প্রকাশ্যে মাঠে না নামলেও প্রয়াত নেতার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা, শহীদ পরিবারের সন্তান সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের নাম উপনির্বাচনের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন- এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।
ভাটি বাংলার অহংকার খ্যাত প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুর পর ৯০ দিনের ভেতরে সুনামগঞ্জ-২ আসনে উপনির্বাচনের বাধ্য-বাধকতা রয়েছে।
উপনির্বাচনে সুরঞ্জিতের স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা অথবা একমাত্র সন্তান সৌমেন সেনগুপ্তের প্রার্থী হওয়া নিয়েই বেশি আলোচনা চলছে। উচ্চশিক্ষিতা ও মার্জিত আচরণের জয়া কিংবা সৌমেনকে প্রার্থী করা হলে দিরাই-শাল্লার সকলেই সুরঞ্জিতের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তা মেনে নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে প্রকাশ্যে কোনো কথা বলেননি মা-ছেলে। কেবল জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত তারা মেনে নেবেন।
সুরঞ্জিতের দীর্ঘদিনের অনুসারী তরুণ প্রজন্মের নেতা অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলামের নামও আলোচনায় রয়েছে। নব্বইয়ের দশকের তুখোড় ছাত্রলীগ নেতা শামসুল এক সময় সিলেট ল’ কলেজের বিপুল ভোটে নির্বাচিত জিএস ও পরবর্তীতে ভিপি ছিলেন।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে ওই কমিটির দফতর সম্পাদক ছিলেন অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম। বর্তমানে সিলেটের অতিরিক্ত পিপির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
শামসুল ইসলামের বাড়ি দিরাই উপজেলার হাতিয়া গ্রামে। তার বড় ভাই শহীদ তালেব উদ্দিন ছিলেন সুনামগঞ্জ মহকুমা ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্মম নির্যাতনের পর পাকিস্তানি বাহিনীর দোসররা সাহসী তালেবকে হত্যা করে। স্বাধীনতার পর দিরাই সদরকে তালেবনগর ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৫ সালের পট পরিবর্তনের পর তালেবনগরের নামও পাল্টে যায়।
অ্যাডভোকেট শামসুলকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন তার সমর্থকরা। তিনিও সুরঞ্জিত বলয়সহ দিরাই-শাল্লার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রাখছেন।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমানের নামও আলোচনায় রয়েছে। এক সময়ের ঠিকাদার মতিউর রহমানের পূর্বপুরুষ ময়মনসিংহের বাসিন্দা। এ নিয়ে এলাকায় সিলেটী-ননসিলেটী নিয়ে টানাপোড়েন রয়েছে। আবার অনেকেই তার স্বজনদের বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি আলোচনায় তুলে ধরছেন।
শেষ পর্যন্ত দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের হাতে নৌকা তুলে দেওয়া হতে পারে- এমন গুঞ্জনও চলছে। ঢাকা থেকে শুরু করে সুরঞ্জিতের শেষকৃত্য পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন মিসবাহ। শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে লাখো মানুষকে সামাল দেন তিনি। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের অনেক দু:সময়ে পাশে ছিলেন তিনি। বর্তমানে সপরিবারে ওমরাহ পালনে রয়েছেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৭
এনইউ/জিপি/এএসআর