সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) শিল্পকলা একাডেমি ঘুরে এমন উৎসবের আমেজই দেখা গেছে। এদিন জেলা শিল্পকলা একাডেমির শিশুদল এবং বিভিন্ন শিশু সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিবেশন করে একাধিক নাটক, আবৃত্তি, সঙ্গীত ও নৃত্য।
শিশু উৎসবের চতুর্থ দিন বিকেলে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার হলে ম. নিজামের রচনায় ও অজয় দাসের নির্দেশনায় স্বদেশ নাট্যাঙ্গন রাজবাড়ী পরিবেশন করে নাটক ‘ময়না মেয়ের বিয়ে’। ড. সেলিম আলদীন রচিত অনিক সাহা নির্দেশিত জেলা শিল্পকলা একাডেমি নেত্রকোনা পরিবেশন করে নাটক ‘জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন’। তারেকুজ্জামান তারেকের রচনায় ও নির্দেশনায় আমাদের থিয়েটার দিনাজপুর পরিবেশন করে নাটক ‘চোখ’। আসাদুল ইসলামের রচনায় মেহেদী হাসান সোহাগের নির্দেশনায় সোনালী থিয়েটার সেতাবগঞ্জ দিনাজপুর পরিবেশন করে নাটক ‘নরমেধ’।
একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বিকেল থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পিরোজপুর, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নেত্রকোনা, রাজবাড়ী ও কুমিল্লার শিশুদল পরিবেশন করে আবৃত্তি, একক অভিনয় ও ৭ই মার্চের ভাষণ। এরপর এসএম মিজানুর রহমানের রচনায় খোকন হাসান চাঁদ এর নির্দেশনায় সন্ধান লিটল থিয়েটার ঢাকা পরিবেশন করে নাটক ‘হনন’। শেখ আবু মোহাম্মদ জুবায়ের জনির রচনায় তাপস ভট্টাচার্যের নির্দেশনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি শিশু নাট্যদল পিরোজপুর পরিবেশন করে নাটক ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’।
একাডেমির জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে শিশু থিয়েটার মুক্তাগাথা ময়মনসিংহ পরিবেশন করে নাটক ‘খোকার গল্প’, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গল্প অবলম্বনে শাহজাহান চৌধুরীর নাট্য রূপান্তর ও নির্দেশনায় দ্যুতি ফয়জুন্নেসা স্কুল নাট্য ও সাংস্কৃতিক দল কুমিল্লা পরিবেশন করে নাটক ‘ছুটি’। এছাড়া প্রগতি থিয়েটার পার্বতীপুর দিনাজপুর পরিবেশন করে নাটক ‘জয়বাংলা একটি শ্লোগান’, অনসাম্বল থিয়েটার ময়মনসিংহ পরিবেশন করে নাটক ‘মরা’ এবং জেলা শিল্পকলা একাডেমি শিশু নাট্যদল লালমনিরহাট পরিবেশন করে নাটক ‘গৃহস্থের একদিন’।
একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জেলা শিল্পকলা একাডেমি পিরোজপুর, ময়মনসিংহ, ঝালকাঠি, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, নেত্রকোনা, রাজবাড়ী, কুমিল্লা ও ঢাকা পরিবেশন করে সমবেত সঙ্গীত, একক সঙ্গীত ও সমবেত নৃত্য। একাডেমির বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিশুদের অংশগ্রহণে চিত্রাংকন, বঙ্গবন্ধু পুষ্পকানন নির্মাণ এবং সমাবেশসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
আয়োজনে অংশগ্রহণ করে পিরোজপুরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাত মারিয়া বলে, এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন বিষয়ে শিখতে পারছি। বিশেষ করে অন্যদের সঙ্গে পরিচয় হচ্ছে এবং তাদের পরিবেশনা দেখার মাধ্যমে নিজেদের কাজগুলোকেও সমৃদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছি।
আয়োজন সম্পর্কে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী জানান, শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে শিশুরা পরিপূর্ণ মানুষরূপে গড়ে উঠতে পারে। আজকের শিশুরাই ২০৪১ এর উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা পালন করবে। এই উৎসবের মাধ্যমে শিশু নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। শিশুদের জন্য শিশুদের অভিনীত নাটক ছাড়াও বিশ্বের উন্নত দেশসমূহের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের শিশুদের জন্য বড়দের নাটক মঞ্চায়নের ধারাও তৈরি হয়েছে।
এবারের আয়োজনে ৬৪ জেলার সাংস্কৃতিক দল এবং ৯৫টি শিশু নাট্য সংগঠনের দশ হাজারেরও বেশি শিশুর অংশ নিয়েছে। উৎসবে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা, জাতীয় চিত্রশালা, জাতীয় সংগীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন ও একাডেমি প্রাঙ্গণসহ প্রতিদিন আটটি ভেন্যুতে নয়টি জেলার ৮৫টি পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৬০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯
এইচএমএস/এইচএ/