দ্য এন্ড অব সায়েন্স ফিকশন
এ কল্পনা নয়, আমাদের জীবন।
আমরা চরিত্র
যারা চাঁদে ঢুকে পড়েছি,
যারা তাদের কম্পিউটার থামাতে পারি না।
আমরা পৃথিবীকে নেই করে দিতে পারি
সাত দিনের মধ্যে।
দুপুরে দু’হাত থেমে যায়।
আমরা চিরকাল, হালকা, অ্যালুমিনিয়াম শরীরে
বেঁচে থাকতে শুরু করেছি,
আমাদের পিঠে নম্বর সিল মেরে।
আমরা আমাদের কথা ডায়াল করি মুজাকের মতো।
আমরা জলের ভিতর দিয়ে একে অপরের কথা শুনি।
এই ঘরানাটি মৃত। নতুন কিছু খুঁজে বের করুন।
একজন পুরুষ এবং একজন মহিলা, নগ্ন বাগানে,
এমন একটা শিশু যে পৃথিবীকে রক্ষা করবে,
একজন মানুষ যে তার বাবাকে
জ্বলন্ত শহর থেকে কাঁধে বয়ে নিয়ে গিয়ে উদ্ধার করবে।
একটা সুতোর গুটি উদ্ভাবন করুন
যা একজন বীরকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়,
একটি দ্বীপ খুঁজে বের করুন যেখানে নারীটাকে সে রেখে আসতে পারে
বিশ্বাসঘাতকতার পরও যে নারী তার জীবন বাঁচিয়েছে
ঘুমের ব্যাঘাত না ঘটিয়ে।
আমরা যেমন ছিলাম সেইভাবে আমাদের আবিষ্কার করো
আমাদের শরীর চকচক করে ওঠার আগে
আমরা রক্তপাত বন্ধ করেছি:
সেই মেষপালককে খুঁজে বের কর, যে দৈত্যকে হত্যা করে,
একটি মেয়ে যে গাছে জন্মায়,
একজন নারী যে তার অতীতে ঘুরে দাঁড়াতে অস্বীকার করে এবং লবণ হয়ে যায়,
একটি বালক যে তার ভাইয়ের জন্মগত অধিকার চুরি করে এবং একটি জাতির প্রধান হয়ে ওঠে।
খুঁজে বের করুন সত্যিকারের অশ্রু, কঠিন ভালোবাসা মৃদু-ভাষা, প্রাচীন শব্দ, ঘরজুড়ে
শিশুর টালমাটাল প্রথম পদক্ষেপ।
[The End of Science Fiction কবিতার অনুবাদ]
পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী লিসেল ম্যুলার (Lisel Mueller) ১৯২৪ সালে জার্মানির হামবুর্গ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ২০২০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারিতে নিউমোনিয়ায় মারা যান তিনি। শিক্ষক মা-বাবার মেয়ে, ম্যুলার এবং তার পরিবার ১৫ বছর বয়সে নাৎসি শাসন থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। তাঁরা আমেরিকায় অভিবাসী হন এবং মিডল-ওয়েস্টে বাস করতে শুরু করেন। ম্যুলার ইভান্সভিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, সেখানে তাঁর বাবা অধ্যাপনা করতেন। ম্যুলার ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর স্নাতক অধ্যয়ন সম্পন্ন করেন। তিনি সাহিত্য সমালোচক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়, এলমহার্স্ট কলেজ এবং গডার্ড কলেজে শিক্ষকতা করতেন।
ম্যুলার ‘Alive Together: New and Selected Poems’ গ্রন্থের জন্য ১৯৯৭ পুলিৎজার জিতেছেন। গ্রন্থটি ১৯৬৫ সালে তাঁর প্রথম কাব্যসংকলন ‘Dependencies’ প্রকাশের প্রায় তিন দশক পর প্রকাশিত হয়। অনূদিত কবিতাটি তাঁর এই গ্রন্থ থেকে নেওয়া। পুলিৎজার পুরস্কার প্রদানের সময় গ্রন্থটি সম্পর্কে বলা হয়, এ এমন একটা গ্রন্থ, যা পাঠককে আমন্ত্রণ জানায় তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে, যা তাঁর দুঃখ, কোমলতা, আকাঙ্ক্ষা ও শিল্পের উন্মোচন। তাঁর কাছে মৃত্যু যেন ‘কাঁচের দেয়ালে এক কঠিন, শুষ্ক আঘাত’।
অনুবাদকের পরিচিতি
জন্ম ৩০ জুন ১৯৬১ সালে। পৈত্রিক নিবাস যশোর। বর্তমান বসবাস ঢাকায়। পেশায় অর্থনীতিবিদ, একটি আন্তর্জাতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ৩৫টি দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এ পর্যন্ত নয়টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয় যৌথ কাব্যগ্রন্থ ‘পূর্ণ প্রাণ যাবো’। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ: কে ঘুমায় কে জাগে (১৯৯৪); রূপান্তরের গান (২০০৩); আপেলসূত্র (২০১৪) ও বৃষ্টি থামার অপেক্ষায় (২০২০)। এছাড়া ছোটদের জন্য চীনা গল্পের তিনটি অনুবাদ গ্রন্থও আছে। এগুলো প্রকাশিত হয় ২০০৪ সালে। বিদ্যাপ্রকাশ থেকে ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয় অনুবাদ কবিতার বই ‘বৃষ্টির ভেতর এক গলিপথ’।
বাংলাদেশ সময়: ১২১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২২
এমজেএফ