ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

কবি হায়াৎ সাইফের প্রয়াণে স্মরণসভা

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫২ ঘণ্টা, মে ২০, ২০১৯
 কবি হায়াৎ সাইফের প্রয়াণে স্মরণসভা অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথিরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন প্রখ্যাত কবি হায়াৎ সাইফ। তার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে বাংলা একাডেমিতে হয়ে গেল হায়াৎ সাইফের প্রয়াণে স্মরণসভা।

সোমবার (২০ মে) একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ সভায় আলোচনা ও স্মৃতিচারণে অংশ নেন কবি আসাদ চৌধুরী, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী, কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার, কবি কাজী রোজী, কবি জাহিদুল হক, ফ র মাহমুদ হাসান, সাবেক কূটনীতিক মহিউদ্দিন আহমেদ, কবি আসাদ মান্নান এবং কবি হায়াৎ সাইফের দুই ছেলে জিসান সাইফ ও মেহরান সাইফ।

এছাড়া হায়াৎ সাইফের স্ত্রী তাহমিনা ইসলাম লাকি এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন।

স্মরণসভায় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের পাঠানো লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলা একাডেমির উপ-পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সুলতান। সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।

বক্তারা বলেন, ষাটের দশকের বিশিষ্ট কবি ও গদ্যকার হায়াৎ সাইফ। প্রথম কবিতাগ্রন্থ 'সন্ত্রাসে সহবাস' (১৯৮৩) থেকে শুরু করে সাম্প্রতিকতম কবিতায় তিনি তার স্নিগ্ধ ও পেলব স্বাক্ষর রেখে গেছেন। কবিতায় নৈর্ব্যক্তিক ব্যঞ্জনায় ব্যক্তির অন্তর্গত আর্ত অবয়ব যেমন তিনি সুদক্ষতায় ফুটিয়ে তুলেছেন তেমনি পরোক্ষতার মুদ্রায় দেশ, মাটি ও মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। গদ্যরচনায়ও তার সাফল্য সামান্য নয়।

হায়াৎ সাইফের স্মৃতিচারণ করে তারা বলেন, হায়াৎ সাইফের প্রবন্ধগ্রন্থ ‘উক্তি ও উপলব্ধি’ প্রমাণ করে মৌলিক ধ্যান ও ভাবনাশীল গদ্যের কারুকার হিসেবে তার বিশিষ্টতা। পাশাপাশি গবেষণাগ্রন্থ সংরক্ষণবাদ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও শুল্ক ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তার মেধা ও মননের সাক্ষ্য বহন করে।  

‘ব্যক্তি হিসেবেও তিনি ছিলেন তুলনারহিত। একজন সদালাপী, সজ্জন, উদার, অসাম্প্রদায়িক, মানবতাবাদী মানুষের নাম হায়াৎ সাইফ। ’

লিখিত বক্তব্যে এইচ টি ইমাম বলেন, ষাটের দশকের আধুনিক কবিদের মধ্যে হায়াৎ সাইফ ছিলেন অন্যতম। উচ্চপদস্থ একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে একদিকে যেমন তিনি তার প্রাত্যহিক দায়িত্ব সামলেছেন, অপরদিকে নিজের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও চেতনার নিমগ্নতা দিয়ে সৃজন করেছেন অনন্যসাধারণ কাব্যগাথা।  

‘সজ্জন, সদালাপী এই মানুষটি কখনো খ্যাতির মোহে ধাবিত হননি, কোনো প্রত্যাশা বা উচ্চাকাঙ্ক্ষার কাছেও নিজের মনোজগতকে বিসর্জন দেননি। নিজের আজন্ম বিশ্বাস, ভালোলাগা ও ভালোবাসাকে সার্বজনীনতায় লীন করেছেন। নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন সময়ের বহমান গতিধারায়, সৃষ্টির কল্যাণে। ’

সভাপতির বক্তব্যে রামেন্দু মজুমদার বলেন, হায়াৎ সাইফ বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সাহিত্যকৃতির অধিকারী ছিলেন। একজন রুচি স্নিগ্ধ, জ্ঞানযোগী মানুষ হিসেবে তার কোনো তুলনা ছিলো না। তার অনন্য কবিতাকৃতির যথাযথ স্বীকৃতি তিনি পাননি কিন্তু এই নিয়ে কখনো তার কোনো আক্ষেপ ছিলো না। বরং সৃষ্টি, সুন্দর এবং কল্যাণের পথে তিনি সবসময় নিজেকে নিবেদিত রেখেছেন। আমাদের সবার স্মৃতিতে এভাবেই ভাস্বর হয়ে থাকবেন হায়াৎ সাইফ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, মে ২০,২০১৯
এইচএমএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।