ঢাকা: নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছাড়াই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদকে আনতে যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ৪ কর্মীকে। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভিভিআইপিরা যখন মুভ করেন তখন কে সঙ্গে যাবেন, এয়ারক্রাফট কে চালাবেন, ক্রেবিন ক্রু কে থাকবেন সমস্ত কিছুই এসএসএফ (স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স) নির্ধারণ করে। এখন এসএসঅএফ যদি কাউকে নির্ধারণ করে, সিভিল এভিয়েশন সেটা ওভারটেক করতে পারবে না। ওখান থেকে যেভাবে লিস্ট দেওয়া হয় এবং নিরাপত্তা এজেন্সি যারা আছে তারা যেভাবে নির্দেশনা দেয় সেই অনুযায়ী লোক যায়। বিমান কোনো সময় এটা নির্ধারণ করতে পারে না। এমনকি বিমানের এমডিও যেতে পারেন না যদি তারা অনুমতি না দেয়। তবুও এটা নিয়ে আমরা তদন্ত করব। আমাদের পক্ষ থেকে যদি কোনো ধরণের গাফিলতি থাকে, গাফিলতিতে যদি কেউ জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা প্রধান এবং তিন কেবিন ক্রুকে নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছাড়াই ভিভিআইপি ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনের জন্য যুক্তরাজ্যে পাঠানো হয়। ভিভিআইপি ফ্লাইটের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) না মেনে নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছাড়াই তাদের কেন ফ্লাইটে পাঠানো হয়েছে, এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি বিমান কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও তার সফরসঙ্গীদের লন্ডন থেকে ঢাকায় নিয়ে আসবে বিমানের বিজি২০২ ফ্লাইট। ভিভিআইপি এই ফ্লাইটে দায়িত্ব পালনের জন্য ১৩ নভেম্বর বিমানের ৪ কর্মীকে লন্ডনে পাঠানো হয়। এরমধ্যে বিমানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (নিরাপত্তা) তাইজ ইবনে আনোয়ার, ফ্লাইট পার্সার সুফিয়া আক্তার সুপ্তি, ফ্লাইট স্টুয়ার্ড আপন কুমার সিংহ সিনহা এবং ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস মারিয়ান ফাতেমা শেহেলীর নিরাপত্তা ছাড়পত্র ছিল না।
পরে বিষয়টি ভিভিআইপি ফ্লাইটের নিরাপত্তা-সংশ্লিষ্টদের নজরে এলে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য বলা হয়। তবে তাদের কেউ দেশে ফিরে আসেননি। বিমানের খরচে তারা লন্ডনে হোটেলে অবস্থান করছেন। পরবর্তীতে ওই তিন কেবিন ক্রুকে ম্যানচেস্টার থেকে ঢাকাগামী শিডিউল ফ্লাইটে ডিউটি দেওয়া হয়েছে।
মূলত বিমানের গ্রাহক সেবা বিভাগ কেবিন ক্রুদের দায়িত্ব বণ্টন করে থাকে। সূত্র জানায়, ভিভিআইপি ফ্লাইটের কেবিন ক্রুদের সকালে পাঠানো হয় লন্ডনে। আর সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স আসে দুপুরের দিকে। যাদের নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স আসেনি, তাদের ভিভিআইপি ফ্লাইট থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই রুটে বিমানের প্রতিদিন ফ্লাইট রয়েছে। তাদের এখন ভিভিআইপি ফ্লাইটের বিপরীতে শিডিউল ফ্লাইটে ডিউটি দেওয়া হয়েছে।
ভিভিআইপি ফ্লাইটে ককপিট ক্রু ছাড়া অন্য কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে জেনারেল ম্যানেজার বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাইজ ইবনে আনোয়ার বিমানের নিরাপত্তা বিভাগের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার। তবে বিমানের একটি সূত্র জানায়, তাইজ ইবনে আনোয়ারকে নিরাপত্তা বিভাগ ছাড়াও জিএসই বিভাগে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে মহাব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেই সূত্রে তিনি যেতে পেরেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২২
এমকে/এমজেএফ