ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সবজির হাট নেই সাটুরিয়ায়!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
সবজির হাট নেই সাটুরিয়ায়! কৃষকের কাছ থেকে কেনা মুলা রাজধানীতে আনতে ঝুড়ি বোঝাই করছেন এক ব্যবসায়ী। ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ:  সবজি চাষে খ্যাত মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো। যে কারণে এখানকার সবজির চাহিদাও বেশি। অল্প খরচে অধিক মুনাফার আশায় সবজি চাষ বাড়ছে সাটুরিয়ায়। তবে সবজি বিক্রির নির্দিষ্ট কোনো হাট না থাকায় বিপাকে রয়েছে সাটুরিয়ার সবজি চাষিরা।

সাটুরিয়া উপজেলার প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই সারাবছর আবাদ হয় নানা রকমের সবজি। তবে উপজেলার ধানকোড়া, তিল্লী, হরগজ, ফুকুরহাটি, দড়গ্রাম এবং বরাইদ ইউনিয়নে সবজির আবাদ বেশি হয়।

তবে সাটুরিয়া উপজেলায় সবজি বিক্রির পাইকারি কোন হাট না থাকার কারণে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই সবজি ক্রয় করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাজারজাত করেন। এতে করে পাইকাররা অধিক মুনাফা পেলেও ন্যায্য বাজারদর থেকে বঞ্চিত হয় চাষিরা। এমনটাই মন্তব্য করেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সবজি চাষিরা।

সাটুরিয়া উপজেলার কাজীপাড়া কৈট্টা এলাকার সবজি চাষি আব্দুল জলিল মিয়া জানান, প্রায় একযুগ ধরে নিয়মিতভাবে সবজির আবাদ করেন তিনি। অন্যান্য ফসলের চেয়ে সবজি চাষে মুনাফাও বেশি। তবে সবজি বিক্রির নির্দিষ্ট কোনো পাইকারি হাট না থাকার কারণে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয় তাকে। জমি থেকে সবজি সংগ্রহ করে স্থানীয় এক পাইকারের কাছে সবজি বিক্রি করেন তিনি। পাইকারের কাছে বিক্রির জন্য ঝুড়িতে উস্তা নিয়ে রাস্তার পাশে কৃষক-কৃষাণী।  ছবি: বাংলানিউজসবজি চাষি আনোয়ার হোসেন জানান, চার বিঘা জমিতে নিয়মিতভাবে সারাবছর সবজির আবাদ করেন তিনি। কিন্তু সাটুরিয়া উপজেলায় সবজির কোন স্থায়ী হাট না থাকার কারণে বাজারদর যাচাই করার কোনো সুযোগ নেই। কাজেই বাধ্য হয়ে জমি থেকে সবজি তুলে স্থানীয় পাইকারদের নিকট বিক্রি করতে হয়। স্থানীয়ভাবে সবজির হাট থাকলে বাজারদর যাচাই করে সবজি বিক্রি করতে পারতেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

উপজেলার রমজান আলী নামে এক সবজি ব্যবসায়ী জানান, রাজধানীর বাজারে মানিকগঞ্জের সবজির চাহিদা বেশি। যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় সতেজ সবজি বাজারজাত করা যায় অনায়াসে। সবজি ব্যবসায় তিনি বেশ লাভবান বলেও জানান তিনি।

সবজির পাইকারি হাটের বিষয়ে আরিফ হোসেন নামে এক সবজি ব্যবসায়ী বলেন, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া এলাকায় ছোট আকারে সবজির একটি হাট রয়েছে। তবে মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন চলাচল করতে না পারায় সেখানে আর আগের মতো সবজি আসে না। কাজেই বাধ্য হয়েই এখন ঘুরে ঘুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে সবজি ক্রয় করে ট্রাকে ঢাকায় এনে বিক্রি করেন তিনি। তবে সবজির স্থায়ী হাট থাকলে ব্যবসা আরও ভালো হতো বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

কৃষকের কাছ থেকে কেনা মুলা রাজধানীতে আনতে ঝুড়ি বোঝাই করছেন দুই ব্যবসায়ী।  ছবি: বাংলানিউজসাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এমদাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, সাটুরিয়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে এক হাজার ৫৭০ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। অনুকূল আবহওয়ায় সবজির বাম্পার ফলনে লাভবান চাষিরা। তবে উপজেলায় সবজির স্থায়ী কোনো হাট না থাকার কারণে সবজি চাষিরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত।  

বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে আলাপ-আলোচনা করে স্থায়ী একটি সবজি হাটের ব্যবস্থা করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন পারভিন জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বর্তমানে বেশি ব্যস্ত রয়েছেন তিনি।  

তারপরও সবজির একটি স্থায়ী হাটের বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান ইউএনও নাসরিন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৮
কেএসএইচ/আরআইএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।