মানিকগঞ্জ: দীর্ঘ ৪ বছর পর মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক এলাকায় পদ্মার তীরে জেগে উঠেছে চর। চর জেগে ওঠায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া জমির মালিকরা এসে নিজেদের জমি পরিমাপ করে বোর ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পানি একদিকে নামছে, অন্যদিকে উত্তাল পদ্মার তীরে জেগে ওঠা চরে বালু আর কাদা মাটিতে বোর ধান আবাদ করতে ঝুঁকছে স্থানীয় চাষিরা।
ভাউরডাঙ্গী এলাকার লোকমান হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, দীর্ঘ ৪ বছর পর এবার আমাদের ভাউরডাঙ্গী অংশে চর জেগেছে। তাই চরের মধ্যে বোর ধানের চারা রোপণ করছি। এ জমি আমার না তবে জমির মালিক কে তাও জানি না। ধান রোপণ করছি এক সময় না এক সময় জমির মালিক চলে এলে তাকে ফসলের অর্ধেক অংশ দিয়ে দিতে হবে।
আব্দুল মতিন নামে আরও এক চাষি বলেন, আমি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে বোর ধানের আবাদ করছি এই পদ্মা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে। এই জমির মালিকানা হিসেবে কয়েকজন আছে তবে আমি তাদের সঙ্গে কথা বলে আবাদ শুরু করেছি। আমাদের এ বোর ধান আবাদের জন্য কৃষি অফিস থেকে নানা ধরনের পরামর্শও দিচ্ছেন। ফলন ভালো হলে মালিককে ফসলের অর্ধেক দেওয়ার পরও আমাদের যা থাকবে তাতে খরচ উঠে যাবে।
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া জমির মালিক সালাম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ভাঙা-গড়া নিয়ে আমাদের জীবন। অনেক বছর আগে উত্তাল পদ্মার নদীগর্ভে আমাদের বসতবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। তারপর থেকে এভাবেই চলে বহুদিন। গত ৪ বছর ভাউরডাঙ্গীতে কোনো চর পড়েনি। তবে এ বছর আবার চর জেগেছে এই অংশে। হঠাৎ করে মতিন নামে একজন এসে বলছে আমাদের জমি নাকি জেগে উঠেছে সে ওই খানে ধান রোপণ করবে এবং আমাকে কিছু দিবে পরে আমি তাকে ধান চাষের অনুমতি দেই। কতো মানুষের জমিজমা পড়ে আছে কেউ খবরও রাখে না। অনেকে আবার এমনিতেই চাষ করে ফলনের একটা অংশ জমির মালিককে পৌঁছে দেয়।
হরিরামপুর উপজেলার কৃষি অফিসার আব্দুল গাফফার বাংলানিউজকে বলেন, উপজেলার আন্ধারমানিক ভাউরডাঙ্গী এলাকায় প্রায় ৪ বছর পর এবার চর জেগেছে। পদ্মা নদীর তীরে জেগে ওঠা চরে স্থানীয় চাষিরা বোর ধানের আবাদ শুরু করেছে। আমাদের কৃষি অফিস থেকে তাদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১, ২০২০
এনটি