ঢাকা: ফের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) একক পদে লোক খুঁজছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। বর্তমান ব্রিটিশ এমডি কাইল হেইডের কাজে যোগদানের পর বছর না ঘুরতেই নতুন এমডির খোঁজে নেমেছে রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগেও মাত্র এক বছর দায়িত্ব পালন করে ২০১৪’র গোড়ার দিকে বিমান ছাড়েন আরেক ব্রিটিশ এমডি কেভিন স্টিল। রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন, আর তা পূরণে নানা উদ্যোগ থাকলেও তার বাস্তবায়নে দক্ষ এমডি মিলছে না। বিমানের জন্য নতুন এমডি খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ায় সে ধারণা আরও স্পষ্ট হলো।
২৪ নভেম্বর (মঙ্গলবার) একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞাপন দিয়ে বিমানের জন্য নতুন এমডি ও সিইও খোঁজার ঘোষণা দেওয়া হয়। এবারের বিজ্ঞাপনে দেশি ও বিদেশি যে কেউ শর্তপূরণ সাপেক্ষে এই পদের জন্য দরখাস্ত করতে পারবেন। সংশ্লিষ্টদের মতে, এবারেও মূলত বিদেশি এমডি-ই খুঁজছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
শর্তে বলা হয়েছে নয়া এমডির বয়স হতে হবে ৪০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। তবে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার আলোকে এই বয়ঃসীমা শিথিলযোগ্য।
আর বিমান চলাচল সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ২০ বছরের যার মধ্যে অন্তত ১০ বছর উর্ধ্বতন কোনও পদে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এয়ারলাইন্স মার্কেটিংয়ে বিস্তারিত জ্ঞান ও ধারনা থাকতে হবে যার মধ্যে গুরুত্বপাবে কোডশেয়ার, নতুন অনলাইন ডিস্ট্রিবিউশন প্রযুক্তি ও রেভিনিউ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
বিমান চলাচল ও শ্রম আইন সম্পর্কিত ধারনা থাকতে হবে বলেই শর্ত দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞাপনে। ধারনা করা হচ্ছে সিবিএ আন্দোলন নিয়ে বিমানকে প্রায়শঃই যেভাবে বেকায়দায় পড়তে হয় তারই সমাধানের লক্ষ্যে এ শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে।
এছাড়াও বিমানের শর্তের মধ্যে রয়েছে অন্য এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তির দক্ষতা ও যোগ্যতা।
২২ ডিসেম্বরের মধ্যে বিমানের মানবসম্পদ বিভাগে এই আবেদন পাঠাতে হবে।
এর আগে গত ৫ জানুয়ারি ব্রিটিশ নাগরিক কাইল হেইউড বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে যোগ দেন। ওই দিন বিমানের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় বাণিজ্যিক বিমান পেশায় দক্ষ ও অভিজ্ঞ কাইল হেইউড তার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন। তবে কাইল হেউডকে বিমানে নিয়োগ দেওয়া হয় তার আগের বছর ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। বিমানে যোগ দেওয়ার আগে কেইল আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন বিমানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন।
আর তারও আগে ২০১৪ সালের মার্চের শেষভাগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে পদত্যাগ করেন কেভিন জন স্টিল। স্বাস্থ্যগত কারণে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের ‘চাপ’ নিতে পারছিলেন না, এ কারণে পদত্যাগ করেছেন জানালেও কেভিনের দক্ষতা নিয়ে নানা প্রশ্ন, স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ ও প্রতিবাদের মুখেই ছিলো তার বিমান ছেড়ে যাওয়া।
ওই বছরের ১৭ এপ্রিল শেষ কর্মদিবস হওয়ার কথা থাকলেও আগেই পদত্যাগের ঘোষণা দেন কেভিন। তিনি যোগ দিয়েছিলেন ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ তারিখে।
যোগদানের পর দুই বছরের মধ্যে বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ঘোষণা দিলেও এক বছরের মাথায় পদ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন কেভিন স্টিল।
আর এক বছর না ঘুরতেই সরে যাচ্ছেন কাইল হেউড। নতুন এমডি কে হচ্ছেন? দেশি না বিদেশি কেউ? আর তিনিই কি করতে পারবেন জাতীয় পতাকাবাহী রাষ্ট্রায়ত্ত এই প্রতিষ্ঠানটির জন্য এখন তারই অপেক্ষা।
বাংলাদেশ সময় ১৪০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৫
এমএমকে