুই বিঘা জমিতে এই জাতের ধান আবাদ করে ১১৫ দিনের মধ্যে ধান কেটেছি। ক্ষেতে পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হয়নি। তাই সার-কীটনাশক খরচ সাশ্রয় হয়েছে।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও সিনিয়র সাইস্টিফিক অফিসার ড. মো. রোমেল বিশ্বাস এ তথ্য জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ একটি আধুনিক, রোগ সহিষ্ণু, স্বল্প জীবনকাল সম্পন্ন, উচ্চ ফলনশীল ও চিকন ধানের জাত। এটি ভালো পরিচর্যা পেলে বিঘায় ২২ মণ বা হেক্টরে ৬ দশমিক ৫ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম। গোপালগঞ্জে এ ধান বিঘায় ২১ মণ ফলেছে। সে হিসাবে এ জেলায় হেক্টর প্রতি এ ধান ৬ দশমিক ৩ টন ফলেছে। এ ধানের চাষাবাদ সম্প্রসারণ করতে পারলে দেশে খাদ্যের উৎপাদন বাড়বে । তাই কৃষকের বীজ প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও বাগেরহাট জেলায় ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাত পরিচিতি, সম্প্রসারণ ও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে কাজ করছে ব্রি। আমন মৌসুমে ৩ জেলায় ১ হাজার ৪শ কেজি ধানের বীজ বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছিলাম। তারা এ ধান দিয়ে ৭শ বিঘা জমি চাষাবাদ করেছেন। এ ধান চাষে বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বলেন, কৃষকের মাঠে এ ধান আমন মৌসুমের হাইব্রিড ধানের মধ্যে সর্বউৎকৃষ্ট ফলন দিয়েছে। ব্রি বীজ দিলে অমরা এ জাত ছড়িয়ে দিতে আন্তরিকভাবে কাজ করব। এতে দেশে খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা বাড়বে। এ ধান কাটার পর কৃষক রবি ফসল করতে পারবেন। কৃষিকে লাভজনক করতে ব্রি হাইব্রিড ধান-৬ ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।