বৃহস্পতিবার (২১ মে) ভোর রাত পর্যন্ত টানা ঝড়ের সঙ্গে ভারী বর্ষণে অধিকাংশ ফসল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম ও মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলুর দাবি, স্মরণকালের দীর্ঘস্থায়ী এ ঝড়ে সব মিলিয়ে জেলায় ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে শত কোটি টাকা।
মাগুরা সদর উপজেলার হাজরাপুর কৃষক উন্নয়ন সমিতির সদস্য কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, উপজেলার হাজীপুর, হাজরাপুর, রাঘবদাইড় ইউনিয়ন, আঠারখাদা, মঘি ও পৌরসভার কিছু এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০ হাজারের ওপরে লিচু, আম, কাঁঠাল, কলা ও পেঁপে বাগান রয়েছে। যার মধ্যে জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল লিচুর বাগান রয়েছে প্রায় ৭ হাজার। কিন্তু বুধবার সারা রাতের ঝড়ের তাণ্ডবে গোটা এলাকার সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতি বছর এ এলাকা থেকে ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার আম ও লিচু বিক্রি হয়ে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা তাদের ফসলহানিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কারণ, এসব ফসল বিক্রির টাকায় সারা বছর পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জাহিদুল আমিন জানান, জেলায় এবার ৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু, ১ হাজার ৩০০ হেক্টরে আম, ৭০০ হেক্টরে কলা, ৬০০ হেক্টরে পেঁপে, ৬২০ হেক্টরে কাঁঠাল, ২০০ হেক্টরে নালিম, ৭২০ হেক্টরে মুগডাল, ২ হাজার ৭২০ হেক্টরে বিভিন্ন সবজি, ২ হাজার ৮২০ হেক্টরে তিল এবং ৩৫ হাজার ৪০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় শতভাগ পেঁপে এবং কলা ও অন্যান্য ফসলের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। আর্থিক ক্ষতি নিরুপণে তারা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন।
জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পংকজ কুণ্ডু ও মাগুরা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু নাসির বাবলু জানান, স্মরণকালে দীর্ঘস্থায়ী এ ঝড়ে শত শত কাঁচা ও আধাপাকা বাড়িঘর, গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বিশেষ করে জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল হাজারপুরী লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পেঁপে কলা, আম, সবজিসহ মাঠে থাকা ফসলের অধিকাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণের কাজ চলছে। তবে তারা জানান, জেলায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে শত কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩৫ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২০
এনটি