ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

শাহজালাল বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের উদ্বোধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
শাহজালাল বন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের উদ্বোধন অ্যাভিয়েশন সেক্টর

ঢাকা: দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ।

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা ২০মিনিটে ওই বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর ফলক উন্মোচন করেন তিনি।

এর আগে সকাল ১০টায় বিমানবন্দরে এসেই জাতীয় পতাকাবাহী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে নতুন যুক্ত হওয়া বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ড্রিমলাইনার ৭৮৭-৯ সিরিজের নতুন দু’টি উড়োজাহাজ ‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

টার্মিনাল-৩ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী এ উন্নয়ন কাজ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগদেন। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান চলছে।

অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়ামের (এডিসি) মাধ্যমে জাপানি কোম্পানি মিতসুবিশি, ফুজিটা ও কোরিয়ান কোম্পানি স্যামসাং-এ তিনটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান তৃতীয় টার্মিনাল ভবনের নির্মাণকাজ করবে। টার্মিনালটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হতে সময় লাগবে চার বছর।

আরও পড়ুন>>>‘সোনার তরী’ ও ‘অচিন পাখি’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

অত্যাধুনিক এ টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় হবে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বর্তমানে শাহজালাল বিমানবন্দর বছরে ৮০ লাখ যাত্রীসেবা দিতে সক্ষম। এটি নির্মিত হলে এ বিমানবন্দর দিয়ে বছরে মোট ২ কোটি যাত্রী চলাচল করতে পারবেন।

নতুন এ টার্মিনালের মূলভবনের কলাম, সিলিংসহ বিভিন্ন স্থানের ডিজাইনে পদ্মফুলের নকশা থাকবে। টার্মিনালটি হবে অটোমেটেড। দেখতে হবে অনেকটা পদ্মফুলের মতো।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানায়, তৃতীয় টার্মিনালের তিনতলা বিশিষ্ট ভবনটির আয়তন হবে দুই লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। লম্বা ৭শ মিটার ও চওড়া ২শ মিটার। এ ভবনটির নকশা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সিঙ্গাপুরের সিপিজি করপোরেশন (প্রাইভেট) লিমিডেটের স্থপতি রুহানি বাহারিন। রুহানি বাহারিন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল ভবনের নকশা করেছেন।

শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে ২৪টি বোডিং ব্রিজের ব্যবস্থা থাকলেও প্রকল্পের প্রথমধাপে ১২টি বোডিং ব্রিজ চালু করা হবে। বহির্গমনের জন্য ১৫টি সেলফ সার্ভিস চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার থাকবে। এছাড়া ১০টি স্বয়ংক্রিয় পাসপোর্ট কন্ট্রোল কাউন্টারসহ মোট ৬৬টি ডিপারচার ইমিগ্রেশন কাউন্টার থাকবে।

আগমনীর ক্ষেত্রে পাঁচটি স্বয়ংক্রিয় চেক-ইন কাউন্টারসহ মোট ৫৯টি পাসপোর্ট এবং ১৯টি চেক-ইন অ্যারাইভেল কাউন্টার থাকবে।

টার্মিনালে ১৬টি আগমনী ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হবে। এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের ব্যাগেজের জন্য চারটি পৃথক বেল্ট স্থাপন করা হবে। টার্মিনাল ভবনের সঙ্গে সুড়ঙ্গপথ এবং উড়ালসেতু নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে মেট্রোরেল ও ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের সংযোগ ব্যবস্থাও থাকবে।

তৃতীয় টার্মিনালে থাকবে আন্তর্জাতিক মানের অত্যাধুনিক অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা। লাউঞ্জ, দোকান, রেস্টুরেন্টসহ সংশ্লিষ্ট অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবার সুবিধাও রাখা হবে।

তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রীদের দ্রুত সেবা দিতে গ্রাউন্ড সেবায়ও আসবে পরিবর্তন। বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শাহজালাল বিমানবন্দরে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিচ্ছে। তৃতীয় টার্মিনালে বিমান ছাড়াও অন্য প্রতিষ্ঠান গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের কাজে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে।

টার্মিনালটির কাজ সম্পন্ন হলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হবে। টার্মিনালটি নির্মাণ হলে এটি হবে এ অঞ্চলের সেরা বিমানবন্দর।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত রয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বিমানের পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান ইনামুল বারি, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মফিদুর রহমান, সিভিল এভিয়েশন সচিব মহিবুল হক, বিমানের এমডি মোকাব্বির হোসেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯
এমইউএম/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।