ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

কৃষি

প্রণোদনার আওতায় এনে কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দেওয়ার দাবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২০
প্রণোদনার আওতায় এনে কৃষকদের ক্ষতিপূরণের দেওয়ার দাবি

ঢাকা: করোনার প্রকোপের মধ্যে অন্যান্য খাতের মতো কৃষিখাতেও পর্যাপ্ত প্রণোদনা দিয়ে কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি।

সংগঠনটির সভাপতি হাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন- বাংলাদেশেও কভিড-১৯ বা করোনার সংক্রমণে এ পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ পর্যন্ত সরকারি তথ্যমতে আক্রান্ত হয়েছে ৮৮ জন।

দেশে এ পর্যায়ে ভাইরাসটি সামাজিকভাবে (কমিউনিটি ট্রান্সমিশন) সংক্রমিত করছে।

গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি সাধারণ ছুটিতে দেশ কার্যত ‘লকডাউন’ অবস্থায় চলছে যা আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতি দাঁড়িয়ে আছে মূলত কৃষি, তৈরি পোশাকশিল্প এবং প্রবাসী শ্রমিকদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্সের ওপর।

কৃষিকে নানা রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং আবহাওয়ার প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হয়। জাতিকে ক্ষুধামুক্ত রাখতে এবং অপুষ্টি থেকে বাঁচাতে কৃষক ও কৃষির অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বর্তমানে কৃষক তার পণ্য বিপণন করতে পারছে না। যার ছাপ পড়েছে কৃষক ও কৃষির ওপর। ফলে কৃষি উৎপাদিত ফসল (পেঁয়াজ, ভুট্টা, সকল প্রকার সবজি, ফল, দুধ, ডিম) এ সব পানির দামে বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষিভিত্তিক ফার্ম, শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্য।

সামনে বোরো মৌসুমে ধানসহ অন্য কৃষি পণ্যের দাম প্রাপ্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার বিকল্প নাই। এমতাবস্থায় সরকার ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে।

তিনটি ভাগে এই প্যাকেজ-এর টাকা স্বল্পসুদে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হবে বলে বলা হয়েছে। বিদ্যমান করোনা ভাইরাসজনিত পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য মন্দা মোকাবিলায় এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে শিল্প মালিক, ব্যবসায়ী (ক্ষুদ্র ও মাঝারী) সবাই এর আওতায় পড়বে। কিন্তু এর আওতায় নেই কৃষকরা।

কৃষি ক্ষেত্রে যেটুকু ঘোষণায় এসেছে তাও কৃষি ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ পাবেন। অর্থাৎ পোল্ট্রি, মৎস্য খামার, ডেয়রির ক্ষেত্রে। গ্রামাঞ্চলের কৃষক যারা সরাসরি উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কিত বা যারা কৃষির সাথে সম্পর্কযুক্ত ভূমিহীন-দরিদ্র কৃষক তাদের কোনোরকম প্রণোদনার আওতায় আনা হয়নি। অথচ বাংলাদেশের সবথেকে বড় ফসল তোলার মৌসুম শুরু হয়েছে।

কৃষক খুবই দুশ্চিন্তায় রয়েছে ফসল কেটে ঘরে উঠানো নিয়ে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যারা গ্রামে বসবাস করে তাদের প্রণোদনার আওতায় এনে ফসল ঘরে উঠানোর নিশ্চয়তা বিধান করা প্রয়োজন। পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠির জন্য করোনা ভাইরাসজনিত রোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরি প্রয়োজন। ধান কাটার মৌসুমের শুরু থেকে ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি পাঁচ দফা দাবি তুলেছে। এগুলো হলো- কৃষকদের সরাসরি প্রণোদনা প্রদান, গ্রামাঞ্চলে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুবিধার ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমিহীন-দরিদ্র কৃষকদের পর্যাপ্ত খাদ্য প্রদান, ইরি-বোরো ফসল কাটার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পেঁয়াজ, ভুট্টা, সকল প্রকার সবজি, ফল ও ধানসহ অন্য ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২০
ইইউডি/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।