ঢাকা: আলোচনা, নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, প্রদর্শনী ও অ্যাক্রোবেটিকসহ বিভিন্ন মনোজ্ঞ আয়োজনে ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করলো সংস্কৃতিচর্চার জাতীয় প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করা হয়।
বিকেল ৪টায় জাতীয় চিত্রশালা ভবনের ২ ও ৩ নম্বর গ্যালারিতে শুরু হয় একাডেমির সব বিভাগ ও শাখার কার্যক্রমের সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী। এরপর সন্ধ্যা ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে আয়োজিত হয় আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।
একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন একাডেমির সচিব মো. নওসাদ হোসেন।
সভায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, একটি দেশ সংস্কৃতিতে যতো এগিয়ে, তারা ততো উন্নত। সেই জায়গা থেকে শিল্পকলা একাডেমি শুদ্ধ সংস্কৃতি চর্চার কাজটিই করে আসছে। সংস্কৃতি চর্চা জঙ্গিবাদ দূর করে। আমি দেশের তরুণদের বলবো, নিজেদের সংস্কৃতি চর্চার মধ্যে রাখতে। দেশে যে জঙ্গিবাদের উত্থান, মাথা উঁচু করে যে দুস্কৃতিকারীরা দাঁড়াতে চায়, সংস্কৃতির মাধ্যমে তাদের দূর করতে হবে।
আলোচনা পর্ব শেষে উদ্বোধনী পর্বের শুরুতেই যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘স্পন্দন’। এরপর ‘ধন্য মুজিব ধন্য’ এবং ‘আমরা নতুন যৌবনেরই দূত’ গান দু’টি সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করে শিল্পকলা একাডেমির শিশুশিল্পীরা। দেশের বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যগুরুরা সমবেতভাবে অংশ নেন কত্থক, ধামাইল, মনিপুরি, ওড়িশি, গৌড়ীয় ও ভরতনট্টমের ধ্রুপদীতে।
এসময় মঞ্চে আলো ছড়ান ফারহানা চৌধুরী বেবী, অনিক বোস, শহিদুল ইসলাম বাবু, স্মিতা দে, মুনমুন, নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ি, সাজু আহমেদ, ইমামা, দীপা খন্দকার, সেলিনা হক, সুলতানা হায়দার, তামান্না রহমান, সুব্রত, অর্থি, মিনু হক, বেনজীর সালাম, মৈত্রী সরকার ও জসিম, আফরিনা আফরোজ চৌধুরী লুবনা, শামীম, র্যাচেল প্রিয়াংকা, লাবনী, মৌসুমী, বেবি রোজারিও, বেলায়েত হোসেন ও সালমা বেগম মুন্নী। রায়বেশে নৃত্য পরিবেশন করেন ফেরদৌস, তুষার, মুননা, শাওন ও শরিফ।
‘এগিয়ে চল আবারও জয় বাংলা বলে, চলো নির্ভয়ে চলো লাল সবুজের পাল তুলে’ গানটির সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল 'নৃত্যাঞ্চল'। পরের পরিবেশনায় ‘মঙ্গল হোক এই শতকে’ গানটির সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন আয়োজনের তালিকায় থাকা সব নৃত্যশিল্পী। নাচের পর সঙ্গীতের সুর ও আবৃত্তির দীপ্ত উচ্চারণে মঞ্চে শিল্পের আলো ছড়ান দেশবরেণ্য শিল্পীরা। দিনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পর্ব ছিল অ্যাক্রোবেটিক। সাইকেল ব্যালেন্স, বাস্টেক ব্যালেন্স, রিং ড্যান্স, ক্যাপ ড্যান্স, হাই সাইকেল ব্যালেন্সসহ চোখ ধাঁধানো সব পরিবেশনা নিয়ে হাজির হয় শিল্পকলা একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক দল।
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টায় একই মঞ্চে থাকছে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আয়োজনের অংশ হিসেবে জাতীয় চিত্রশালা ভবনের ২ ও ৩ নম্বর গ্যালারিতে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে একাডেমির সব বিভাগ ও শাখার কার্যক্রমের সপ্তাহব্যাপী প্রদর্শনী।
দেশব্যাপী সংস্কৃতি চর্চার বিকাশ ও প্রসারে ১৯৭৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চারুকলা, নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র, সংগীত নৃত্য ও আবৃত্তি, গবেষণা ও প্রকাশনা, প্রশিক্ষণ ও প্রযোজনা এ ছয়টি বিভাগ নিয়ে পরিচালিত শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১
এইচএমএস/এসআই