শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশের গ্রুপ থিয়েটার চর্চা: আগামীর নাটক/ নাটকের আগামী’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় অধ্যাপক আবদুস সেলিম একথা বলেন।
আবদুস সেলিম বলেন, বাংলাদেশের গল্পবলা নাটকের কখনও মৃত্যু হবে না।
তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী প্রতিকুল পরিবেশেও দেশের নাট্যচর্চা থেমে ছিল না। এ ভূখণ্ডের নাট্যচর্চার ইতিহাস স্বাধীনতার পর আরও বেগবান হয়েছিল। সেকারণে কোনো সামরিক শক্তি জাতির পিতার স্বাধীনচেতা প্রতিবাদী সংকল্প বাঙালী জাতিসত্ত্বার গভীরে আঘাত করতে পারেনি। সামরিক শাসনের পাঁচ বছরের মাথায় গ্রুপ থিয়েটারের একটি নির্দিষ্ট প্রবণতা লক্ষ করা যায়। যার পথ ধরে ১৯৮০ সালে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত হয়।
আগামীদিনের নাটক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামীর নাটকে বৈশ্বিক পরিবর্তনের ভবিষৎবাণী হলো নাটকের যা কিছু আদি সংজ্ঞা আছে তার সলিলসমাধি অনিবার্য। আমাদের গ্রুপ থিয়েটার চর্চায় তেমনটি এখনও লক্ষ্য করা যায়নি। তবে পরিবর্তনের আভাস স্পষ্ট। বিশেষ করে গত ২০ বছরে আমাদের নাটকের স্বভাব বৈশিষ্ট্যে প্রতুলতা লক্ষ্য করা যায়। ফলে, নাটকের একরৈখিকতার বদলে বহুরৈখিক বিবর্তন আমাদের মঞ্চে দেখা গেছে। এগুলোর সবচাইতে স্পষ্ট দিল্লির এনএসডি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যতত্ত্বে শিক্ষাপ্রাপ্ত মানুষের ভেতর। যার প্রভাব পড়েছে বর্তমান তরুণ নাট্যমোদীদের মধ্যে।
অধ্যাপক সেলিম বলেন, বাংলাদেশের নাটকের প্রেক্ষাপটে আগামীতে যে বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে বলে মনে করি সেগুলো হলো- নারীবাদ বা সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অবস্থান, রাজনীতি, মৌলবাদ, পুরান-লোকগাথা-ক্লাসিকের আধুনিক ব্যাখ্যা এবং অবশ্যই অনুবাদ ও রূপান্তর। তবে আমাদের নাটকের ধারাবাহিকতায় অতীতের মতো ভবিষ্যতেও গ্রুপ থিয়েটার চৈতন্য প্রণোদনার কাজ করবে, যদিও পেশাদার নাট্যচর্চার স্থানও উন্মোচিত হবে। অনেকেই মনে করেন সরকারি প্রণোদনা অতি জরুরি। যদিও আমি মনে করি গ্রুপ থিয়েটার প্রণোদনাটি আমাদের অন্তর্গত ঐতিহ্যিক শক্তি।
স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী, নাট্যজন ড. ইনামুল হক, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৯
ডিএন/এফএম