কবিতা উৎসব থেকে: কবিতার কাজ মানুষের সংবেদনশীলতা টিকিয়ে রাখা। কিন্তু সেই কবিতার আকাশ ও মাটি দিন দিন কেন যেন ছোট হয়ে আসছে।
মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে জাতীয় কবিতা উৎসবের আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকউল্লাহ খান একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, আজ সারা পৃথিবীতে যে হানাহানি, অস্থিরতা তার মূল কারণ মানুষ শিল্প ও কবিতা থেকে বিচ্ছিন্ন। আইএস’র মতো শক্তি উত্থানের ফলে মানুষের সুকুমার প্রবৃত্তিগুলো ধ্বংস হারিয়ে যেতে বসেছে।
‘কবিতা মৈত্রীর, কবিতা শান্তির’ স্লোগান সামনে রেখে জাতীয় কবিতা পরিষদের আয়োজনে চলছে দু’দিনব্যাপী কবিতা উৎসব-২০১৬। উৎসবে অতিথি দেশ হিসেবে ভারত, মরক্কো, নেপাল, নরওয়ে, স্লোভিয়া, সুইডেন, তাইওয়ান প্রভৃতি দেশের কবিরা উপস্থিত আছেন।
আলোচনায় কবি ও রাজনীতিক নূহ-উল-আলম লেলিন বলেন, শান্তি ও মৈত্রী একটি অপরটির অনুষঙ্গ। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য মানুষের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন ছাড়া এটি সম্ভব নয়। শান্তির জন্যই ধর্মের সৃষ্টি হয়েছে। যারাই ধর্মের সাধক তারা মানুষের শান্তির পথ অনুসন্ধান করেছেন। জগতে না হলে পরকালে কীভাবে শান্তি পাওয়া যাবে তার কথাও বলেছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে এমন কোনো সময় নেই যখন নিরঙ্কুশ শান্তি ছিল। তাই বলা যাবে না এখন শান্তি আছে। আর শান্তি কখন আসবে তাও আমরা জানি না। তবে মানুষ শান্তির সংগ্রাম অব্যাহত রাখলেই অখণ্ড শান্তিময় পৃথিবী গড়া সম্ভব হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, কবিতা সামাজ্যবাদ, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কথা বলে। আর এটাই হলো কবিতার শক্তি।
ভারতের কবি দিলীপ দাস বলেন, যারা শান্তি ও মৈত্রীর বিরুদ্ধে তাদের চিহ্নিত করার সময় এসেছে। তাদের চিহ্নিত করতে না পারলে আজকের কবিতা উৎসবের স্লোগান স্লোগানই থাকবে। কবিতার ভাষা যদি কবিতাময় না হয়, তবে সে কবিতা দেশ ও মানুষের জন্য কোনো কাজে আসবে না।
কবি মনির সিরাজ বলেন, সবাই কবি হয় না, সবার কবিতা কবিতা হয়ে ওঠে না। এখানে যারা আছেন তারা সবাই কবিতা লিখতে না জানলেও কবিতা লেখার মতো একটা মন আছে। তাই বলে কি আমরা তাদের কবি বলে স্বীকৃতি দেবো না।
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, সবাই কবি নয়, তবে কবিতা লিখতে লিখতে একদিন ওই ব্যক্তি কবি হয়ে ওঠেন। তিনি মনের কথাগুলো বলতে বলতে একদিন কবি হয়ে যান। প্রত্যেক মানুষের মধ্যে কবিত্বকে জাগিয়ে তুলতে হবে।
আলোচনায় আরও অংশ নেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, ব্রিটিশ কবি কি জো উইন্টার প্রমুখ।
প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৬
এমআইকে/এএ