ঢাকা: রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) জমে উঠেছে এশীয় পর্যটনমেলা। আগ্রহী ভ্রমণপিপাসুদের পদভারে মুখর আয়োজনস্থল।
মেলার দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আইসিসিবিতে দেখা যায়, দর্শনার্থীরা লাইন ধরে মেলায় প্রবেশ করছেন। স্টলে স্টলে গিয়ে আগতরা নতুন পর্যটন স্পট ও ভ্রমণ প্যাকেজের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় পর্যটন বিচিত্রার আয়োজনে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দিক-নির্দেশনায় বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, ট্যুরিস্ট পুলিশের সহযোগিতায় এই মেলা হচ্ছে। এবারের পর্যটন মেলার প্রতিপ্রাদ্য ঠিক করা হয়েছে, ‘খুলবে পর্যটনের দুয়ার-এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার’।
মেলার সংগঠকরা বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় দেশের পর্যটনে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছিল। এই মেলার মাধ্যমে তা কাটিয়ে উঠে আবারও পর্যটনশিল্পে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরুক।
মেলার এবারের অন্যতম আকর্ষণ হোটেল, রিসোর্ট ও ট্রান্সপোর্ট শিল্পের দেশি-বিদেশি সেবাগ্রহীতা ও সেবাদাতাদের সম্মিলন। বিদেশি পর্যটনশিল্পের উদ্যোক্তারা যেমন বাংলাদেশের ট্যুরিস্ট স্পট, ফ্লাইট ও ট্রান্সপোর্টের খোঁজখবর নিচ্ছেন, আবার বাংলাদেশিরাও নেপাল, শ্রীলঙ্কা, চীন, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোর ট্যুরিস্ট স্পট, এয়ার টিকেট ও ট্রান্সপোর্টের খোঁজখবর নিচ্ছেন।
মেলায় বাংলাদেশের কক্সবাজারের হোটেল-রিসোর্টের শেয়ার বিক্রির স্টলগুলোও বেশ জমে উঠেছে। দর্শনার্থীরা খুব আগ্রহভরে এসব স্টল ঘুরে ঘুরে দেখছেন, খোঁজ-খবর নিচ্ছেন হোটেল ও রিসোর্টের শেয়ারের।
মেলায় অংশগ্রহণকারী ম্যানগ্রোভ হোটলে অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের কর্মকর্তা হাসিবুল আলম বলেন, মেলা এখন জমজমাট। বিভিন্ন দেশের ট্যুরিস্ট-উদ্যোক্তারা আসছেন, এর মাধ্যমে অভিজ্ঞতা বিনিময় করছি। বিদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন আমাদের সম্পর্কে জানছে, আমরাও তাদের সম্পর্কে জানতে পারছি।
মেলা নিয়ে একই প্রতিক্রিয়া জানান গোল্ডস্যান্ডস হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের জেনারেল ম্যানেজার মুহিব আহমেদ। প্রতিষ্ঠানটির স্টলে ট্যুরিস্টদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
মেলায় কথা হচ্ছিল আম্মার আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এবার মেলায় এসেছি প্যাকেজ জানার জন্য। পাশাপাশি নতুন কোন দেশ মেলায় অংশ নিচ্ছে, তাদের দেশে ট্যুরিস্ট স্পটে কী কী দেখার মতো আছে তা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।
এবারের মেলায় বাংলাদেশের পাশাপাশি মালদ্বীপ, চীন, ফিলিপাইন, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, ভুটান ও সিঙ্গাপুরের ১০৮টি পর্যটন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। যেখানে তারা তুলে ধরছে আসন্ন পর্যটন মৌসুমে বেড়ানোর বিভিন্ন আকর্ষণীয় অফার, হোটেল, রিসোর্ট বা প্যাকেজ বুকিংসহ বিশেষ ছাড়ের কথা। মেলায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, ক্রুজলাইন্স, এয়ারলাইন্স, ট্যুর অপারেটর ও থিমপার্কসহ অনেক প্রতিষ্ঠান।
আয়োজক জায়েদ খান খালেদ বলেন, মেলায় বৈচিত্র্যময় আয়োজনে থাকছে পর্যটনবিষয়ক সেমিনার, শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিজনেস টু বিজনেস (বিটুবি) মিটিং।
মেলার প্রতিদিন সন্ধ্যায় থাকবে চীন, ফিলিপাইন ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এই মেলার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র দর্শনার্থীদের মাঝে তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৪
জেডএ/এইচএ/