ঢাকা: বাংলা কথাসাহিত্যে শওকত আলী এক প্রবাদ প্রতিম ব্যক্তিত্ব। ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি ইহলোক ত্যাগ করেন ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ খ্যাত এই লেখক।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘শওকত আলীর কথা সাহিত্য: সামাজিক স্মৃতি, স্বর, রূপান্তর’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস। আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ আজিজুল হক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
প্রধান অতিথি কে এম খালিদ বলেন, বাংলা কথাসাহিত্যের তিনটি আকর উপন্যাস হলো ‘উত্তরের খেপ’, ‘দক্ষিণায়নের দিন’ এবং ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’। এই উপন্যাসগুলোর মাধ্যমে বাংলা কথাসাহিত্যে শওকত আলী স্থায়ী আসন করে নিয়েছেন। পেশায় তিনি শিক্ষক হলেও নেশায় ছিলেন একজন প্রকৃত মানবতাবাদী ও সমাজ অনুসন্ধানী লেখক।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, বাংলা কথাসাহিত্যে শওকত আলী একটি নক্ষত্রবিন্দু। তার নাক্ষত্রিক অবস্থান যেমন ব্যাপ্ত তেমনি দীপ্তিময়। তার কথাসাহিত্যে আমরা নানা আয়তনে, কাঠামো এবং অবয়বে কল্পনার যে বিন্যাস লক্ষ্য করি, তা তার স্মৃতি-সিমুলেশনের শব্দরূপ।
আলোচনায় সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, শওকত আলী বরাবরই আধুনিক দৃষ্টিকোণ থেকে লিখতেন। কথাসাহিত্যে একটি দেশের সামাজিক অগ্রগতিসহ সামগ্রিক উন্নয়ন, মানুষের সুখ দুঃখের চিত্র তুলে ধরা হয়। সেদিক থেকে শওকত আলী ছিলেন একজন সার্থক ও সচেতন কথাসাহিত্যিক। তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত বাঙালির উথান-পতনকে তার লিখনিতে তুলে ধরেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শওকত আলী সাহিত্যিক হলেও ছিলেন একজন ভালো মানের দার্শনিক। তার চিন্তা-ভাবনায় ও প্রকাশের ভাষা ছিল মৌলিক। তিনি সমাজের শোষিত ও নিম্ন বর্গের মানুষের জীবনকে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি সবসময়য় মানুষের মুক্তির কথা বলতেন ও লিখতেন।
অনুষ্ঠানে এসময় অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জাকীর হোসেন, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবু বকর সিদ্দিক। আয়োজন সঞ্চালনা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
এইচএমএস/এইচএডি/