আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে আওয়ামী লীগের সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলন সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যেই কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ চার সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় নিশ্চিত করতে দলকে সুসংগঠিত ও সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছে আওয়ামী লীগ। একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কাঙ্ক্ষিত বিজয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে প্রস্তুত করা হচ্ছে দলকে।
আওয়ামী লীগের রাজনীতির একটি বড় শক্তিই হলো এ সংগঠনগুলো। তাই, গত বছর অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনের পর এবার সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনের তৎপরতা শুরু হয়েছে।
তারই ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জানুয়ারি যে ৪টি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয় সেগুলো হলো মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ ও আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ।
সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এ সংগঠনগুলোর কমিটির মেয়াদ তিন বছর। সম্মেলনের পর এক দশকেরও বেশি সময় হলো সংগঠনগুলোর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
এদিকে গত দেড় বছর আগে আরও চারটি সংগঠনের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এ সংগঠনগুলোর সম্মেলনও শেষ হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগ সূত্র। এ সংগঠনগুলো হলো যুব লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও কৃষক লীগ।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের ওই নেতারা জানান, কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর যথা সময়ে সম্মেলন না হলে সর্বস্তরের নেতাকর্মীর মধ্যেই একটা ক্ষোভ-হতাশা কাজ করে। ফলে সংগঠন ঝিমিয়ে পড়ে এবং অনেকটা স্থবিরতা নেমে আছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সর্বস্তরের নেতাকর্মী যাতে স্বক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখে সেটা নিশ্চিত করা হবে।
এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েই দ্রুত সময়ের মধ্যে দলের সগযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলন শেষ করা হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই এইসব সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ বাকি ৪ সংগঠনের সম্মেলনের তারিখও শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছে ২০০০ সালের ২০ জুলাই আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ, ২০০৩ সালের ১২ জুলাই মহিলা আওয়ামী লীগ, ২০০৪ সালের ১৫ মার্চ যুব মহিলা লীগ। ২০০৪ সালের ৮ আগস্ট তাঁতী লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিলো। এই চারটি সংগঠনের কমিটির মেয়াদ এক দশকেরও বেশি সময় আগে উত্তীর্ণ হয়েছে।
এছাড়া ২০১২ সালের ১১ জুলাই স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ১৪ জুলাই যুবলীগ, ১৭ জুলাই জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং ১৯ জুলাই কৃষক লীগের সম্মেলন হয়। প্রায় দেড় বছর হলো এসব সংগঠনের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। মাত্র দুইটি সংগঠনের কমিটির মেয়াদ রয়েছে। এ সংগঠন দু’টি হলো ছাত্রলীগ ও স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিক সংগঠনের সম্মেলন করা হবে। এ সংগঠনগুলোর আওয়ামী লীগের শক্তি, তারা নির্বাচনসহ সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে আওয়ামী লীগকে সহযোগিতা করে থাকে।
তাছাড়া সর্বক্ষেত্রে গণতন্ত্র চর্চার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে এ সংগঠনগুলোর সম্মেলনের মাধ্যমে সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের চাঙা করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২১, ২০১৭
এসকে/ওএইচ/এমজেএফ