মন্থর
দিন অবসানে, ধীরে ধীরে মুদিত হওয়া ফুলের ভিড়ে দাঁড়িয়ে যিনি, ধীরে
ধীরে জেগে ওঠা তারাদের আকাশ দেখছেন, তিনি ভাবছেন, সূর্য যখন
খুব ধীরে নিকটে আসবে, তখন ভোরবেলা, জানালা খুললেই আলো যদি
নিমেষে না এসে, ধীরে ধীরে ধোঁয়ার মতো করে তার ঘর ভরে দিত,
হয়ত তা আরো উপভোগ্য হয়ে উঠত! দয়ার্দ্র জীবন থেকে দ্রুত যা-
কিছু আসে, তার তো বিশ্বাসই হয় না, সেসবও প্রীতির মতো এসেছে।
অবসরের গান
যত ছবি মাথার ভিতর ঘুরছে-ফিরছে
একেকটা তার একেক গল্প ধরে রাখছে।
ফলে কোনো গল্প নয় আজ, অতর্কিত
একটা-দু’টা কথায় তারা সম্মিলিত।
এখন আমার নীরব থাকাই ভালো লাগে
হঠাৎ হঠাৎ বাকস্ফূর্তি পেয়ে বসে—
হয়ত তখন মনটা আমার ভীষণ ভালো
এখন যে খুব খারাপ তা নয়, এলোমেলো
হয়ে আছে—একেও আমি ভালোবাসি
আলোতে যাই, অন্ধকারেও একটু বসি।
২.
সুগন্ধ আর ভ্রমরসহ
আলোয় দুলছে কমলা ফুল;
আজকে আমি নম্র রোদে
দেখতে থাকি দেখার সুখে
দেখতে গিয়ে জাগল হঠাৎ
হাত বোলানোর সুখ;
একটি ডোভের নরম মাথায়
হাত বোলানোর সুখ।
অবসর আর কৃতজ্ঞতা,
মিলেমিশে জাগায় কথা;
নিজের কানেই অস্ফুট সব
নিজের লাগে ভালো।
৩.
যা-কিছু বিকার আছে আমার ভিতরে
সীমানা ও ডানা আমি দিয়েছি সেসবে।
অশেষ মুগ্ধতা আছে জীবনের প্রতি
গাড়ির বনেটে বসে দেখেছি গোধূলি।
প্যানোরামা
প্রত্যেকেই যার যার জায়গায় দাঁড়িয়ে দেখল গোধূলির প্যানোরামা—প্রাণময় অথবা
প্রাণহীন। দিন অবসানে কালো হয়ে আসলো ব্রিজ, মুছে গেল শেষ রশ্মি—সূর্যের।
অন্ধকারে, ক্ষেতে, যবের শীষগুলি, ডাঁটিগুলি কালো কালো, সারসের গ্রীবার মতোই
বাঁকানো—যেন দুলছে সহমত আর দ্বিমত প্রকাশে—সহমত আর দ্বিমত প্রত্যেকের
জীবনবোধে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৫