রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশ ‘আবার আসিব ফিরে’ কবিতায় চারটি পাখির বর্ণনা করেছেন। এ যেন শব্দ আর রঙ-তুলির অপূর্ব বিন্যাস!
বাংলাদেশের প্রায় পঞ্চাশ প্রজাতির পাখির নাম জীবনানন্দ দাশের কলমে অমর হয়ে রয়েছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) বাংলার পাখিদের কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যুবার্ষিকী।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা বরেণ্য পাখি গবেষক ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, ‘জীবনানন্দ দাশ আমাদের বাংলা সাহিত্যের এমন কবি, যিনি পাখিদের কাছ থেকে দেখে তারপর লিখেছেন। অন্য লেখকেরা পাখিকে ঘনিষ্ঠভাবে অবলোকন করে তারপর উপলব্ধি সহকারে লেখেননি। জীবনানন্দ দাশ এ ক্ষেত্রে সফল কবি-লেখক’।
তিনি আরো বলেন, ‘পাখি খুবই আকর্ষণীয় একটি প্রাণী। পাখিকে একেবারে ঘনিষ্ঠভাবে দেখে স্বভাব-আকৃতির নিখুঁত বর্ণনা দিয়ে লিখে গেছেন জীবনানন্দ দাশ। তার লেখায় প্রায় ৫০ প্রজাতির পাখির বর্ণনা এতোটাই উন্নত, এতোটাই স্পষ্ট যে, সহজে আমরা এদের চিনে ফেলতে পারি’।
তিনি আরো বলেন, ‘যে পাঁচটি পাখির কথা তিনি সবচেয়ে বেশি লিখেছেন, সেগুলো হলো- বুনোহাঁস (Fulvous Whistling Duck), প্যাঁচা(Common Barn Owl), শালিক (Common Myna), চিল (Brahminy Kite) ও কাক (Jungle Clow)’।
ইনাম আল হক বলেন, ‘দশটি পাখিকে দেখে এর স্বভাব চিনে লেখেছেন এমন লেখক-কবি আমাদের বাংলা সাহিত্যে নেই, জীবনানন্দ ছাড়া। পাখিকে সাধারণভাবে পাখি হিসেবেই লিখেছেন অন্যরা, বিশেষভাবে লেখেননি। পাখি মানে তাদের কাছে ‘আইডিয়ালাইড পাখি’। যেমন, শকুনের সঙ্গে চিলের অনেক অমিল রয়েছে। অন্যরা শকুনও দেখেছেন, আবার চিলও দেখেছেন, কিন্তু ও রকমভাবে বলেননি। চিল নিয়ে অনেকেই লিখেছেন, কিন্তু চিলের স্বভাব দেখে কেউ লেখেননি। জীবনানন্দ দাশ সেটি সফলভাবে করেছন’।
জীবনানন্দের বিভিন্ন লেখা থেকে প্রায় ৫০টি পাখিকে আলাদা করে চিনে নেওয়া যায় বলেও মনে করেন প্রখ্যাত এই পাখি গবেষক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
বিবিবি/এএসআর