ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

নানা আয়োজনে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০১৮
নানা আয়োজনে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাঙালির মনন ও সৃজনশীলতার স্মারকবহ প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। বায়ান্নর ভাষা শহীদদের রক্তের ঋণকে ধারণ করে ১৯৫৫ সালে গড়ে ওঠা প্রতিষ্ঠানটি উদযাপন করলো ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

সোমবার (০৩ ডিসেম্বর) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি, আলোচনা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ দিনব্যাপী ছিল নানা কর্মসূচি। যুক্ত হন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সাত মহাপরিচালক।

হাজির হয়েছিলেন অনেক সাবেক কর্মকর্তারাও। সবমিলিয়ে বাংলা একাডেমি চত্ত্বরে সৃষ্টি হয় আনন্দময় পরিবেশ।

ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পাঞ্জলি, বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ'র সমাধিতে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিস্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপনের মাধ্যমে সকালে শুরু হয় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন।

বিকেলে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ছিল প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তৃতা, স্মৃতিচারণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ‘বৈশ্বিক পটভূমিকায় বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও জাতিরাষ্ট্র’ শীর্ষক প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর বক্তৃতা করেন প্রাবন্ধিক, গবেষক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক। কথাসাহিত্যিক সুব্রত বড়ুয়ার সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির ভারপ্রাপ্ত সচিব অপরেশ কুমার ব্যানার্জী।

ছবি: বাংলানিউজ

মফিদুল হক বলেন, ‘বিশ শতকের মুক্তি-আন্দোলনের নিরিখে বৃহত্তর পরিসরে বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বাঙালির জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াই বিবেচনা করার রয়েছে অশেষ গুরুত্ব। বাঙালির জাতীয়তাবাদ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমন্বয়বাদী সম্প্রীতির যে আদর্শ বহন করে তা ধর্মবিভাজন অতিক্রম করে জাতিসত্তায় মিলনের পথ প্রশস্ত করে। জাতীয়তাবাদের ঔপনিবেশিকতাবিরোধী চরিত্র ধারণ করে এই সম্প্রীতির আদর্শে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে বাঙালির জাতিরাষ্ট্র, আজকের ধর্মভিত্তিক সংঘাতময় বিশ্বে তার গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশের অভ্যুদয় তাই দাবি করে গভীরতর বিবেচনা ও বিশ্লেষণ। ২০২১ সালে মুক্তিযুদ্ধের পঞ্চাশৎ বার্ষিকী সামনে রেখে বহুতর গবেষণা সম্পন্ন হবে, নতুন আলোকে আমরা চিনে নিতে পারব আপন সত্তা ও এর তাৎপর্য, সেই আশাবাদ এখানে ব্যক্ত করা যায়। ’

বাংলা একাডেমি জীবনের স্মৃতিচারণে অংশ নেন একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক কবি মনজুরে মওলা, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক মনসুর মুসা, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ, প্রাক্তন সচিব মোঃ আলতাফ হোসেন এবং প্রাক্তন পরিচালক রশীদ হায়দার, আসাদ চৌধুরী, মুহাম্মদ নূরুল হুদা, ফরহাদ খান, আবদুল হান্নান ঠাকুর, জাকিউল হক, নুরুল ইসলাম বাঙালি প্রমুখ।

তারা বলেন, বাংলা একাডেমি সময় ছিল আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। এই প্রতিষ্ঠান আমাদের কাছে কেবল পেশাগত দায়িত্ব পালনের জায়গা ছিল না বরং জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক শ্রেষ্ঠত্বের পবিত্র অঙ্গনে আমরা নিজেদের শ্রম ও মেধা যেমন নিয়োজিত করার সুযোগ পেয়েছি তেমনি ঋদ্ধ হয়েছি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির অনির্বাণ আলোয়।

বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পরিবেশিত ‘সুরভিত সন্ধ্যায়’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল বিতর্ক প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশনা।

বাংলাদেশ সময়: ০১৪৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮
এইচএমএস/এমকেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।