…লাতিন মেয়েরা চোখের জলে চুল ভিজিয়ে
মুছে দেয় খদ্দরের পা;
সেই উৎসব, জমকালো নাচ, ধাঁধার আড়ালে থাকা
তোমাকে দেখব বলে বহুবছর
শুকপাখি হয়ে বন্দি থেকেছি খাঁচায়।
খুঁজেছি নিভে যাওয়া আলাদীনের প্রদীপ
তোমার কালাপানি হল যেদিন, সেদিনও মেনেছ সালিসের রায়।
চিলের কাছ থেকে ফিরিয়ে আনা হোক আহত কান। জানি এমন দিনে উড়িয়ে দিতে নেই ক্ষোভের পায়রা,
শুকনো শামুকের খোলে রাখতে নেই নতুন চিড়ে,
বাসী চুলা থেকে আনতে নেই পোড়া আলু
পুকুর থেকে তুলে আনতে নেই
মা টাকির পেছনে থাকা লাল পোনার ঝাক…
সহ্য না করার মতো দিনে কিছু বলার
অনুমতি থাকে যদি বলি—
দ্বিতীয় মৃত্যুর কথা।
ছুড়ে ফেলা পানের পিক থেকে
কুড়িয়ে নেয়া সুপাড়ির কথা,
গিলে ফেলা থুতুর কথা।
খুব কি বেশি ছিল চাওয়া? জলপাই পাতার সমান ঘুম। খইয়ের মত হালকা কিছু মুহূর্ত। তবু চিটেধানের ভেতর হারিয়ে গেল ফসলের জেদ। আমি পালিয়ে গেলাম পেছনে ফেলে বিধবাদের গ্রাম। না হয় জেদ নিয়েই ফিরে গেলাম, তুমি সিন্দুকে রেখে দিলে জাল করা সইয়ের দলিল। তুমি ঐ শিকারি বাজকেও কথা দিয়েছ তার হাতে তুলে দেবে চোখ, খসে পড়া শিশ্ন। তবে ঐ ওয়াদাই সত্য হোক।
অভিযোগে বন্ধ করে দাও জানালা
দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে বলতে চাই
পৃথিবীর সব আদালতেই হয় বিবাদের শুনানি
এসবের ধারে কাছে নেই বলে
তুমি শুনলে না
ঘরের বাইরে পড়ে থাকা
তোতা পাখির বয়ান!
এই আক্ষেপ বেজে যায় শূন্য কলসে। গণিকাদের হাতে ভাত খেয়ে আসা তোমাকেই বলতে চেয়েছি বোঁটা থেকে অকালে ঝরা ফলের গল্প। ভিটের জন্য কেন কাঁদে তীর্থযাত্রীর মন। ভুল বাকল খুলে দেখাতে চেয়েছি কাঠের নগ্নতা। ঝরা আপেলে খোদাই করা নিউটনের মুখ। বলতে চেয়েছি, প্রতিটি পতনের পর কেমন মৌলিক হয়ে ওঠে মানুষ। যেমন মৌলিক হয়ে ওঠেন পদ্মাবতী, আলাওলের হাতে। তোমার স্বভাব থেকে শেখা মুদ্রাদোষও রেখেছি তুলে।
এই তবে তুমি?
সামান্য দেখায়, অদেখার সংকোচ!
ঠাণ্ডা ভাত তোলে কাচা মরিচের দাবি
আরো চাই এক চিমটি নুন
অসামান্য অসুখের মা সামান্য মন
আমি, চন্দ্রাবতীর বোন!
এসব আয়োজনে মাটি হয় উর্বর রাত
হাত থেকে খসে যায় রক্তমাখা হাত
এই তবে ধর্ম কৃষকের?
শষ্যের চারা তুলে আগাছার পরিচর্যা!
তোমার পায়ের পাতার রেখা পড়তে গিয়েই জেনেছি পৃথিবীর সব পাখির ফেরা হয় না ঘরে। তুমিও কি জেনেছ দুটো সম্পর্কের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা যতিচিহ্নের মানে? কোথায় গেল ঝরে দেহের সবকটি তিল? বীজতলায় এসব প্রশ্ন পুঁতে ফিরে যাচ্ছি। যেতে যেতে বিরল বীজধানের মর্যাদায় তোমাকে রেখেছি মেপে সময়ের গোলাঘরে। অবারিত ফসলের সম্ভাবনায়। খালপাড়ের বীজতলায় একদিন কৃষাণীরা ছড়িয়ে দেবে এই বিরল বীজধান।
কথার পলিতে গুঁজে দিয়েছ বীজধান
আমি সেই ধান থেকে জন্ম নেয়া প্রথম চারা
চোখ খুলে দেখি বিরাণ কাৎলাহার বিল
পুর্বপুরুষের মুখ পড়ে মনে। …
বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৫