ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

ফসিল | তুষার আবদুল্লাহ

গল্প / শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৫
ফসিল | তুষার আবদুল্লাহ

বেশ লাগছে আজ বিল্ডিংটা। সব আলো জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে।

একদম বেইসমেন্ট থেকে শুরু করে বাইশতলার ছাদ, ভাসছে আলোর বন্যায়। আলোর নানা রঙ। বাইরের দেয়ালে আলোর রঙধনু ভেসে উঠেছ। রুফটপে বেগুনি রঙ, সেখানে একটা কফিশপ হবে। তিনতলাতেও সোনালি রঙের আলোতে নাকি জমে উঠবে কফির আড্ডা। ভবনটার উল্টো দিকের ফুটপাতে দাঁড়িয়ে শীতল আলোর রঙধনু উপভোগ করছিল। যেখানে বিপনী বিতানের বিল্ডিংটা মাটি ফুঁড়ে দাঁড়ালো সেখানটায় ছিল একটা ছাতিম গাছ। তিনদিকে জল। আষাঢ় থেকে ভাদ্র উথাল-পাথাল ঢেউ এসে আছড়ে পড়তো গাছের তলায়। আর এসে থামতো নৌকা। গুলশানের পূর্বদিকের বাড্ডা, দক্ষিন দিকের উলনের নৌকা পারাপারের দেখভাল যেনো করতো ছাতিম গাছটি। হেমন্তে সকাল-বিকাল ছাতিমের মাদকতায় মাতাল হতো পারাপারের যাত্রীরা। কেউ কেউ ছাতিম তলায় অনেক রাত অবধি আড্ডা জমিয়ে তুলতো ছাতিমের নেশায় বুঁদ হয়ে। ছাতিমের নেশা শীতলকেও পেয়ে বসেছিল। সকালে, রাতে নৌকায় পার হয়ে এসে ছাতিমের গোঁড়ায় বসে থাকতো ও।

তথনও চা খেতে শেখেনি শীতল, শুধু ছাতিমের ঘ্রাণ পান করতেই এখানে এসে বসতো। কখনো সঙ্গী জুটতো, কখনো জুটতো না। শীতল আষাঢ়ের অপেক্ষায় খাকতো বাকি এগারটি মাস। কারণ এই মাসে দুর-দূরান্ত থেকে বড় বড় বজরা, নৌকা এসে নোঙর করতো এখানটায়। কোন নৌকায় মাটির তৈজসপত্র-পুতুল, কোনটিতে কাঠাল-তাল-আম। সারি বেঁধে থাকতো নৌকাগুলো। নৌকার মাঝিরা আসতো নানা অঞ্চল থেকে। শীতল তাদের সঙ্গে আলাপ জমাতো। ফল বা মাটির পুতুলের লোভে নয়, মাঝিদের অভিজ্ঞতা, তাদের বিচিত্র জীবনের দিকেই শীতলের আগ্রহ ছিল। কোন কোন মাঝি প্রতি বছরই আসতো। তাদের জন্যও অপেক্ষায় থাকতো শীতল। ওদের কেউ হয়তো শীতলের জন্য গামছা, লুঙ্গি বা হুঁকো নিয়ে আসতো উপহার হিসেবে। ওদেরকে পাল্টা উপহার দেয়া হয়নি কখনো। মাঝিরা শুধু চাইতো পারাপারের কোন মেয়ের সঙ্গে একটু আলাপ জমাতে। এই মেয়েরা কেউ সাইকেল ফেক্টরিতে, কেউ সবে চালু হওয়া গার্মেন্টস শ্রমিক। মাঝিরা তাদের সঙ্গে রেশমী চুরি, মাটির মালসা দিয়ে সখ্যতা গড়তো। শীতল পেতো চিনা বাদামের ভাগ। বাদামের কমিশনটা হালাল ছিল কারণ আলাপ জমাতে ঘটকালীর কাজটি সেই করতো। রমজানের মেয়ে আমিনা যে এক মাঝির সঙ্গে নৌকায় ভেসে গেলো দূর দেশে, তার স্বাক্ষীতো শীতল। আমিনা মাদানী বিল পেরিয়ে হয়তো মেঘনায় ওঠার পর শীতল খবরটা রমজানের কানে দেয়। আমিনা কখনো আর ফিরে আসেনি। কোথায় কেমন ছিল বা আছে সেই খবরটিও অজানা। শীতলের মনে এখনো অপরাধবোধ এসে ছায়া ফেলে, মেয়েটা যে আশরাফ মাঝির নৌকায় উঠলো, তারপর সে সুখে আছে নাকি দু:খে! আমিনা যদি ভাল না থাকে তার পুরো দায় যে তার। এরপরের কোন আষাঢ়ে আশফাক মাঝির নৌকা মাদানী বিলে পড়েনি। আশফাক মাঝির খোঁজ পাওয়া যায়নি অন্য মাঝিদের কাছ থেকেও।

শীতল উত্তরদিকে সরে এসে দশটাকার বুট কিনে নিলো। হকারকে দশটাকা দিতে গিয়ে ওর ভাবনায় এলো, যখন এখানে এসে নৌকা থামতো, তখন দুই টাকার বুট নিলে হেঁটে দক্ষিণ থেকে উত্তর বাড্ডার শেষ সীমানা পর্যন্ত যাওয়া যেতো। সরনীর সঙ্গে প্রথম কথাতো এই বুট কিনতে গিয়েই। সরনীরা চার-পাঁচজন বান্ধবী মিলে কলেজে যেতো। শীতলের সঙ্গে প্রায়ই ওদের দেখা হতো নৌকাতে। বান্ধবীরা আলাপে এমন করে মজে থাকতো যে, নৌকায় আর কেউ যে আছে সেদিকে বুঝি ওদের খেয়াল থাকতো না। শীতলই নিজে নিজে একেকদিন একেক বান্ধবীকে দেখে মুগ্ধ হতো। প্রেমেও পরতো নিজের মতো করে। ভাবতো কোনদিন যদি ওই বান্ধবী একা নৌকায় পাওয়া যেতো, তাহলে তাকে ভালবাসার কথাটা জানিয়ে দেবে। প্রতিদিনই প্রেমিকা বদল হতো ওই চার-পাচঁজনের মধ্য থেকে। ওরা একেকজন একেক রকম ছিল। কারো নাম ঠিক ওর জানাছিল না। একজনতো বাতাসের চেয়ে অধিক বেগে কথা বলতো। পরে জেনেছে ওর নাম ছিল কবিতা। হরবর করে যেনো কবিতাই বলে যেতে ও। যেমন, বুট চিবুতে চিবুতে বলতো-বুট তুমি গান করো কুটকুট। কারে যে খাওয়াই বাবুল বিস্কুট। সবাই কবিতার কাব্য শুনে হেসে গড়াগড়ি দিতো। শীতল তখন ভয়ে আতঁকে উঠতো। কারণ ওদের দুলোনিতে দুলে উঠতো নৌকাটাও। রেখা নামের মেয়েটি গাইতো গান-‘ও মাদানী বিলের পানি, তোর কথা আমি না জানি। ’ তারপর সবার গায়ে পানি ছিটিয়ে দিতো। পানির ছিঁটেফোঁটা কিছুটা শীতলের শরীরের এসেও পড়তো। সেই পানি যেন রোদ শুষে না নিতে পারে, সেই প্রার্থনা করতো শীতল। কিন্তু রোদ্দুরের তৃষ্ণা যে বেশি। তাই শীতলকে জলের দাগ কিছুক্ষণ বয়ে নিয়ে চলাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হতো। তৃপ্তি কিছুটা চুপচাপ থাকতো। শুধু আড়চোখে তাকিয়ে দেখতো চারপাশ। কখনো কখনো শীতলের চোখে চোখ রাখতো। শীতল তৃপ্তির চোখে চোখ রাখতে পারতো না। সরিয়ে নিতো। আজ এতোদিন পর মনে হয়, তৃপ্তির চোখটা কেমন যেনো শান্ত,গভীর এবং আগ্রাসী ছিল। সেখানে তলিয়ে যাবার ভয়ে ও তাকাতে পারতো না। সেদিক থেকে সরনী অনেক স্বচ্ছ ছিলো। ওকে বুঝতে পারতো উল্টো দিকে বসে সহজেই। সরনীও কথা বলতো কলকল করে। যতোটা না বলতো তারচেয়ে বেশি বুঝি হাসতোই। আজ যেমন সামনের বিল্ডিংটা হাসছে আলোতে। সরনীর হাসিটাকে ঠিক তেমনই মনে হতো শীতলের কাছে। যদিও ওই সময় এই পথে রাতে আলোও জ্বলতো না। রিকশা চলতো হারিকেন সঙ্গে নিয়ে। নৌকাতেও হারিকেন থাকতো। ঘোর বরষায়, অমবশ্যার রাতে বিল পাড়ি দিতো শীতল ভয়ে চোখ বুঁজে। সরনীর সঙ্গে কথা বলার ইচ্ছেটা নিয়ে প্রতিদিনই শীতল এসে অপেক্ষা করতো ছাতিম তলায়। কোন কোন দিন কলেজের এক-দুই ক্লাস ফাঁকি দিয়েই।

কীভাবে শুরু করা যায়। প্রথম কি কথা বলবে, যা শুনে তুষ্ট হবে সরনী। এমন অনেক কথা তৈরি করতো নিজে নিজে। কথা বানানোর পাশাপাশি পোশাকটাও গুছিয়ে নিতে চাইতো। আজ ভেবে নিজেই শীতল লজ্জায় মরে যায়। এক সময় যে পোশাককে ওর মনে হয়েছে ধোপদুরস্ত, সেই পোশাকেই এখন কতো মলিন মনে হয়। সরনীদের দলটাকে আসতে দেখেই বুঁক কেঁপে উঠতো শীতলের। ছয় নম্বর বাস থেকে নেমে গল্প করতে করতে আসতো ছাতিম তলায়।   ইচ্ছে করলেই ঘাটে থাকা নৌকাতে উঠে পড়া যেতো। কিন্তু ওরা উঠতো না। ঘাটে সময় কাটাতো কিছুক্ষণ; ঘাটে বসা হকারদের কাছ থেকে, আচার-বুট-বাদাম খেতো। বজরা থাকলে সেখানে গিয়ে কেনাকাটা করতো কিংবা শুধুই দেখাদেখি।

বিল্ডিংটার সামনে গাড়ির বড় জটলা লেগেছে। কেউ তেজগাঁও শিল্পএলাকার দিকে, কেউ উঠতে চাচ্ছে হাতিরঝিলে। সবার তাড়া। কেউ কাউকে ছাড় দিতে চাচ্ছে না। ওই সময়টায় শীতলরা সড়কদ্বীপে বসে থাকতো গাড়ি দেখার অপেক্ষায়। ঘণ্টায় বড় জোর ২/৩টা  পাবলিকা, ভক্সওয়াগনের দেখা মিলতো। স্কুটারও আসা-যাওয়া করতো বিরতি দিয়ে দিয়ে। সরনীরা সেদিন সৈনিকক্লাবে সিনেমা দেখে স্কুটারে করেই ফিরেছিল। নেমে বাদাম-বুটের ভ্যানগাড়িটার সামনে এসে দাঁড়ায়। শীতল শিমের বিচি কিনছিল। তা দেখে সরনীই কথা বলে প্রথম, তোমার দেখি দাঁতের জোর ভালই আছে। চাপার জোরটা মনে হয় কম।

শীতল কতোটা শুনতে পেল, কতোটা পেল না। সে কেঁপে উঠেছিল। কথা বলতে পারেনি। সরনীই আবার বলে-এতোদিন দেখছি তোমাকে। কোন কথাতো বলতে দেখলাম না কারো সঙ্গে। ভাল, শীমের বিচি খাও। চাপার জোর বাড়াও। সরনী সেদিন চলে গিয়েছিল। আর শীতল ওকে প্রথমেই তুমি বলে সম্বোধনটা নিয়ে বাড়ি ফিরে যায়।

উদ্বোধনকে সামনে রেখে মনে হয় বিপনী বিতান বিল্ডিংটার আলো পরীক্ষা চলছে। বাতি নিভছে-জ্বলছে। এই জ্বলে ওঠা ও নিভে যাওয়াটাও উপভোগ করছে মানুষ ভিড় করে। শীতলের মতোই অনেকের বুঝি কোথাও যাবার তাড়া নেই। এক সময় ফিরলেই হয়। আবার না ফিরলেই কী? নিজের সময়-সুযোগ মতো ফিরলেই হলো। কারো কাছে জবাবদিহিতার কি আছ। জীবনতো নিজেরই। অন্য কারো নয়। বিপনন কর্মীর মতো প্রতারণার কাজটি শীতল করতে পারেনি কখনো। তাই কাউকে একবারের জন্যও বলেনি এই জীবন তোমার। বা এই জীবনতো তোমার অপেক্ষাতেই ছিল। সরনী বুঝি শীতলের কাছ থেকে এই কথাটিই শুনতে চেয়েছিল। দ্বিতীয় দেখার দিনই শীতলের জড়তার চাদর উড়ে যায়। পাঁচজনের খুব ভাল বন্ধু হয়ে যায় সে। একসঙ্গে ঘুরাঘুরি, মাদানী বিলে নৌ-বিহার সবই অল্প বিরতিতে চলতে থাকে। কিন্তু যেখানেই ওরা ঘুরতে যাক না কেনো, সরনী আর শীতলের সম্পর্কটা আলাদা পথে গড়িয়ে যাচ্ছে— সেটা ঠিক সবাই আঁচ করতে পারে।

তৃপ্তি প্রথম দিকে ঈর্ষা করে। ইশারায় কিছু বলতে চাইতো। কখনো কখনো সরনী যেনো ভুল বুঝে সেজন্য ইচ্ছে করেই শীতলের কাছে ঘেঁষতো, ছুঁয়ে দিতো। সরনী মনে হয় তৃপ্তির এই চাতুরতাটা বুঝতে পারে। তাই ও কোন প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তৃপ্তিও দমে যায়। পরে সরনী আর শীতলের সম্পর্কটাকে শক্ত বাঁধনে বেঁধে দায়িত্বটি ও নিজেই কাঁধে তুলে নেয়। কিন্তু শীতল কেমন যেনো শীতল হতে থাকে সরনীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির পর। ওর ইচ্ছায় যেনো মাদানী বিলের মতোই চর পড়তে থাকে। স্বপ্ন ভরাট হতে থাকে এক প্রকার উৎকণ্ঠা, সংশয়ে। শীতলভাবে ভালবাসা বা সম্পর্কের যে প্রেমজ আবেগ সেটি যদি বাষ্প হয়ে উড়তে শুরু করে একবার, তাহলে সেতো ঘাসফুল ছাড়া বালুচর হবে। সেই সম্পর্কতো রোদে শুকোতে দেয়া ছাড়া আর উপায় নেই। সরনীকে বলেছেও কথাগুলো। কিন্তু সরনীর কথা হলো, বৃষ্টি যখন থাকবে না তখন শিশিরে ভিজবে বালুকাবেলা। মন প্রেমজ থাকবেই। বালুকাবেলাতেও সবুজ লতাগুল্ম জন্মায়। শীতলের কথা হলো, সেখানে গন্ধরাজ ফুটে না। সেই লতায় কখনো অপরাজিতা ফুটবে না। ওদের দরকষাকষি অনেকদিন চলেছে।

ধীরে ধীরে পারাপারের নৌকার সংখ্যা কমেছে। মাদানী বিলের বুক চিড়ে তৈরি হয়েছে সড়ক। গাড়ির ভিড় বেড়েছে পথে। সরনীর অন্য সঙ্গীরা যে যার মতো চলে গেছে। দুজনার দেখাটাও হচ্ছিল না আগের মতোই। সরনীর দিক থেকে টান ছিল কিছুদিন। সেখানেও শীতলতা নেমে আসে। ততোদিনে শীতলের হাতে মুঠোফোন উঠে এসেছে। কাটা পড়েছে ছাতিম গাছটা। মাটি ভরাট করে ভবন তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছিল। বড় সাইনবোর্ডে বিশাল বিপনী বিতানের লোভনীয় ঘোষণা টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। শীতল এই পথ দিয়ে যাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল অনেকদিন। ছাতিম গাছের মায়ায়, নাকি কোন স্মৃতিকে আড়াল করতে, সেই হিসেব-নিকেশে যায়ওনি।   শুধু নিজেই ঠিক করে নিয়েছিল এবার নতুন একটা পথ খুঁজে নেয়া দরকার। এর মধ্যেই একদিন ফোন এলো সরনীর দিক থেকে। বললো কিছুই না শুধু একবার দেখা করতে চায় ও। শীতল সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছিল- দেখা করার ইচ্ছাটা এখন ফসিল। সরনী সেই ফসিলটাই দেখতে চায়। কবে নাকি বিদেশের কোন জাদুঘরে গিয়ে তিমি মাছের ফসিল দেখে ও এই ফসিল দর্শনের নেশা চেপেছে। তারই অংশ হিসেবে শীতলের ইচ্ছের ফসিলটাও দেখে নিতে চায় ও। শীতল এখনো জাদুঘর। দর্শনার্থীকে বারণ করতে পারেনি। আজও বাসা থেকে বেরিয়ে এই বিল্ডিং পর্যন্ত হেঁটে আসতে আসতে ভেবেছে, চারপাশটায় নজর বুলিয়েছে ও। সত্যিইতো সব কিছুই বিলুপ্ত, বিলুপ্ত প্রায়। সহজ ভাবে কোন কিছু দেখে চমকে উঠছে না কেউ। সবার মনে সংশয়। বিলের পাশের ঢোল কলমী, তার উপরে এসে বসা নানা রঙের ফড়িং দেখে ওরা যেমন আনন্দে মেতে উঠতে পারতো সহজেই। আজ দামী গাড়িতে বসেই সেই উৎসব উদযাপন করতে পারছে না কেউ। সবার মনে ভয় ধরেছে। হারিয়ে ফেলার। হারিয়ে ফেলা নিজেকে। হারিয়ে ফেলা স্বপ্নকে। আর সবাই যেনো কেমন কৃত্রিম আলোতে ভাসতে চায়। ওই আলোটা বুঝি অনেক দু:খ, অপরাধ, লজ্জাকে ঢেকে রাখতে পারে? শীতল বুঝে উঠতে পারে না। নিজের কাছেই নিজে জানতে চায় এই যে বিল্ডিংটিতে এতো আলোর আয়োজন, একেকটি রঙ বুঝি একেক রকমের অপরাধ,লজ্জা, ঘৃণাকে আড়াল করবে? উত্তর খুঁজে না পেয়ে হাঁটতে শুরু করে। একবার দক্ষিন, একবার উত্তর, আবার ঘুরে পূর্বে, না পশ্চিমেই যাবে ভাবছে। আসলে সরনী যে কোন দিক দিয়ে আসে তাতো ওর জানা নেই। শীতল ঠিক করেছে জাদুঘরটা বন্ধই রাখবে। কাউকে দেখতে দেবে না সেখানে সাজিয়ে রাখা ফসিলগুলো।



বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।