ঢাকা: এয়ার এশিয়ার ফ্লাইট থেকে নামার পর পরই বাংলাদেশি যাত্রীরা হয়রানির শিকার হন। এমনকি অনেককেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় দেশে।
এর আগে, মালিন্দো ও এয়ার এশিয়া এই বিমানবন্দরে ডিপারচার করতো। বাংলাদেশ বিমান, মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স, রিজেন্ট এয়ারলাইন্সের ডিপারচার হয় কেএলআইএ-১ এয়ারপোর্টে। তবে গত মার্চ মাস থেকে মালিন্দো এয়ারলাইন্সও কেএলআইএ-১ এয়ারপোর্টে তাদের ডিপারচার স্থানান্তর করেছে। এখন ঢাকা থেকে শুধু এয়ার এশিয়া কেএলআইএ-২ এয়ারপোর্টে ডিপারচার করে।
ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুটে এয়ার এশিয়ার যাত্রীদের প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে কুয়ালালামপুরের কেএলআইএ-২ এয়ারপোর্টে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষের হেয়ালির কারণেই এ দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে যাত্রীদের।
প্রতিরাত ১২টা ২৫ মিনিটে ঢাকার শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে ছাড়ে এয়ার এশিয়া। মালয়েশিয়া সময় সকাল ৬টা ২৫ মিনিটে কেএলআইএ-২ এয়ারপোর্টে অবতরণ করে ফ্লাইটটি।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রুহুল আমিন এয়ার এশিয়ায় মালয়েশিয়ায় ভ্রমণের দুঃসহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ভোরে কেএলআইএ-২ এয়ারপোর্টে নামি। কিন্তু ফ্লাইট থেকে নামতে দেরি, ইমিগ্রেশন পুলিশ ধরতে দেরি নেই। এয়ার এশিয়ায় যেসব যাত্রী ঢাকা থেকে আসেন, তাদের ইমিগ্রেশন ডেস্কে যাওয়ার আগেই পাকড়াও করে ইমিগ্রেশন পুলিশ।
এ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, আমার অফিসের জুনিয়রদের সামনেই আমাকে হেনস্তা করা হয়। লাইন ধরে আমাদের বিশেষ ইমিগ্রেশন কাউন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মায়ানমার ও ভিয়েতনাম এবং আফ্রিকা অঞ্চলের যাত্রীরা ছিলেন। সেখানে লম্বা লাইন দেখে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ফ্লোরে বসার জন্য। বসতে হয়েছে।
আরেক যাত্রী ইসজাক বলেন, ভোরে কুয়ালালামপুরে ফ্লাইট থেকে নেমে ইমিগ্রেশন ডেস্কের দিকে যাচ্ছিলাম। এর আগেই ইমিগ্রেশন পুলিশ দাঁড় করিয়ে জানতে চান, কোন ফ্লাইটে এসেছি। এয়ার এশিয়ায় ঢাকা থেকে এসেছি বলতেই শ্রমিকদের একটি লাইনে দাঁড় করিয়ে দেন। এয়ার এশিয়ার ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কুয়ালালামপুরে নামা অনেক যাত্রীকে পুনরায় ঢাকা ফেরত পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ইমিগ্রেশনে নানা ধরনের অপমানজনক প্রশ্ন করছিল। মনে হচ্ছিল, আমি সেখানে কাজ করতে যাচ্ছি। এয়ার এশিয়া থেকে নামলেই সেখানকার ইমিগ্রেশন পুলিশ ভাবে, শ্রমিকরা এসেছেন। ট্যুরিস্ট ভিসার যাত্রীদেরও একইরকম ভাবে। তাদের ধারণা, এয়ার এশিয়ায় যে যাত্রীরা ট্যুরিস্ট ভিসায় মালয়েশিয়া ঢুকছে, তারা আর দেশে ফিরবেন না। অথচ কেএলআইএ-১ এয়ারপোর্টে কিন্তু এ ঝামেলা নেই। সেখানে ঢাকা থেকে অন্য বিমানগুলো নামে, তেমন কোনো ঝামেলাই পোহাতে হয় না।
রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি ট্রাভেল এজেন্সির পরিচালক বলেন, আমরা এখন এয়ার এশিয়ার টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। শুধু এয়ারপোর্টের ঝামেলাই নয়, যাত্রীদের সঙ্গে এয়ার হোস্টেসদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। এয়ার এশিয়া থেকে ফ্লাইট করা অনেক যাত্রীকেই ফেরত পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, এয়ার এশিয়া একটি বাজেট ক্যারিয়ার। সেখানে খাবার দেওয়া হয় না যাত্রীদের। একটি ছোট পানির বোতল কিনতে হয় ১শ টাকা দিয়ে।
এছাড়াও বাংলাদেশে নিম্নমানের বিমান পরিচালনা করে এয়ার এশিয়া। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, যাত্রীদের কাছ থেকে এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে, ভেতরে যাত্রীর মাথায় এসির পানি পড়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৬
এমএন/এসএনএস