ঢাকা: বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে যোগ দিয়েছেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আগামী তিন বছর একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
বুধবার (১৪ জুলাই) সকালে তিনি বাংলা একাডেমিতে আসেন। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে তিনি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেন।
বুধবার একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সেমিনার কক্ষে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে নবনিযুক্ত মহাপরিচালকে স্বাগত জানান একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমানসহ একাডেমির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলা একাডেমি প্রয়াত সভাপতি শামসুজ্জামান খান এবং প্রয়াত মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজীর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দায়িত্বগ্রহণের পর নবনিযুক্ত মহাপরিচালক কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মহান ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিসৌধ এবং শহীদ বুদ্ধিজীবী সমাধিফলকে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা, বহু ভাষাবিদ ও জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। সবশেষে আজিমপুর গোরস্থানে বাংলা একাডেমির প্রয়াত সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং প্রয়াত মহাপরিচালক কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করে নীরবতা পালন ও প্রার্থনা করা হয়।
এর আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে মুহম্মদ নূরুল হুদাকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলা একাডেমি আইন ২০১৩-এর ধারা-২৬ (২) এবং ধারা ২৬ (৩) অনুযায়ী প্রথিতযশা কবি মুহম্মদ নূরুল হুদাকে তিন বছরের জন্য বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হলো।
গত ২৪ মে কোলন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় বাংলা একাডেমির ডিজি হাবীবুল্লাহ সিরাজীর। এরপর থেকে একাডেমির সচিব এএইচএম লোকমান ভারপ্রাপ্ত ডিজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
১৯৪৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের পোকখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে অধ্যয়নের সময় সাহিত্য অঙ্গনে প্রভাব ফেলতে শুরু করেন তিনি। পরে বাংলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। কর্মজীবনে জার্মানি, জাপান, হাওয়াই, লন্ডন, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, বেইজিং, শ্রীলঙ্কা, তুরস্ক প্রভৃতি দেশে বিভিন্ন সেমিনারে অংশ নেন তিনি। পেয়েছেন নানা সম্মাননা।
বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৮ সালে তিনি পান বাংলা একাডেমি পুরস্কার। মুহম্মদ নূরুল হুদা কবিতার পাশাপাশি লিখেছেন উপন্যাস, ছোটগল্প, প্রবন্ধ, কাব্যনাট্য ও গান। তিনি ২০১৫ সালে পান একুশে পদক।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪১ ঘণ্টা, জুলাই ১৪, ২০২১
এইচএমএস/এএ