ঢাকা: মিনিয়েচার পেইন্টিং-এর আক্ষরিক অর্থ ক্ষুদ্র চিত্র, যা প্রাচীন যুগ থেকেই শক্তিশালী শিল্পমাধ্যম। শুরুর দিকে পারস্য প্রভাবিত থাকলেও পরবর্তীতে ভারতীয় শিল্পীরা তাদের নিজস্ব ভঙ্গি, বৈশিষ্ট্য এবং মৌলিকত্বে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছেন এই শিল্পে।
শনিবার (২০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডির গ্যালারি চিত্রেকে ২৫০টি ক্ষুদ্র চিত্র নিয়ে শুরু হয়েছে ১২ দিনব্যাপী ‘মাইক্রোটপিয়া ইন্টারন্যাশনাল আর্ট ফেস্ট ২০২১-২২। ’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন শিল্পী শিশির ভট্টাচার্য, শিল্পী মনিরুজ্জামান, শিল্পী রফিকুন নবী, শিল্পী রুহুল কবীর রুমি প্রমুখ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষে মুঘলদের হাত ধরে মিনিয়েচার পেইন্টিং শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আমি মনে করি, বাংলাদেশেও মিনিয়েচার আর্ট জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। আমি এ প্রচেষ্টার সাফল্য কামনা করি। এখানে দেশ-বিদেশের অনেক গুণী শিল্পীর মিনিয়েচার পেইন্টিং দেখে ভালো লাগছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ২০টি দেশের প্রায় ৪৫ জন শিল্পীর আঁকা ছবি এই প্রদর্শনীতে রয়েছে। শিল্পকর্মের অপূর্ব সমাবেশ ঘটেছে এই আর্ট ফেস্টে।
তিনি আরো বলেন, প্রতিটি ছবির মধ্যে শিল্পীর নিজের মনন, কল্পনা, তার সমাজের চিত্র, সময় ও দেশের ভাবনা প্রতিফলিত হয়। তাই দেশ-বিদেশের শিল্পীদের শিল্পকর্ম নিয়ে এই আয়োজনটি পরস্পরকে জানার ও বোঝার সুযোগ করে দিয়েছে। এতে শিল্পীরাসহ দর্শকরাও নিজেদের সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবেন। বিশ্বব্যাপী মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতার সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এ ধরনের আর্ট উৎসবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, ক্ষুদ্র চিত্রে শিল্পীরা ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের ভাবনা। এসব চিত্রে পরিবেশ, স্বপ্ন, প্রেম, দ্রোহ ও জীবন যেমন রয়েছে, তেমন উপস্থিতি রয়েছে করোনাকালীন সময়ের।
এ বিষয়ে শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, আমাদের এই প্রদর্শনীর জন্য ৪০০ শিল্পীর কাজ জমা পড়ে। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ১৭০ জন শিল্পীকে মনোনীত করা হয় এবং সবশেষ ২৫০টি শিল্পকর্ম নিয়ে প্রদর্শনী। চিত্র শিল্পের ক্ষুদ্র এই মাধ্যম ব্যবহার করে শিল্পীরা তাদের ভাবনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন রং তুলিতে। এই প্রদর্শনীটি শিল্পী খালিদ মাহমুদ মিঠুকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
উদ্বোধনী আয়োজনে নয়টি ক্যাটাগরিতে নয়জনকে পুরস্কৃত করা হয়। এর মধ্যে খালিদ মাহমুদ মিঠু স্মৃতি পুরস্কারে সুশান্ত কুমার, সম্মান সূচক পুরস্কারে শেখ রোকনুজ্জামান উজ্জ্বল, সঞ্জীব দত্ত এবং গ্র্যান্ড অ্যাওয়ার্ডে সৈয়দ তারেক রহমান বাংলাদেশ থেকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হন। বাকি পুরস্কার জয়ী বিদেশি শিল্পীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম আর্ট ক্লাব ও গ্যালারি চিত্রকের সমন্বয়ে ১২ দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিল্পী ও শিল্পানুরাগীদের জন্য প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২২
এইচএমএস/এনএসআর