ঢাকা: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামী ২২ শ্রাবণ (৬ আগস্ট)। কবির জন্মদিন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) অনলাইনে একক বক্তৃতানুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তৃতা দেন করেন বাংলা একাডেমির সচিব এ এইচ এম লোকমান। ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইংরেজি লেখা: পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফকরুল আলম। শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র-কবিতা আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী রূপা চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্রসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী সালমা আকবর।
এ এইচ এম লোকমান বলেন, বাংলাসাহিত্যের সকল শাখায় বিচরণ করে রবীন্দ্রনাথ আমাদের ঋদ্ধ করেছেন, ঋণী করেছেন। বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রকে রবীন্দ্রনাথ তার সৃষ্টির ঐশ্বর্যে আলোকিত করে রেখেছেন।
অধ্যাপক ফকরুল আলম বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ব-পাঠকের প্রতি খেয়াল রেখে মাতৃভাষা বাংলার মতো ইংরেজি রচনার জগতেও পরিভ্রমণ করেছেন। নিজের বেশ কিছু রচনার বাংলা ভাষ্যের পাশাপাশি ইংরেজি ভাষ্য যেমন তিনি প্রণয়ন করেছেন তেমনি ইংরেজিতে মৌলিক রচনা লিখেছেন, বক্তৃতাও দিয়েছেন। বাংলার মতো তার ইংরেজি রচনাও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত, ব্যক্তিত্ব-প্রকাশক।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ আমৃত্যু মানবতার সাধনা করেছেন। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, নানা জাতি-সম্প্রদায়ের বিচিত্র ভাষাভাষী মানুষের কাছে অনুবাদের মাধ্যমে যেমন তিনি পৌঁছেছেন তেমনি তাঁর নিজের ইংরেজি রচনার মানবতাবাদী মর্মবাণীও তাঁকে বৈশ্বিক মহিমা দান করেছে।
কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, মৃত্যুকে রবীন্দ্রনাথ আবিষ্কার করেছেন অমৃত করে। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন মহৎ মানবাত্মার কোনো বিলয় নেই। শাস্ত্রের দেবতার বাইরে গিয়ে প্রাণের দেবতার আরাধনা করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ যেমন সারাজীবন মানুষের অনিঃশেষ শুভ ক্ষমতার প্রতি আস্থাশীল ছিলেন তেমনি তার জীবনের শেষ অভিভাষণেও তিনি মানুষের প্রতি শর্তহীন বিশ্বাস স্থাপন করে গেছেন। আমাদের আনন্দ-বেদনায়, দুঃখে-হর্ষে, সংকটে, সংগ্রামে ও সংকল্পে এভাবেই রবীন্দ্রনাথকে আমরা আমাদের একান্ত আপন করে পাই, এভাবেই তিনি আমাদের ব্যক্তি ও সমষ্টিজীবনে চিরপ্রাসঙ্গিক।
কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে উঠে আন্তর্জাতিকতাবাদের সাধনার সূত্রে রবীন্দ্রনাথ আজ ও আগামীতে প্রাসঙ্গিক হয়ে রয়েছেন। তার প্রাসঙ্গিকতার বহু ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে শিক্ষাভাবনা ও পল্লী পুনর্গঠন- চিন্তা। রবীন্দ্রনাথ প্রকৃতিলগ্ন কবি ও ভাবুক কিন্তু একই সঙ্গে সভ্যতার বিকাশে প্রযুক্তির ভূমিকাকেও স্বাগত জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ