ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

জটে আটকা পড়ছে প্লেনও

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
জটে আটকা পড়ছে প্লেনও শাহজালালের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালে যাত্রীদের সবার ঠাঁই নেই/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাস-ট্রেন-লঞ্চের পাশাপাশি এয়ারপোর্টেও এখন উপচেপড়া ভিড়। ঈদে ঘরমুখী অপেক্ষারত যাত্রীদের বসার জায়গার সংকুলান করতে হিমশিম হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল। ওয়েটিং হলরুমে (এন্ট্রিহাইজ্যাগ) বসার জায়গা দূরের কথা, ঠিকমতো দাঁড়াবার অবস্থাও নেই। 

ঠাসাঠাসি করে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে সোমবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৪টায়। হলরুমের ৩৬০টি চেয়ার পূরণ হয়ে যাওয়ার পর আরও প্রায় সমান সংখ্যক যাত্রী দাঁড়িয়ে অপেক্ষমাণ।

একটিমাত্র সিকিউরিটি চেকিং পয়েন্ট ও দু’টি বহির্গমন গেট যাত্রী এবং এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব রেডি থাকলেও শুধু বহির্গমন পথ ব্যস্ত থাকায় বিকেলের দিকে ফ্লাইট বিলম্ব হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

একটি প্রবেশপথ নিয়ে সব এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের অভ্যন্তরীণ রুটের ইনচার্জ এবাদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, গেট বাড়ানো খুবই জরুরি। না হলে এতো যাত্রীকে সার্ভিস দেওয়া সম্ভব নয়।  

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের শিফট ইনচার্জ ফেরদৌস আহমেদ জানান, দুপুর ২টা ৪০ মিনিট থেকে ৩টা পর্যন্ত আমাদের পাঁচ মিনিট পর পর ফ্লাইট ছিল। এসময় গেটে জট থাকায় সময়মতো ফ্লাইট ছাড়তে বেশ হিমশিম খেতে হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট হয়।  

অন্যরাও অভিন্ন মতামত দিয়ে দ্রুত গেট বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।

ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে প্রায় সব এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট বাড়িয়ে দিয়েছে। আকাশে সুনামের সঙ্গে আধিপত্য ধরে রাখা দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে অন্য সময় ১১টির মতো ফ্লাইট পরিচালনা করলেও সোমবার (২০ আগস্ট) দেশের মোট ৭টি রুটে ১৭টি ফ্লাইট দিয়েছে।
 
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের জিএম (মার্কেটিং সাপোর্ট অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) কামরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকা-সৈয়দপুর, ঢাকা-যশোর ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৪টি করে, ঢাকা-রাজশাহী ২টি, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-বরিশাল ও ঢাকা-কক্সবাজার রুটে একটি করে ফ্লাইট রয়েছে।
 
দেশীয় এ এয়ারলাইন্সটি ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে অন্য সময়ে ড্যাশ ৮কিউ ৪০০ দিয়ে দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করলেও বাড়তি চাহিদা মেটাতে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দিয়ে যাত্রী আনা নেওয়া করছে। তারপরও যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী টিকিট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক আগেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের কাউন্টার 
অন্যদিকে বেসরকারি এয়ারলাইন্স কোম্পানি নভোএয়ার দেশের ৭টি রুটে মোট ২৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তাদের নিয়মিত ফ্লাইটের সংখ্যা ১৮টি। তাদের কাউন্টারেও উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। ভিড় রয়েছে রিজেন্ট এয়ারওয়েজ ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাউন্টারেও।
 
একসময় দিনে একটি বা দু'টি ফ্লাইটের যাত্রীই পাওয়া যেতো না দেশের অনেক রুটে। এখন সেখানে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ছাড়াও আরও তিনটি বেসরকারি কোম্পানি ফ্লাইট চুটিয়ে ব্যবসা করছে। সে তুলনায় বাড়েনি বিমানবন্দরের পরিসর।
 
স্বাভাবিকভাবেই দিন দিন যাত্রী বাড়ছে। সেইসঙ্গে ঢাকা থেকে বের হওয়ার সড়কপথের প্রত্যেকটি রুটে দুর্ভোগ, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যাম, ট্রেনের টিকিটের অপ্রতুলতার কারণে মানুষ আকাশপথ বেছে নিচ্ছে বলেই মত সাধারণ মানুষ, এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ- সবার।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, আগস্ট ২০, ২০১৮
এসআই/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।