বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) রাতে প্রধান অতিথি হিসেবে এই উৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, ঢাকা ব্যাংকের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার এবং সান কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, লোকসঙ্গীত আমাদের হৃদয়ের কথা বলে, জীবনের কথা বলে। এই গানের মধ্যে দিয়ে উঠে আসে আমাদের জীবনের অব্যক্ত কথাগুলো; যার আবেদন কখনো শেষ হবে না। এই গান তার নিজ গুণে মানুষকে হাসায়, কাঁদায়, আনন্দ দেয়।
তিনি বলেন, সঙ্গীত এবং সংস্কৃতিচর্চা যুব সমাজকে সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখে। সুন্দর সমাজ তৈরির জন্য এটি একটি বড় হাতিয়ার। তাই এই আয়োজন শুধু ঢাকা নয়, বরং ছড়িয়ে যাক দেশের সর্বত্র।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, আমাদের লোকসঙ্গীত আমাদের জীবনের হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, প্রেম-ভালোবাসা, আবেগ-অনুভূতি অনন্য সংমিশ্রন। এর অপূর্ব প্রকাশ এতটা শক্তিশালী যে, তা আমাদের বাংলা এবং আমাদের নাড়ির সঙ্গে সম্পৃক্ততা নতুন করে মনে মনে করিয়ে দেয়।
এ সময় তিনি ‘কোথায় পাব কলসি কন্যা কোথায় পাব দড়ি তুমি হউ গহীন গাঙ আমি ডুইব্যা মরি’ গানটির অংশ বিশেষ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, অনুভূতির এত সুন্দর প্রকাশ আর কোথায় পাওয়া যাবে! লোকসঙ্গীত আমাদের অতীত মনে করিয়ে দেয়, ভাষা মনে করিয়ে দেয়, নিজের জীবনের নাড়ি মনে করিয়ে দেয়। এর প্রসার বিশ্বময় হোক, এমনটাই প্রত্যাশা।
ঢাকা ব্যাংকের ফাউন্ডার চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বলেন, গত শতাব্দীর শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাংলার লোকজ সুরে একটু শূন্যতার তৈরি হয়েছিল। তবে বর্তমানে তা সমৃদ্ধ এবং নতুনভাবে উঠে আসছে। এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে লোকগানের সঙ্গে দেশের যুবকদের যেমন সম্পৃক্ততা বাড়ছে, তেমনি এটি সম্পর্কে জানতে পারছে সারাবিশ্ব। বর্তমান সময়ে পশ্চিমা সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার অন্যতম পথ এই লোকসঙ্গীত।
সান কমিউনিকেশনের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী বলেন, বাংলার লোকগান অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলার লোকজ সুর সারাবিশ্বে ছড়িয়ে যাচ্ছে। বাংলর মানুষের সঙ্গে বিশ্বের নানা প্রান্তের লোকজ গানের পরিচয় হচ্ছে। আমরা আশা করি, এর বিস্তার আরও বাড়বে।
এর আগে সন্ধ্যায় ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট’ উৎসবের পঞ্চম আসরের পর্দা উঠে ‘প্রেমা ও ভাবনা’ নৃত্যদলের শিল্পীদের পরিবেশনা দিয়ে। এরপর মঞ্চে লোকসংগীতের পরিবেশনা নিয়ে আসে জর্জিয়ার গানের দল ‘শেভেনেবুরেবি’।
মঞ্চে আজ আরও গান পরিবেশন করবেন বাংলার অন্যতম লোকশিল্পী শাহ্ আলম সরকার এবং ভারতের লোকশিল্পী দালের মেহেন্দি।
আয়োজকরা জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এ অনুষ্ঠান চলবে। অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের জন্য দর্শকদের প্রতিদিন এন্ট্রি পাস দেখাতে হবে। হেডফোন, চার্জার বা পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে আর্মি স্টেডিয়াম প্রবেশ করা যাবে না। এছাড়া রাত ১০টার পর অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশদ্বার বন্ধ হয়ে যাবে।
আয়োজকরা আরও জানান, উৎসব প্রাঙ্গণে গাড়ি পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা থাকছে না। তবে অনুষ্ঠান শেষে আর্মি স্টেডিয়াম থেকে দর্শকদের জন্য পাঁচটি ভিন্ন রুটে বাসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) উৎসবের দ্বিতীয়দিনে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের মালেক কাওয়াল, ফকির শাহাবুদ্দিন, ম্যাজিক বাউলিয়ানার কামরুজ্জামান রাব্বি ও শফিকুল ইসলাম, পাকিস্তানের হিনা নাসরুল্লাহ ও মালির হাবিব কইটে অ্যান্ড বামাদা।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সমাপনী দিনে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন বাংলাদেশের কাজল দেওয়ান ও চন্দনা মজুমদার এবং পাকিস্তানের ব্যান্ডদল ‘জুনুন’ ও রাশিয়ার ‘সাত্তুমা’।
বাংলাদেশ সময়: ২৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০১৯
এইচএমএস/ডিএন/এএটি