ঢাকা: বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেছেন, যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদের গাফিলতির কারণেই গত ৩ জুলাই দুটি বিমানের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। তবে এর সাথে অন্য আরও কোনো কারণ আছে কিনা তাও বিস্তারিত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, যে কারণেই এ ঘটনা ঘটে থাকুক না কেন, যারা দায়ী তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।
বুধবার (২৭ জুলাই) দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের হ্যাঙ্গার ও জিইসি ডিপার্টমেন্টে আকস্মিক পরিদর্শনে যান বিমান প্রতিমন্ত্রী। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
গত সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমানের সংঘর্ষ নিয়ে কথা বলে জড়িত সকলকে শোকজের নির্দেশ দেওয়ার পর বিমানের হ্যাঙ্গার ও জিইসি ডিপার্টমেন্টে আকস্মিক পরিদর্শনে যান প্রতিমন্ত্রী।
পরিদর্শনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোকাম্মেল হোসেন, বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (পরিচালন) এয়ার কমোডোর সাদিকুর রহমান চৌধুরী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মহিদুল ইসলাম, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের সদস্য (নিরাপত্তা) আবু সালেহ মোহাম্মদ মান্নাফি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দুটি বিমানের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ইতোমধ্যে এর সাথে জড়িত ৪ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই দুর্ঘটনায় বিমানের যে ক্ষতি হয়েছে, তা যাতে দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে আদায় করা যায়, তার জন্য বিধি-বিধানও সংশোধন করা হবে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিমানের নিয়োগে কোনো ধরনের অনিয়ম প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। পূর্বের নিয়োগ নিয়ে যে অনিয়ম হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি। বর্তমানে দুর্নীতি দমন কমিশন দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করছে। বর্তমান নিয়োগেও কোনো ধরনের নিয়মের ব্যত্যয় হবে না। যদি কেউ ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কোনো অনিয়ম করেন, তবে তাকেই তার দায় নিতে হবে। বর্তমান নিয়োগ নিয়ে যে অভিযোগগুলো আছে, সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বিমানের কর্মীদের আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রমের কারণেই প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমান সফলভাবে কোভিড সংকট মোকাবিলা করতে পেরেছে। সেই সময় যখন সারা বিশ্বের বিভিন্ন এয়ারলাইন্স বড় সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে তখনও বিমান তার কোনো কর্মীকে ছাঁটাই করেনি। কোভিডের সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় বিমানকে যে টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছিল, সেই টাকা ইতোমধ্যে সুদসহ সম্পূর্ণভাবে পরিশোধ করা হয়েছে। কোনো ফ্লাইট লিজ না নিয়েই এবারের হজ ফ্লাইট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে। বিমান ২০১৯ সাল থেকে তার প্রতি বছরের সকল দায়-দেনা পরিশোধ করে বর্তমানে লাভজনক অবস্থানে রয়েছে।
মাহবুব আলী বলেন, জাপানের সাথে আমাদের কথা হয়েছে, সেখানকার কোভিড জনিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলেই জাপানে বিমানের ফ্লাইট পরিচালনা শুরু হবে। চীনের গুয়াংজু ও কুনমিংয়ে বিমান ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি পেয়েছে। গোয়াংজু রুট বিমানের জন্য একটি ভালো গন্তব্য হবে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আগ্রহের জায়গা এটি। এছাড়াও অচিরেই মালে ও চেন্নাইতেও বিমানের ফ্লাইট চালু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২২
এমআইএইচ/এমজেএফ