গাজীপুর: নুহাশপল্লীতে ম্যুরাল উন্মোচনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ৬৭তম জন্মদিনের সকাল।
শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে তার স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন, ছেলে নিনিত ও নিশাদ ম্যুরালটি উন্মোচন করেন।
এছাড়া গাজীপুর সদর উপজেলায় পিরুজালী গ্রামের নুহাশপল্লীতে দিনটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান নুহাশপল্লী কর্তৃপক্ষ।
ম্যুরালের স্থপতি শিল্পী হাফিজ উদ্দিন বাবু বাংলানিউজকে বলেন, স্যারের লাখো ভক্তের মধ্যে আমিও একজন ভক্ত। হুমায়ূন আহমেদের প্রতি ভালবাসা থেকে মূলত ম্যুরাল নির্মাণের উদ্যোগটি নেওয়া হয়। বাংলাদেশে এটিই কোনো লেখকের প্রথম এবং সর্ববৃহৎ ম্যুরাল। ম্যুরালটি স্থাপন করতে পেরে আমি নিজেকে গর্বিত মনে করছি।
নুহাশপল্লীর ব্যবস্থাপক বুলবুল আহমেদ জানান, বুধবার দিনগত রাত ১২টা ১মিনিটে নুহাশপল্লীতে ৩৬০টি মোম জ্বালিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এছাড়া নুহাশপল্লীর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে কেক কাটা, ম্যুরাল উন্মোচন, কবর জিয়ারত ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। হুমায়ূন আহমেদ জীবিত থাকাকালে যেভাবে দিনটি পালন করতেন, সেভাবেই জন্মদিনের অনুষ্ঠানিকতা পালন করা হচ্ছে। স্যারের ঢাকার বাসায়ও মোমবাতি জ্বালিয়ে কেক কাটা হয়।
হুমায়ূন আহমেদের ম্যুরাল:
নুহাশপল্লীতে হুমায়ূন আহমেদ হোয়াইট হাউজ নামে যে বাংলোয় থাকতেন এর ঠিক পাশের আপেল গাছের কাছে ম্যুরালটি স্থাপন করা হয়েছে। পল্লীর মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করলেই মনে হবে হুমায়ূন আহমেদ স্বাগত জানাচ্ছেন। ম্যুরালের একটু বাম পাশেই রয়েছে হুমায়ূন আহমেদের সমাধি।
৭০ বর্গফুট (১০ ফুট/৭ ফুট) আকৃতির এ ম্যুরালটির নির্মাতা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অয়েল পেইন্টিং বিভাগ থেকে (মাস্টার্স অব ফাইন আর্টস) পাশ করা শিল্পী হাফিজ উদ্দিন বাবু।
ঢাকার শাহবাগ এলাকায় জতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ম্যুরাল, ধানমণ্ডিতে ভাষা সৈনিকদের ম্যুরাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের সামনে প্রধানমন্ত্রীর ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু হলের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালও তার নির্মাণ করা।
ম্যুরাল নির্মাণের ইতিবৃত্ত:
হুমায়ূন আহমেদের ম্যুরালটি দেশের অন্য কোথাও স্থাপনের চিন্তা ছিল। পরে চলতি বছরেই ম্যুরালটি নির্মানের জন্য হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। শিল্পী এবং শাওনের অনুমতি নিয়ে ১ অক্টোবর ম্যুরাল স্থাপনের স্থান নির্বাচন করা হয়। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এটি সম্পন্ন করতে ২০ দিন সময় লেগেছে।
হিমুদের কর্মসূচি:
দিবসটি উপলক্ষে হিমু পরিবহনের একটি দল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টায় পায়ে হেঁটে নুহাশপল্লীতে যাত্রা শুরু করেছে। পথে তারা ক্যান্সার সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেছে। নুহাশপল্লীতে পৌঁছানোর পর তারা পথশিশুদের নিয়ে একটি কেক কাটবেন বলে জানান হিমু পরিবহনের সদস্য মাহমুদুল হাসান মাঝি।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৫
আরএম