বৈরাগ্য
ঘুমের মধ্যে ভিজতে ভিজতে উঠে দেখি নমনীয় দিন
চোখের আওতায় উড়ছে মেঘ, হাত নাড়ছে বৃষ্টি
চশমার কাচ মুছে রাস্তায় মোড়ে
ক্ষীণ ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছেন
রিটায়ার্ড বুড়ো
বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে তার পেনশনের কাগজ
পাশের বাড়ির টিনের চাল পিছলে
অবিরাম ঝরে যাচ্ছে বারিধারা
কেউ তা পাতিলে ধরে রাখছে না
কে এক গোবেচারা
বর্ষায় ডুবে থাকা ম্যানহোলে পড়ল
আর হো হো করে হেসে উঠল কারা
এসব ঘটনার দাপটে সন্ধ্যা পালিয়ে গেল
বৃষ্টি থামল,
নামল রাত,
কেউ আমাদের সাথে নামল না!
ভোর
সারা রাত জাগার পর
ঘুমানোর আগে
সূর্যের আশ্চর্য জেগে ওঠা
মনোযোগে দেখে নিতে চাই।
সে চাওয়ার মধ্য দিয়ে
বয়ে যায় শ্রীমন্ত নদী,
নদীর উরুতে গিয়ে বসি।
দেখি,
পাখিরা উড়তে উড়তে
ভোর নিয়ে আসে
আমাদের সামান্য গ্রামে।
ঘণ্টাধ্বনির যন্ত্রণা
শহরের শেষ প্রান্তে অসহ্য ঘণ্টা বেজে ওঠে
দুপুর রাতে
দৃশ্যের চেয়ে শব্দকে প্রধান করে তুলে
উড়ে যায় নাম জানা পাখির ধারণা
কানে ঘাঁই মারে লেকের বুকের মধ্যে থাকা
একাকী মাছ
এসব দৃশ্যের মধ্য দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে
কার হৃদয়ে হেমন্তকাল—
ঘণ্টাধ্বনির যন্ত্রণা পেতে সে
রোজ মধ্যযামে
এই পথে কোথায় যে যায়!
খেলা
বাইরে থেকে বাজাচ্ছি নিজ ঘরের কলিংবেল
ভেতর থেকে নিজেই খুলছি দরজা
স্বয়ং ঢুকছি ঘরে।
শরতে
দূর ডোমঘর থেকে উড়ে আসা সাধ্যাতীত নীরবতা
পছন্দ করেছেন এ ঘরের গারদ
ঘুমিয়ে পড়লে আমার নাকের কাছে রাখছেন হাত
চাইছেন ফুল গাছের নিঃশ্বাস,
জানালায় খুলে রাখছেন দক্ষিণ দিক; হাস্নাহেনা।
আমি তো ঘুমের ভান
তন্দ্রায় মরা মানুষের ভূত
টেনে তুলে পান করতে চাইছেন চা
তাতে জলের বুদ্বুদ হয়ে হাতে ফুটে আছে ফোস্কা
ডোমঘর থেকে আসা অস্থির অতিথি
সিগ্রেট ঠোঁটে নিয়ে বসে
দেশলাই খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২, ২০১৫