ঢাকা: বাজেট এয়ারলাইন্স হিসেবে পরিচিত হলেও বাড়তি ভাড়া আদায় করছে এয়ার এশিয়ার বাংলাদেশ জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) টোটাল এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেড (তাস)।
এয়ার এশিয়ার স্থায়ী আবাস কুয়ালালামপুর থেকে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে দূরত্ব অনুযায়ী যে ভাড়া হয়, ঢাকা থেকে সেই ভাড়া কয়েকগুণ বেশি।
ঢাকার নিকটবর্তী শহর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতায় রয়েছে এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট।
বিশ্লেষণে দেখা যায়, কলকাতা থেকে কুয়ালালামপুরের আকাশপথে দূরত্ব ২ হাজার ৬৬২ কিলোমিটার। ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরের দূরত্ব ২ হাজার ৫৯১ কিলোমিটার। অথচ কুয়ালালামপুর যেতে হলে কলকাতার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া গুণতে হচ্ছে ঢাকা থেকে যাওয়া এয়ার এশিয়ার যাত্রীদের। এয়ার এশিয়ায় অন্যান্য রুটে চলা যাত্রীরা বলছেন, দূরত্ব ও সময়ের তুলনায় ঢাকা রুটে যে ভাড়া দিতে হচ্ছে সেটা রাক্ষুসে ভাড়া।
এয়ার এশিয়ার অনলাইন বুকিংয়ে দেখা যায়, দুই মাস পর আগামী ৭ ডিসেম্বরও যদি কুয়ালালামপুর যাত্রার টিকেট কেনা হয়, তার দাম পড়ে ২২৫ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১৭ হাজার ৭৭৫ টাকা (প্রতি ডলারে ৭৯ টাকা হিসেবে)।
একই দিনে যদি কলকাতা থেকে কুয়ালালামপুরে যাত্রার টিকেট বুকিং দেয়া হয় তার ভাড়া পড়ছে ৬ হাজার ৬৯৯ রুপি। যা বাংলাদেশি টাকায় ৮ হাজার ৩৮ টাকা (১ রুপিতে ১ টাকা ২০ পয়সা হিসেবে)। অর্থাৎ ঢাকা থেকে ভাড়া ৯ হাজার ৭৩৭ টাকা বেশি। এটাকে এয়ার এশিয়ার ঢাকা জিএসএ তাস এয়ারলাইন্সের জোচ্চুরি হিসেবেই দেখছেন যাত্রীরা।
আবার ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের তিনদিন আগে বেড়ে যাচ্ছে বুকিংয়ের খরচ। ২২ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে কুয়ালালামপুরে এয়ার এশিয়ার বুকিং খরচ পড়বে ১১ হাজার ৪৯৯ রুপি, যা বাংলাদেশি টাকায় ১৩ হাজার ৮০০ টাকা। আর ঢাকা থেকে এই খরচ ২৫২ ডলার অর্থাৎ ১৯ হাজার ৯০৮ টাকা।
কুয়ালালামপুরের ব্যবসায়ী মাকসুদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমি কুয়ালালামপুরসহ মালয়েশিয়ার বিভিন্ন এয়ারপোর্ট থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করি। কিন্তু ঢাকা রুটের মতো কোন খরচ আর কোথাও নেই।
নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বো থেকে কুয়ালালামপুরে আসতে খরচ হয় ৮ হাজার ৫৯৯ রুপি। যা বাংলাদেশি টাকায় ৪ হাজার ৫৫৮ টাকা (১ শ্রীলংকান রুপিতে বাংলাদেশি ৫৩ পয়সা হিসেবে)। অন্য দেশগুলো থেকেও কুয়ালালামপুর আসতে কম খরচ হয়। আর এ কারণেই এই এয়ারলাইন্সকে বাজেট এয়ারলাইন্স বলা হয়ে থাকে। অথচ ঢাকা থেকে ১৭-১৮ হাজার টাকার নিচে মালয়েশিয়া আসা যায় না এয়ার এশিয়ায়। এর জন্যে জিএসএ তাস লিমিটেডকেই দায়ী করেন তিনি।
সর্বনিম্ন ভাড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৫ সালের ১০ জুলাই ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে এয়ার এশিয়ার যাত্রা শুরু করে তাস লিমিটেড। কিন্তু এয়ারপোর্টে অব্যবস্থাপনা, যাত্রীদের সঙ্গে তাস লিমিটেডের কর্মীদের দুর্ব্যবহার ছাড়াও ফ্লাইট বিলম্বের অভিযোগে বারবার সমালোচনার মুখে পড়ে এয়ারলাইন্সটি।
এ বিষয়ে তাস লিমিটেডের এয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান কে এম মজিবুল হকের নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে ২০১৫ সালে এয়ার এশিয়ার যাত্রা শুরুর পূর্বে এক সংবাদ সম্মেলনে মুজিবুল হক বলেছিলেন, ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনাল খরচ বেশি হওয়ার কারণেই বাজেট এয়ারলাইন্সের খরচে যাত্রী বহন করতে পারছে না এয়ার এশিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৬
আরআই