এই প্লাবনে অনেক জল আছে-
চোখ আমাকে কাঁদতে দেয় না
চোখ অনেক সময় নেয়, অনেক দূর যায়!
তারপর হলুদপাতা পুকুরে ঝরে
আমার ঢেউ ভাঙে, সামান্য কম্পনে
রাজনৈতিক পৃথিবী জেগে ওঠে-
অরাজনৈতিক সহিংসতায়।
৩৭.
তোমার অন্ধকার এসে যে পাড়ায় আলো ফেলে, আমি তার জোছনার ছায়ায় লুকোনো থাকি।
আলো আমার ভালো লাগে না। শহর দেখতে চাইলে- চোখে নাগরিক ধুলো জমে,
জমে অপরিশোধিত শ্রমের ঘাম, সবুজের আর্তনাদ আর পোড়া মাটির অসহায় গন্ধ।
বন্দরের চিলের উড়ালগুলো তোমায় মেলে ধরে! বন্দর খালি হলে ভরে ওঠে কার জিজ্ঞাসা?
যতবার দেখতে চাই, বুঝতে যাই, ততোবেশি উজ্জ্বল হয় অস্পষ্টতা।
৩৮.
ভেবেছিলাম একদিন কোনো এক রাস্তার চায়ের দোকানে
তোমার পাশে বসব, আমাদের একপাশে বসবে নীরবতা
অন্যপাশে সবুজ-প্রকৃতি, তোমার চোখ দু'টোতে নদী থাকবে
ভালবাসার জল থাকবে, ঢেউ থাকবে-
আমি জোয়ার-ভাটায় তোমাকে ডানে বায়ে টানবো
কিন্তু তুমি তখনও আমার পাশেই থাকবে
পায়ের বুড়ো আঙুলের নখে মাটি খোঁচাবে,
সামনের শূন্য পথের দিকে তাকিয়ে আরও বহু দূরে
তোমাকে রেখে দিয়ে আমার পাশেই বসে থাকবে।
এমন কথা ছিল না যে, তুমি শুধু বৃষ্টিভেজা ঘাসের গন্ধই হবে, অথবা
ভালোবাসার প্রথম সাক্ষাতের অস্ফুট কম্পনের লাল ফুল।
৩৯.
শহরে এসে বৃষ্টি ভিজে যায়, পানি যায় চোখের দূর আঙিনায়
শেষ রাতের বাতাসে তোমার ক'ফোঁটা অপরিচয় ফিরে আসে।
দূর থেকে দূর হারিয়ে গেছে। এখন আমাদের দূরত্ব ঠিকানাহীন,
আমরা আমাদের চোখ দেখি না।
তুমি পাখি দেখ, ঘাস দেখ, ফুল দেখ, দেখ মানুষের বিচিত্র।
আমিও দেখি-
দেখতে দেখতে আমরা গঞ্জের সব দেখাগুলো শেষ করে ফেলি।
৪০.
তোমার সব কথা ভালোবাসায় লেখা থাকবে
তোমার ছবি আঁকা থাকবে কবিতায়
গল্পে ভরে উঠবে তোমার নদী।
একদিন এখানে এসো, বসো-
দেখো, একটি টিয়ে উড়বে পাহাড়ে
পাহাড় ভরে উঠবে তোমার উড়ালে
চলে যাওয়ার সবুজ দাগে, স্মৃতিতে।
সাপের খোলসে শুয়ে আছে আমাদের যৌথঘুম-
দুপুরের প্রান্তে, জেগে আছে, জেগে ওঠা প্রতিটি দিন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৭, ২০১৭
এসএনএস