বাংলা ভাষায় বানান নিয়ে যেসব বিভ্রান্তি ও অনাচার চলছে তা ভাষার মর্যাদার জন্য যেমন ক্ষতিকর, তেমনি ভাষা ব্যবহারকারীদের জন্যও অমর্যাদাপূর্ণ ও বিব্রতকর। ভাষা ব্যবহারে অশুদ্ধির পেছনে অনেক কারণ রয়েছে।
বিশেষত বানান ভুলের ক্ষেত্রে অন্য যত কারণই থাকুক না কেন এগুলোর মূলে রয়েছে বানানের নিয়ম জানার ক্ষেত্রে আগ্রহ ও নিষ্ঠার অভাব। এটি ভাষার প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাবোধকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
বানানের অশুদ্ধি প্রধানত তিনটি কারণে ঘটে থাকে— ক. উচ্চারণ দোষে, খ. শব্দগঠন ত্রুটিতে এবং গ. শব্দের অর্থগত বিভ্রান্তিতে। এছাড়া, বহুবচনের দ্বিত্ব ব্যবহার, বিশেষ্য ও বিশেষণ সম্পর্কে ধারণার অভাব, শব্দকে বিনা প্রয়োজনে নারীবাচক করা ইত্যাদি কারণে শব্দের অপপ্রয়োগ ঘটে থাকে।
অনেকেই বলে থাকেন— বলার সময় আমরা যেভাবেই বলি না কেন, লেখার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। ‘বলার সময় আমরা যেভাবেই বলি না কেন’— এরূপ স্বাধীনতাও ভাষা ও বানানের শুদ্ধতার জন্য ক্ষতিকর। বস্তুত বলার সময়ও আমাদের সতর্ক হতে হবে। লেখার ক্ষেত্রে যদি আমরা পরিপূর্ণ শুদ্ধতা আশা করি, তাহলে বলার ক্ষেত্রেও আমাদের শুদ্ধতার খুব কাছাকাছিই পৌঁছতে হবে।
বানানের অশুদ্ধির প্রধান কারণগুলো এখন সংক্ষেপে আলোচনা করা যাক।
উচ্চারণ দোষে অশুদ্ধি:
বানানের অশুদ্ধির একটি প্রধান কারণ উচ্চারণ দোষ। আঞ্চলিক ভাষার উচ্চারণ প্রভাব থেকে অনেকেই মুক্ত হতে পারেন না, অন্যদিকে শব্দের শুদ্ধ উচ্চারণের প্রতি সতর্কও থাকেন না। এই উচ্চারণ বিকৃতির প্রভাবে বানানেও অশুদ্ধি ঘটে। যেমন— ‘অত্যধিক’ শব্দকে ‘অত্যাধিক’ লেখা, ‘অদ্যাপি’কে ‘অদ্যপি’ লেখা বা ‘অনটন’কে ‘অনাটন’ লেখার মূলে রয়েছে এগুলোকে পড়ার সময় অশুদ্ধভাবে উচ্চারণ করার প্রভাব। সাহিত্যে চলতি ভাষার ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে ভাষার লিখিত রূপে, বিশেষ করে বানানের ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়।
শব্দগঠন ত্রুটির জন্য অশুদ্ধি:
শব্দের গঠনরীতি সম্পর্কে অজ্ঞতার ফলে বানান-বিভ্রান্তি ঘটে থাকে। শুদ্ধ বানানের জন্য শব্দ বা পদগঠনের নিয়মাবলি জানা অপরিহার্য। তাই বানানের শুদ্ধ্যশুদ্ধি বিচারে ব্যাকরণের আলোচনা অপরিহার্য। এ অপরিহার্যতার কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। আমরা বিশেষ্য-বিশেষণকে যথাযথভাবে চিহ্নিত না করার কারণে বেশ কিছু বানান অহরহ ভুল করে থাকি। যেমন— ‘উৎকর্ষ’কে ‘উৎকর্ষতা’, ‘সখ্য’কে ‘সখ্যতা’, ‘সৌজন্য’কে ‘সৌজন্যতা’ লিখি। এভাবে ‘দরিদ্রতা’ বা ‘দারিদ্র্য’ এর পরিবর্তে ভুলভাবে ‘দারিদ্র্যতা’ লেখা হয়।
কারো মৃত্যুর পর শোকবার্তায় প্রায়শই বলা হয়— তার ‘বিদেহী’ আত্মার কল্যাণ কামনা করি। ‘বিদেহী’ একটি অশুদ্ধ শব্দ। ‘বিদেহ’ শব্দের অর্থ দেহশূন্য বা অশরীরী। বিদেহ শব্দটিই বিশেষণ, কাজেই এর শেষে ঈ-প্রত্যয় যোগে পুনরায় বিশেষণ করা ভুল। ‘উল্লেখিত’ শব্দটি ব্যাকরণ-সিদ্ধ নয়। অভিধানেও নেই। শুদ্ধ হলো উল্লিখিত। শব্দটি সন্ধির নিয়মে গঠিত (উল্লিখিত = উৎ + লিখিত)।
শব্দের অর্থগত বিভ্রান্তিতে অশুদ্ধি:
শব্দের যথাযথ অর্থ সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান না থাকার কারণেও সঠিক শব্দ প্রয়োগে বিভ্রান্তি ঘটে থাকে। নিমন্ত্রণপত্রে প্রায়শই লেখা হয়— ‘আপনি স্বপরিবার আমন্ত্রিত’। এখানে ‘স্বপরিবার’ শব্দটি একটি ভুল প্রয়োগ। সঠিক প্রয়োগ হবে— ‘আপনি সপরিবার আমন্ত্রিত’। লক্ষণীয় ‘স্বপরিবার’ অর্থ নিজ পরিবার, আর ‘সপরিবার’ অর্থ পরিবারসহ। এখানে কার্যত পরিবারসহ অর্থাৎ পরিবারের অন্য সদস্যদের সহকারে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। তবে বাংলায় ক্রিয়া-বিশেষণরূপে ‘সপরিবারে’ ব্যাকরণসম্মত না হলেও প্রচলিত।
বিভিন্ন স্থানে রাস্তার নামে ‘স্মরণী’ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ‘সরণি’ শব্দের অর্থ রাস্তা। কাজেই বিভিন্ন ব্যক্তির স্মরণে রাস্তার নাম করতে হলে লিখতে হবে— শহিদ তাজউদ্দিন সরণি, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণি, নজরুল সরণি, ইত্যাদি।
‘উদ্দেশ’ এবং ‘উদ্দেশ্য’ শব্দ দুটি ব্যবহারে অনেক সময় বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। ‘উদ্দেশ’ শব্দের অর্থ গন্তব্য, খোঁজ ইত্যাদি। অন্যদিকে, উদ্দেশ্য শব্দের অর্থ অভিপ্রায়, মতলব, তাৎপর্য, প্রয়োজন ইত্যাদি। প্রধানমন্ত্রী গত সন্ধ্যায় লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন। — এখানে ‘উদ্দেশ্যে’ নয় ‘উদ্দেশে’ লিখতে হবে। কোন উদ্দেশে এখানে ঘুরঘুর করছ?— এখানে ‘উদ্দেশে’ নয় ‘উদ্দেশ্যে’ লিখতে হবে।
ফতোয়া ও ফতুয়া এই দুয়ের গোলমাল কথ্য ও লেখ্য উভয় ক্ষেত্রেই ঘটে। ফতোয়া হচ্ছে ইসলাম ধর্মশাস্ত্র-সম্মত সিদ্ধান্ত বা রায়। আর ফতুয়া গায়ে পরার জামাবিশেষ। প্রায়শই এ দুটির একটির স্থলে অন্যটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
স্বাক্ষর ও সাক্ষর নিয়েও বিড়ম্বনা কম নয়। ‘স্ব’ মানে ‘নিজ’ আর ‘স’ মানে ‘সাথে’ বা ‘সহিত’। অতএব, ‘দস্তখত’ বা ‘সই’ বা নিজ চিহ্ন-সংকেত বোঝাতে ‘স্বাক্ষর’ হবে আর অক্ষর জ্ঞান আছে এ রকম বোঝাতে হবে ‘সাক্ষর’। এভাবে, সংখ্যার পরিমাণ বুঝাতে ‘লক্ষ’, আর উদ্দেশ্য অর্থে হবে ‘লক্ষ্য’। আবার ক্রিয়াপদ হিসেবে ‘লক্ষ করা’ অর্থ দেখা এবং ‘লক্ষ্য করা’ অর্থ লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হিসেবে চিহ্নিত করা। ‘এমনই’ অর্থ এতই, এই পরিমাণ, এই রকম। আর ‘এমনি’ অর্থ অকারণে। যেমন— ক. ঐশী এমনই বখে গিয়েছিল যে সে মা-বাবাকে হত্যা করলো। খ. সব কিছু কি এমনি এমনি হয়?
বাহুল্যজনিত অশুদ্ধি:
স্বাস্থ্য, স্বাগত, স্বাগতম এসব শব্দের মধ্যে ‘সু’ বা ভালো অর্থ নিহিত আছে। কাজেই এগুলোর আগে আরেকবার ‘সু’ লাগিয়ে সুস্বাস্থ্য, সুস্বাগত বা সুস্বাগতম করা বাহল্যজনিত অশুদ্ধি। ‘অশ্রুজল’ একটি অশুদ্ধ শব্দ, কেননা অশ্রু শব্দের অর্থ চোখের জল, অশ্রু’র সাথে জল যোগ করলে তা হবে বাহুল্য। অশ্রুজল শব্দে এ বাহুল্য ব্যবহারের জন্য বাঙালিরা সম্ভবত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর দ্বারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে। কাব্য, গান, গদ্য সর্বত্রই তিনি নির্বিচারে এ অশুদ্ধ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। যেমন— ‘তারি লাগি যত ফেলেছি অশ্রুজল’ অথবা ‘কিন্তু অশ্রুজল ভর্ৎসনা মানিলো না’, ‘দুই নেত্র পল্লব হইতে টপ টপ করিয়া অশ্রুজল পড়িতে লাগিল’, ইত্যাদি।
বহুবচনের দ্বিত্ব ব্যবহার আরেকটি বহুল ব্যবহৃত বাহুল্যজনিত অশুদ্ধি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ তার এক সাম্প্রতিক লেখায় এ বিষয়ে মন্তব্য করেন: ‘কোন লেখক এ ত্রুটি থেকে মুক্ত তা খুঁজে বের করাও প্রায় দুরূহ হয়ে ওঠে। ’ সব প্রকাশ মাধ্যমগুলো, সকল সংস্থাসমূহ, সব ছাত্ররা, দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলাসমূহে ইত্যাদি লেখা আমরা যেখানে সেখানে দেখতে পাই। এগুলোর শুদ্ধ প্রয়োগ হবে— সব প্রকাশ মাধ্যম অথবা প্রকাশ মাধ্যমগুলো, সকল সংস্থা অথবা সংস্থাসমূহ, সব ছাত্র অথবা ছাত্ররা, দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলায় অথবা দক্ষিণাঞ্চলের জেলাসমূহে।
কেবলমাত্র, শুধুমাত্র এগুলোও বাহুল্য দোষে অশুদ্ধ। শুদ্ধপ্রয়োগ হবে— কেবল বা মাত্র বা শুধু।
শব্দ-সংক্ষেপে অশুদ্ধি:
শব্দ-সংক্ষেপ করার জন্য আগে বিসর্গ এবং অনুস্বার ব্যবহার করা হতো। আমরা এখনো নামের আগে উত্তরাধিকার সূত্রে মোহাম্মদ এর সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে ব্যবহার করে আসছি ‘মোঃ’ অথবা ‘মো:’। এখানে বিসর্গ (ঃ) হচ্ছে একটি পৃথক বর্ণ এবং কোলন (:) হচ্ছে একটি বিরাম চিহ্ন, কাজেই এগুলোর কোনোটিই শব্দ সংক্ষেপে ব্যবহৃত হওয়া সমীচীন নয়। প্রমিত বানানে শব্দ-সংক্ষেপ করার ক্ষেত্রে কেবল বিন্দু বা ডট (.) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। কাজেই অনুরূপ অন্যান্য শব্দ-সংক্ষেপ সা., ডা., ড., কি.মি., ইত্যাদি হবে।
পৃথক শব্দ একত্রীকরণ এবং একক শব্দ পৃথকীকরণ:
আমরা অনেক সময় দুটি ভিন্ন শব্দকে একত্রে লিখে অথবা একক শব্দকে আলাদা করে লিখে শব্দের অশুদ্ধ প্রয়োগ করি। যেমন— ‘না’ একটি পৃথক শব্দ, তাই ক্রিয়াপদের সাথে এ শব্দটি একত্রে লেখা অশুদ্ধ। লিখতে হবে ‘চলে না’, ‘চলি না’, ‘বলি না, ইত্যাদি। আবার ‘নি’ কিন্তু পৃথক শব্দ নয়, এটি একান্তভাবেই পরাশ্রিত। এই পরনির্ভরতার কারণেই ‘নি’-কে পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া উচিত। লেখা উচিত ‘করিনি’, ‘বলিনি’, ইত্যাদি। -যুক্ত, -মুক্ত, -ভাবে, -গুলো, -গুলি, -সমূহ এগুলো বিভক্তি হিসেবে শব্দের সাথে একত্রে লিখতে হবে। তবে যুক্ত করা, মুক্ত করা, সে ভাবে আছে ইত্যাদি ক্ষেত্রে ‘যুক্ত’, ‘মুক্ত’, ‘ভাবে’ আলাদা শব্দ।
কিছু কিছু শব্দযুগল আছে যেগুলো একত্রে লিখলে এক অর্থ এবং আলাদাভাবে লিখলে অন্য অর্থ প্রকাশ করে। যেমন— ‘এক রকম’ (পৃথক শব্দ)— একই ধরনের বা এক ধরনের, ‘একরকম’ (একক শব্দ)— প্রায়ই, কোনোভাবে; ‘তার মধ্যে’ (পৃথক শব্দ)— কোনো কিছুর অভ্যন্তরে, তারমধ্যে (একক শব্দ)— অন্তর্বর্তী সময়ের মধ্যে।
অহেতুক স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যবহার:
দাপ্তরিক বা পেশাগত পদের ক্ষেত্রে অহেতুক স্ত্রীবাচক শব্দ ব্যবহার করা ঠিক নয়। পদ যেখানে প্রধান শিক্ষক, প্রভাষক, অধ্যাপক, সদস্য, লেখক সেখানে অনর্থক সমস্যা তৈরি করে ‘প্রধান শিক্ষিকা’, ‘প্রভাষিকা’, ‘অধ্যাপিকা’, ‘সদস্যা’, ‘লেখিকা’ ইত্যাদি লেখা পরিহার করতে হবে।
প্রথাগত অভ্যাস:
বিশ্ববিদ্যালয় বা মহিলা কলেজ বললে অচেনা-অজানা মনে হয়; কিন্তু ইউনিভার্সিটি/ভার্সিটি বা গার্লস কলেজ বললে রিকশাওয়ালাও দ্রুত চেনে। খাঁটি বাংলায় জল বা ঈশ্বর বললে আমরা বুঝি হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। আমাদের এই প্রথাগত সমস্যার কারণ হলো বাংলাভাষা ও ব্যাকরণ সম্পর্কে না জানা। একই উচ্চারণে ন-ণ, শ-ষ-স, ই-য়, ত-ৎ, ই-ঈ, উ-ঊ, ছ-স একাধিক বর্ণ থাকাও আমাদের প্রথাগত সমস্যাকে প্রকট করেছে। অনেক শব্দ তো ব্যাকরণের নিয়মে অশুদ্ধ হলেও বহুল প্রচলনের জন্য স্বীকৃত শব্দের মর্যাদা পেয়ে গেছে। যেমন— ব্যাকরণ অনুসারে শুদ্ধ শব্দ ইতোমধ্যে, কিন্তু ইতিমধ্যে বলতে বলতে বাংলাভাষী মানুষ এত অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে যে এর শুদ্ধি-অশুদ্ধি নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করা অর্থহীন— এরূপ মন্তব্য করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
শোনা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের সময় বানান ভুলের জন্য নম্বর না কাটার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনেক শিক্ষক ও ভাষার শুদ্ধতা বিষয়ে চিন্তাশীল লেখকের মতে, এরূপ নির্দেশনার অর্থ বানান ভুলভাবে লেখার প্রতি অনুমোদন দেওয়া এবং বানানের শুদ্ধতা একটি গুরুত্বহীন বিষয় বলে উপস্থাপন করা। কর্তৃপক্ষের এরূপ নির্দেশনার মধ্যেও আমাদের প্রথাগত অভ্যাসের সুস্পষ্ট ছাপ পাওয়া যায়।
অনেকেই বাংলা একাডেমির বারংবার পরিবর্তিত নির্দেশনাকেও বানানের বিড়ম্বনার জন্য বিশেষভাবে দায়ী করে থাকেন। ভাষা আন্দোলনের এত বছর পর এসে এই তো সেদিন ‘বাংলা একাডেমী’ ‘বাংলা একাডেমি’ হলো।
শেষ কথা:
বানান ভুল পরিহার করার ব্যাপারটি প্রায় পুরোপুরিই ব্যক্তিগত শিক্ষা ও আয়ত্তের ব্যাপার। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টার মাধ্যমে নিজের ভুল বানানগুলো খেয়াল করে দক্ষতা ও উৎকর্ষ অর্জন করতে হয়। ভাষা শুদ্ধ করে লেখার জন্য দরকার সামান্য আগ্রহ ও একটু মমতা। অনেক ক্ষেত্রে বানান ভুলের কারণ অজ্ঞতা নয়, অসাবধানতা ও অমনোযোগিতা। তাই ভুল পরিহারের জন্য লেখা শেষ করার পর ধীরে-সুস্থে আবার তা পড়ে দেখা উচিত। বানান শুদ্ধ আছে কি না সে সম্পর্কে সন্দেহপ্রবণতা বানান দক্ষতা অর্জনে ভালো কাজ দেয়। কোনো শব্দের বানান নিয়ে সন্দেহ হলে চট করে অভিধানের সঙ্গে তা মিলিয়ে নেয়া প্রয়োজন। সন্দেহ হলেই আলসেমি কিংবা অনুমানের ওপর নির্ভর না করে সঙ্গে সঙ্গে অভিধান দেখে বানান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এভাবে অভিধান দেখতে দেখতে একসময় বানানে দক্ষ হয়ে ওঠা যাবে।
লেখক: মুন্সী জালাল উদ্দিন
বাংলাদেশ সময়: ০৮০১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২১, ২০২২
এসআই