ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

‘বিভ্রান্তি ছড়াবেন না, দেশীয় এয়ারলাইন্সের পাশে দাঁড়ান’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
‘বিভ্রান্তি ছড়াবেন না, দেশীয় এয়ারলাইন্সের পাশে দাঁড়ান’ প্লেন দুর্ঘটনার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন ইউএস-বাংলার জিএম কামরুল ইসলাম

ঢাকা: ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের প্লেন বিধ্বস্ত হওয়ার কারণ নিয়ে কতিপয় লোক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন অভিযোগ করে প্রতিষ্ঠানটির মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) কামরুল ইসলাম বলেছেন, কেউ কেউ এই বলে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন যে, পাইলটের গাফেলতি ছিল বা তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন, কিন্তু এটা ঠিক নয়। একজন পাইলট ১৪ ঘণ্টা ডিউটি আওয়ারের মধ্যে ১১ ঘণ্টা ফ্লাই করতে পারেন, এটাই নিয়মে আছে।

কামরুলের ভাষ্যে, বিধ্বস্ত প্লেনের পাইলট আবিদ সুলতান কাঠমান্ডুতে ফ্লাই করার আগে ৪৫ মিনিটের ছোট ছোট ফ্লাই করেছেন। তার ফ্লাই করার আরও ঘণ্টা ছিল।

তিনি অবসাদগ্রস্ত ছিলেন না। তাছাড়া, বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে দেশীয় এয়ারলাইন্সের পক্ষে দাঁড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছেন ইউএস-বাংলার এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

বুধবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর বারিধারায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করছিলেন কামরুল ইসলামে। গত ১২ মার্চ দুপুরে কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয় বিএস২১১ ফ্লাইট। এতে এখন পর্যন্ত পাইলট, কো-পাইলটসহ ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে। অবতরণের সময় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) টাওয়ার ও পাইলটের কথোপকথনের একটি অডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়েছে। সেটি বিশ্লেষণ করে পর্যবেক্ষকরা দুষছেন রানওয়ে নিয়ে এটিসির দু’রকমের নির্দেশনাকে।

ব্রিফিংয়ে কামরুল ইসলাম বলেন, ডিএনএ টেস্টের মতো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেপাল সরকার মরদেহ হস্তান্তর করতে চাইছে। মরদেহ যেন সহজে হস্তান্তর করা হয়, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি আমরা।

‘এটাকে আমরা দুর্যোগ হিসেবে দেখছি। আপনারা জানেন নেপালের ভূমিকম্পের সময় বাংলাদেশই প্রথম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। এ দুর্যোগকে গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার সিঙ্গাপুর সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন, তাহলে এর একটা সহজ সুরাহা হবে বলে আশা করছি। এরইমধ্যে আমাদের দেশের বিমান পরিবহনমন্ত্রী নেপাল রয়েছেন। তার মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। ’

কামরুল ইসলাম বলেন, মরদেহ আনতে কত সময় লাগবে, তা নির্ভর করছে নেপাল সরকারের ওপর। তাই দু’দেশের সরকারি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে কামরুল বলেন, মোস্ট অব দ্য ডেড বডিস বার্ন (বেশিরভাগ মরদেহই পুড়ে গেছে)। সেজন্য কেউ কাছেও যেতে পারছে না। তবে কতটুকু বার্ন তা শিওর করে বলা মুশকিল। ইউএস-বাংলার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হবে। মরদেহ আনার জন্য আমরা প্রস্তুত। কখন মরদেহ দেওয়া হবে সেটার ওপর নির্ভর করছে আনার প্রক্রিয়াটা।

ইউএস-বাংলার জিএম বলেন, ডিএনএ টেস্ট করতে পরিবারের সদস্যদের যেতে হবে। যারা পাসপোর্ট না থাকার কারণে যেতে পারেননি, একটু সহযোগিতা করুন। আমরাই পাসপোর্ট করার ব্যয়ভার বহন করবো। আমাদের এয়ারক্রাফট প্রস্তুত আছে। মরদেহ হস্তান্তর করলে দ্রুত নিয়ে আসবো।

‘এছাড়া আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পৃথিবীর যে কোনো দেশে নিয়ে যেতে আমরা প্রস্তুত। এরইমধ্যে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আমরা কথা বলছি। যদি নেপাল থেকে সরাসরি নিয়ে যেতে হয়, তাও নিয়ে যাওয়া হবে। উন্নত চিকিৎসার জন্য যা যা করা দরকার সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। ’

তিনি বলেন, স্বজনরা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার অভিযোগ তুলেছেন। কিন্তু বিষয়টি আর আমাদের হাতে নেই। দু’দেশের সরকারসহ বিভিন্ন অথরিটি কাজ করছে। আমরা লিয়াজোঁ করছি। মরদেহ শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ডিএনএ টেস্টের প্রক্রিয়ায় যাওয়ায় বিভিন্ন ফরম পূরণসহ অন্যান্য কারণে দেরি হচ্ছে।

কী কারণে প্লেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে সে বিষয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ইউএস-বাংলার জিএম বলেন, ফ্লাইটের সিভিআর (ককপিট ভয়েস রেকর্ডার) এবং ব্ল্যাক বক্স (ফ্লাইট ডাটা রেকর্ডার) উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে সবকিছু সংরক্ষিত আছে। ব্ল্যাক বক্সের তথ্য এলেই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতার কারণে অপপ্রচার চালানো হতে পারে উল্লেখ করে কামরুল বলেন, আমাদের কথা হচ্ছে, প্রতিবছর দেশের বাইরের এয়ারলাইন্সগুলো অনেক টাকা নিয়ে যাচ্ছে। বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে দেশীয় এয়ারলাইন্সকে আপনারা রক্ষা করুন, দেশীয় এয়ারলাইন্সের পাশে দাঁড়ান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০১৮
ইউডি/এসএইচ/এইচএ/

** মরদেহ দ্রুত হস্তান্তরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।