ঢাকা: গ্যালারির চার দেয়াল পেরিয়ে চিত্রকলার বিস্তৃতি ছড়িয়েছে শিল্পকলা আঙিনা পর্যন্ত। ক্যানভাসে শুধুই তুলির আঁচড় নয়, স্থাপনা শিল্প, ভাস্কর্যেও পরিপূর্ণ।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ‘২০তম নবীন শিল্পী চারুকলা প্রদর্শনী’র উদ্বোধনী দিনে চিত্রটা ছিলো এমনই।
পক্ষকালব্যাপী এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ও শিল্পী রফিকুন নবী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক উৎপল কুমার দাস।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেই বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। স্থাপনা শিল্পের জন্য ‘নবীন শিল্পী চারুকলা পুরস্কার পেয়েছেন সৈয়দ তারেক রহমান। পুরস্কার হিসেবে স্বর্ণপদকের পাশাপাশি পেয়েছেন এক লাখ টাকা।
এছাড়া ছাপচিত্রে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পেয়েছেন মোহাম্মদ ফকরুল ইসলাম মজুমদার, মিশ্র মাধ্যমে সনদ কুমার বিশ্বাস এবং তেল রংয়ে তানভীর জালাল।
ক্রেস্টের পাশাপাশি শিল্পীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ৭৫ হাজার টাকা। সম্মানসূচক পুরস্কার হিসেবে ৫০ হাজার টাকা করে পেয়েছেন নিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, জয়নুল আবেদীন, জুবলী দেওয়ান ও আখিনুর বিনতে আলী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি সচিব আক্তারী মমতাজ বলেন, অধরা সুন্দরকে ধরার অভিপ্রায়ে শিল্পকর্ম সৃষ্টি করেন শিল্পীরা। এ প্রদর্শনীটি নবীন শিল্পীদের আত্মপ্রকাশের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। নবীনদের ভালো কাজের জন্য ভবিষ্যতে প্রবীণদের সঙ্গে তাদের একত্রিত করে প্রদর্শনীর আয়োজন করা যেতে পারে।
শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর বলেন, এসব শিল্পীদের শুরুর সময়ের চেয়ে নবীন শিল্পীদের এখনকার কাজ অনেক ভালো। তাই তারা যে শুধু নবীন, তা আর বলা যায় না। এ প্রদর্শনীর সার্থকতা হচ্ছে এতে অংশ নিয়ে অনেকেই খ্যাতিমান শিল্পীতে পরিণত হয়েছেন।
শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, নবীনদের কাজগুলো দেখে মনে হলো তাদের বোধ হয় আর নবীন শিল্পী পরিচয়ে আটকে রাখা যায় না। কাজের মান এত ভালো যে- আজ নবীনদের নিয়ে পৃথক প্রদর্শনীর আয়োজন করার আর প্রয়োজন নেই। কাজের ক্ষেত্রে নবীনরা অনেক বুদ্ধিদীপ্ত ও প্রযুক্তির উৎকর্ষতার পরিপূর্ণ ব্যবহার করছে। ভাবনার জগতেও তারা প্রবীণদের মতো কাজ করছে। তাই এসব শিল্পীদের নিয়ে জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীর আয়োজন করাটাই যথেষ্ট।
উদ্বোধনী আয়োজন শেষে শিল্পকলা একাডেমির রেপার্টরি সঙ্গীত ও নৃত্য দল সমবেত সঙ্গীত ও সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন।
প্রদর্শনীতে ১৮৮জন শিল্পীর ১৮০টি চিত্রকর্ম, ৩০টি ভাস্কর্য, ৮টি স্থাপনাশিল্প, ৭টি ভিডিও স্থাপনাশিল্প ও ২টি পারফর্মিং আর্টসহ মোট ২২৭টি শিল্পকর্ম ঠাঁই পেয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর যাত্রা শুরু করা এ প্রদর্শনীতে ৪৬৪ জন নবীন শিল্পীর মোট ১ হাজার ২০টি শিল্পকর্ম থেকে প্রদর্শনীতে স্থানপ্রাপ্ত শিল্পকর্ম বাছাই করা হয়েছে।
এবার বিচারকমণ্ডলীতে ছিলেন শিল্পী নাইমা হক, শিশির ভট্টাচার্য, গোলাম ফারুক বেবুল ও রনজিৎ দাস। প্রাথমিক নির্বাচকমণ্ডলীতে ছিলেন শিল্পী ড. মোহাম্মদ ইকবাল, শিল্পী আতিয়া ইসলাম অ্যানী ও শিল্পী নাসিমুন খবীর।
শিল্পকলা একাডেমি থেকে জানানো হয়, বৃহস্পতিবার (২৬ মে) শুরু হওয়া পক্ষকালব্যাপী এ প্রদর্শনী চলবে ৯ জুন পর্যন্ত। প্রদর্শনী প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা এবং শুক্রবার দুপুর ৩টা থেকে রাত ৮টা এবং রমজান মাসে বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শিল্পরসিকদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০১৬
এসএমএ/এটি