সর্বশেষ বুধবার (১২ জুন) বিকেল থেকেই নাট্যকর্মীদের পাশাপাশি শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জড়ো হতে শুরু করেন ‘স্তালিন’ নাটকের বিরোধিতাকারীরা। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সেখানে হাজির হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
প্রতিবাদ সমাবেশে ছিলেন- বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বজলুর রশীদ ফিরোজ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের ফয়জুল হাকিম লালা, বাসদ মার্কসবাদী কেন্দ্রীয় নেতা মানষ নন্দী, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতা হামিদুল হক, নয়া সমাজতান্ত্রিক গণমোর্চার জাফর হোসেন, বিবর্তন সাংস্কৃতিক সংগঠনের মফিজুর রহমান লালটু, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শম্পা বসু, নারীমুক্তি ফোরামের শিমা দত্ত প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যখন কোনো নাটক ইতিহাস বিকৃতি করে, তখন সেটা কোনো সংস্কৃতির ভেতর থাকে না। সেটা হয়ে যায় অপসংস্কৃতি। অপসংস্কৃতির এক প্রতিফলন এ নাটক। আজকের অবস্থান সেই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার অংশ।
তারা বলেন, তাদের কেউ নাটকের বিপক্ষে নন। কোনো একটা নতুন নাটক চললে তারা সদলবলে নাটক দেখতে আসেন। তারা কোনো নাটক বন্ধের পক্ষেও নন। এ নাটক বন্ধ করা হবে কী হবে না, সে ব্যাপারে তাদের কিছু বলার নেই। এখানে যারা নাট্যকর্মী, নাট্যজন ও নাট্যব্যক্তিত্ব আছেন, তারাই ঠিক করবেন কোন নাটক চলবে বা চলবে না।
মঙ্গলবার (১১ জুন) রাতে জাতীয় নাট্যশালায় নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী শেষে শিল্পকলা একাডেমির পরিবেশ বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে নাটকে ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা নিয়ে। নাটক শেষে একযোগে প্রতিবাদ জানানোর পাশাপাশি স্লোগানও দেন কিছু দর্শকরা। তাদের বক্তব্য, নাটকে যোসেফ স্তালিনকে ভয়ঙ্কর, অমানবিক, একরোখা ও নির্দয় হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এর আগে, সোমবার (১০ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় ‘স্তালিন’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়। সেদিন থেকেই আলোচনায় উঠে আসে নাটকটি। তবে পরদিন মঙ্গলবার রাতে নাটকটির দ্বিতীয় প্রদর্শনী শেষ হওয়ার পর অন্তত ১৫ মিনিট ধরে চিৎকার ও স্লোগান চলে মিলনায়তনে এবং নাট্যশালার করিডোরে। পরে থিয়েটার অঙ্গনের জ্যেষ্ঠ কর্মীর হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।
এসব সমালোচনা সম্পর্কে নাটকের নির্দেশক কামালউদ্দিন নীলু বাংলানিউজকে জানান, এ নাটকের কোনো কিছুই বানানো বা তার নিজের কল্পনাপ্রসূত নয়। নাটকটির পাণ্ডুলিপি তৈরির ক্ষেত্রে সাইমন সিব্যাগ মন্টিফিওরের ‘স্তালিন: দ্য কোর্ট অব দ্য রেড জার’, সেভৎলানা অ্যালিলুয়েভার ‘অনলি ওয়ান ইয়ার’ ও ‘টোয়েন্টি লেটার্স টু আ ফ্রেন্ড’, ডেভিড পিনারের ‘দ্য টেডি বিয়ার্স পিকনিক’ এবং রোজমেরি সুলিভানের ‘স্তালিন্স ডটার’ বইগুলো সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে কাজ করেছে। সেখান থেকেই নাটকটির পাণ্ডুলিপি তৈরি করা হয়েছে।
নাটকটি নিয়ে এভাবে প্রতিবাদ না করে বরং আলোচনা-বিতর্ক হতে পারতো বলেও মন্তব্য করে প্রয়োজনে আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান কামালউদ্দিন নীলু।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, জুন ১৪, ২০১৯
এইচএমএস/এসআরএস