ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

শীত-কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা

খোরশেদ আলম সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
শীত-কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা শীত-কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা। ছবি: বাংলনিউজ

লালমনিরহাট: টানা ছয় দিনের ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বোরো ধানের বীজতলা ফ্যাকাসে রঙ ধারণ করায় আসন্ন বোরো আবাদ নিয়ে শঙ্কিত লালমনিরহাটের কৃষকরা।

গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) টানা ছয়দিন পর সূর্যের দেখা মেলে সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাটের আকাশে। এ কয়েক দিনের কুয়াশায় প্রাণীকূলের মতোই বিপর্যস্ত উদ্ভিদ জগত।

 

জানা যায়, ভাল ফসল পেতে ভাল বীজ বা ভাল মানের চারা গাছের বিকল্প নেই। তাই বোরো চাষের জন্য বীজতলা তৈরি করে পরিচর্যা শুরু করেন কৃষকরা। চারা গাছ একটু বড় হতে না হতেই টানা ছয় দিন ঘনকুয়াশার কবলে পড়ে কৃষকদের বোরো বীজতলা। এতে করে বোরো বীজতলার গাছগুলো ফ্যাকাসে রঙ ধারণ করেছে। শীতের তীব্রতায় বীজতলার অনেক চারাগাছ মরে যেতে শুরু করে।

আদিতমারী উপজেলার কিসামত চন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক খোশ মামুদ বাংলানিউজকে বলেন, নিজের তিন দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিসহ বর্গা নেওয়া পাঁচ দোন জমিতে বোরো ধান রোপণ করতে উন্নত জাতের ১০ কেজি বীজের একটি বীজতলা তৈরি করি। চারা গাছগুলো বেশ পুষ্ট হলেও গত সপ্তাহ ধরে টানা শীতে বীজতলা ফ্যাকাসে রঙ ধারণ করেছে। অনেক চারাগাছ শীতের প্রকোপে মারা গেছে। ফলে আট দোন জমির জন্য চারা গাছ সংকট দেখা দিতে পারে। বীজতলার এ অবস্থায় করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নিতে কৃষি বিভাগের কোনো কর্মীর দেখা পাওয়া যায় না।
শীত-কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে বোরোর বীজতলা।  ছবি: বাংলনিউজএকই গ্রামের কৃষক ইয়াকুব আলী, নুরল হক ও আলম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, বোরো চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরি করেছি। কিন্তু প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সেই বীজতলা প্রায় নষ্ট হতে বসেছে। ছয়দিন পর গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সূর্যের দেখা মিলেছে। এতে যেটুকু রয়েছে সেটা রক্ষা করতে পারলে হয়তো পাতলা করে জমিতে চারা রোপণ করা যাবে। কিন্তু বাকিটুকু নষ্ট হলে চারাগাছের অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত হবে।

একই অবস্থা জেলার পাঁচটি উপজেলার সকল বোরো চাষিদের। এভাবে বীজতলা নষ্ট হলে বোরো ধানের চারার সংকট দেখা দিতে পারে। ফলে বোরো চাষে ক্ষতির মুখে পড়বে কৃষকরা।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আলী নুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে বীজতলা তৈরিতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। তবে ছয়দিন পরে হলেও সূর্যের দেখা মিলেছে। দুই চার রোদ পেলে বোরো বীজতলায় বড় ধরনের কোনো সমস্যা হবে না।  

লালমনিরহাট কৃষি অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিদু ভূষন রায় বাংলানিউজকে বলেন, জেলার পাঁচটি উপজেলায় বোরো চাষাবাদের জন্য দুই হাজার ৫০০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও বীজতলা তৈরি হয়েছে দুই হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। যা চলমান অবস্থায় রয়েছে। শীত বা কুয়াশা থেকে বোরো বীজতলা রক্ষার জন্য পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখা অথবা বীজতলায় সেচ দিয়ে চারাগাছের পাতা ও ডগা থেকে কুয়াশায় ঠাণ্ডা পানি ফেলে দিলে চারা গাছ বাঁচানো সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।