ঢাকা: রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নতুন ভবনে দলের সুদীর্ঘ ইতিহাস-ঐতিহ্য সংরক্ষণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নতুনভাবে নির্মাণ হতে যাওয়া এই কার্যালয়ের সামনে থাকবে ২১ আগস্টের স্মৃতিফলক।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, নতুন এই ভবনে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের জন্য যে সব আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থাকা দরকার তার সব কিছুই সংরক্ষণ করা হবে। এই ভবনটি একটি অত্যাধুনিক ভবন হবে। কার্যালয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সকল ব্যবস্থা রাখা হবে। সেখানে দলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য আরকাইভ থাকবে। নতুন এ ভবনটি হবে ১০ তলা বিশিষ্ট। পড়া-শোনা ও গবেষণার জন্য সমৃদ্ধ পাঠাগারের ব্যবস্থা রাখা হবে নতুন এই ভবনে।
এ ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে একটি স্থায়ী স্মৃতিফলক নির্মাণ করা হবে। গত বছর ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় নতুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসব ব্যবস্থাপনা রাখার পরিকল্পনার বিষয়গুলো জানান দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় জরাজীর্ণ এবং আধুনিক সুযোগ সুবিধা না থাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে। কেন্দ্রীয় কমিটির সভা (প্রধানমন্ত্রী থাকলে গণভবনে), যৌথসভাগুলোও সভাপতির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এ সব সমস্যা দূর করতে নতুন ভবন নির্মাণের গুরুত্ব অনুভবন করে তা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এই জায়গাটি আওয়ামী লীগের মালিকানায় না থাকায় এতদিন নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়নি। বছর তিনেক আগে এই জায়গাটি কিনে নেয় আওয়ামী লীগ। এর পরই নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত ১৭ জুলাই থেকে আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পুরনো ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। এই ভবনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে দলের সহযোগী সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছিলো। বর্তমানে পুরনো ভবনের বিপরীত পাশে ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে একটি অস্থায়ী কার্যালয় করা হচ্ছে। ভাড়া হিসেবে এই ভবনটি নেয়া হয়েছে। সেখানে সহযোগী সংগঠনগুলোও দাপ্তরিক কার্যক্রম চালাবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পুরনো ভবন ভাঙা শুরু হওয়ার পর দলের সহযোগী সংগঠনগুলো বিভিন্ন জায়গা থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ ও যুব মহিলা লীগ আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে দাপ্তরিক কাজ চালাচ্ছে।
এদিকে ১৯ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের ভবনের মালিকের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ভাড়া সংক্রান্ত চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এখন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি পাওয়ার পর ওই ভবন ব্যবহার করা শুরু হবে বলে জানা গেছে। তবে ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ দুই একটি সহযোগী সংগঠন সেখান থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলেও জানা গেছে। তিন বছরের জন্য ৫ তলা বিশিষ্ট এই ভবনটির চারটি ফ্লোর ভাড়া নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, আগামী ২০১৮ সালের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ করার টার্গেট নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময় ১৮১৩ ঘন্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এসকে/এমজেএফ/