যাত্রাপালার মধ্যে ঐতিহাসিক বিভিন্ন প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি উঠে আসে সামাজিক নানা অসংগতি ও অনিয়মের প্রতিচিত্র। গত শতকের নব্বই দশক পর্যন্ত যাত্রা একটি জনপ্রিয় শিল্প মাধ্যম হিসেবে এ দেশের দর্শকমহলে ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যাত্রাশিল্পের সুদিন ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে নানবিধ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। ‘যাত্রা শিল্পের নবযাত্রা’ স্লোগান ধারণ করে যাত্রা-নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে এবং কয়েক বছর ধরে শিল্পকলা একাডেমি কর্তৃক যাত্রাদল নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে।
সেই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হলো ১১ তম যাত্রা উৎসব। এই উৎসবে অংশগ্রহণ করা যাত্রা দলগুলো একদিকে যেমন গ্রামের যাত্রাপালার ঘ্রাণ দিয়ে মুগ্ধ করবে শহরকে; একইসঙ্গে নিজেদের পরিবেশনায় ভালো ফলাফলের মধ্য দিয়ে নিবন্ধিত হবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে।
বিকেলে একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব মো. বদরুল আনম ভূঁইয়া।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, এসএম মহসিন এবং জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আফসার আহমেদ।
আয়োজনের উদ্বোধন করে বদরুল আনম ভূঁইয়া বলেন, যাত্রাপালার ঐতিহ্য অত্যন্ত প্রাচীন। কিন্তু বিভিন্ন আবহে বাঙালির লোকসংস্কৃতির অন্যতম ঐতিহ্য যাত্রাপালা হারিয়ে যেতে বসেছে। তাই যাত্রাপালার সার্বিক মান উন্নয়ন এবং দলগুলোকে নিবন্ধনের জন্য এই উৎসব। এতে করে শহরের মানুষগুলো যেমন যাত্রাপালার স্বাদ পাবে, তেমনি নিবন্ধিত হওয়ার মাধ্যমে দলগুলোও পালন করবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
উদ্বোধন ঘোষণা শেষে দীপ্তি যাত্রাদল মঞ্চে নিয়ে আসে তাদের যাত্রা পরিবেশনা ‘সাগর ভাসা’। দুটি রাজ্যের রাজার মধ্যে অন্য রাজ্য জয়ের জন্য যুদ্ধ এবং এই প্রেক্ষিতে রাজ্যের সাধারণ প্রজাদের দুঃখগাথাগুলো উঠে আসে এই যাত্রাটিতে।
একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের ব্যবস্থাপনায় ২৮-২৯ নভেম্বর পর্যন্ত দু’দিনব্যাপী জাতীয় নাট্যশালার স্টুডিও থিয়েটার হলে এ যাত্রানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বিভিন্ন যাত্রাদলের যাত্রাপালা মঞ্চায়িত হবে। আর সব যাত্রাপালাগুলোই দর্শকদের জন্য উন্মক্ত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৮, ২০১৯
এইচএমএস/এএটি