ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’

উপজেলা করসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’

ইশ্বরদী (পাবনা): শেকড়ের টানে বারবার চলে আসি বাংলাদেশে। এদেশের কবিদের সাথে পশ্চিমবাংলার কবিদের আড্ডা, মিলনমেলায় আমি আপ্লুত হই। কবিতা যে মানুষকে ভালোবাসার বাঁধনে বাঁধতে পারে, তার সবথেকে বড় প্রমাণ সম্ভবত সাহিত্যে সম্মেলন। কবিতা বারবার আমাদের এইভাবে বেঁধে রাখুক, এমনটাই প্রত্যাশা। সে কথা কবি শঙ্খ ঘোষের ভাষায় বলতে হয় ‘আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি’!

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর গড়গড়ি গ্রামে শুরু হয়েছে দুই বাংলার কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে তিন দিনব্যাপী চরনিকেতন বৈশাখের উৎসব ও বাংলা সাহিত্য সম্মেলন। এ আয়োজনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে এমনটাই বলেন কলকাতার কবি গার্গী সেনগুপ্ত।

সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত সারাদেশের অর্ধ শতাধিক কবি এবং ওপার বাংলার ১৪ জন কবি সাহিত্যিকদের মতবিনিময় ও প্রাণবন্ত আড্ডায় উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় সাহিত্য সম্মেলনে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওসাকা’র সার্বিক পরিচালনায় চরনিকেতন কাব্যমঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা, একুশে ও বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি ও গবেষক মজিদ মাহমুদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।

আয়োজনে এসে কলকাতার কবি সোমা ভদ্র নিজের অনুভূতি ব্যাক্ত করে বাংলানিউজকে বলেন, চরনিকেতন যেন শান্তি নিকেতন। মন আমার বিদীর্ণ হল, চোখে এল জল। প্রথমবার বাংলাদেশে পা দিয়ে যে অনুভূতি হল, তা অভাবনীয়। বাঙালির শিকড়ের টানে বাংলাদেশে এসেছি। বহু বিচিত্র ব্যাস্ততায় কলকাতার যাপিত জীবনে কবিতাকে নিয়ে বাঁচি। এখানে কবিতার টানেই সমমনস্ক মানুষ, কবিতামনস্ক মানুষদের সাথে; এটা পরম প্রাপ্তির।

দূরদর্শনের সংবাদ পাঠিকা ও কবি স্বপ্না দে বলেন, এর আগে দু’বার এসেছি ঢাকা জাতীয় কবিতা উৎসবে ও ঢাকা প্রেস ক্লাবে। সেই আয়োজন একদম নাগরিক আয়োজন ছিল। কিন্তুু শহর থেকে এতদূরে, এত মানুষ শুধু বাংলা মনে রেখে কবিতা ভালোবেসে যে সেতু তৈরী করেছেন, একটি পরিবার গড়ে তুলেছে, তা সত্যিই অনন্য।

কলকাতার কবি শশি সরকার বলেন, আমি প্রথম এলাম বাংলাদেশে। চরনিকেতনে এসে মনে হচ্ছে বাংলাদেশকে কাছ থেকে দেখতে ও জানতে পারবো।

তিন দিনব্যাপী এ বৈশাখী উৎসব ও সাহিত্য সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন ভারতের কবি দীপক লাহিড়ী, চিত্রা লাহিড়ী, দেবারতি ভট্টাচার্য, সোমাভদ্র রায়, গার্গী সেনগুপ্ত, শশী সরকার, এষা বিশ্বাস, মানসী কীর্তনিয়া, সঞ্চয় রায়সহ অনেকে। এছাড়া বাংলাদেশের বিশিষ্ট ছড়াকার আসলাম সানী, কথাশিল্পী আলী ইমাম, কুদরত-ই-হুদা, সোহাগ সিদ্দিকীসহ অনেকেই অনেকেই আছেন এ আয়েজনে।

ছড়াকার আসলাম সানী বলেন, স্বাধীন সার্বভৌম এই গৌরবান্বিত স্মৃতিময় বাংলাদেশের অজপাড়াগাঁ চরগড়গড়ি কে আমার কাছে মনে হয়েছে একটি আদর্শ গ্রাম। গবেষক, সংগঠক ও কবি মজিদ মাহমুদের সৃষ্টিশীল সংগঠন ওসাকার আয়োজনে গ্রামোন্নোয়ন আলোয় সিক্ত হয়েছে দেখে মনে হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্ন, দেশরত্নের উন্নয়ন অভিযাত্রায় আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।

আয়োজনের উদ্যোক্তা কবি, গবেষক ও চরনিকেতন কাব্যমঞ্চের পরিচালক মজিদ মাহমুদ জানান, বাংলা সাহিত্য ও বাঙালি সংস্কৃতি ও দেশের মানুষের জন্য কিছু করতে পারা, এটা অনেক গর্বের ও আনন্দের। এই প্রত্যয় নিয়েই পথচলা।

এ উৎসব শেষ হবে ১৬ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায়। উৎসব শেষের আগে লেখকদের সম্মাননা দেয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০১৯
এইচএমএস/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।