এরইমধ্যে সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য পদে আবেদন গ্রহণ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। যাচাই-বাছাইয়ের পর নভেম্বরে দেওয়া হবে নতুন কমিটি।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত) সৃজন ঘোষ সজিব বাংলানিউজকে বলেন, পদ প্রত্যাশীদের ৩শ’ জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে। এরমধ্যে সভাপতি পদে ৬০ ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮০টি আবেদন এসেছে। বাকিগুলো অন্যান্য পদের।
তিনি বলেন, জীবন বৃত্তান্তগুলো বৃহস্পতিবার (২৬ অেক্টবর) কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদে জমা দেওয়া হবে। এরপর সতর্কতার সঙ্গে জীবনবৃত্তান্তগুলো বাছাই করা হবে, যাতে অনুপ্রবেশকারীরা কমিটিতে স্থান না পায়।
এর আগে গত সোম ও মঙ্গলবার সিলেটে জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হয়। বুধবার ঢাকায় জীবনবৃত্তান্ত দেওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু এদিন কেউ জমা দেয়নি, বলেন তিনি।
যাচাই-বাছাইয়ের পর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্ব উপহার দেওয়া হবে এবং তা আগামী মাসেই, বলেন সিলেটের দায়িত্ব প্রাপ্ত এই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ১৬ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এম রায়হান চৌধুরী গ্রুপের কর্মীদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হন ছাত্রলীগ কর্মী ওমর আলী মিয়াদ। নিহত মিয়াদ সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি হিরণ মাহমুদ নিপু গ্রুপের কর্মী।
এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এম. রায়হান চৌধুরীসহ ১০ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরো ৪/৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আকুল মিয়া।
মিয়াদ হত্যাকাণ্ডের পর ১৭ অক্টোবর সিলেট জেলা ছাত্রলীগের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ওই তদন্ত কমিটিতে ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাকসুদ রানা মিঠু, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নওশাদ উদ্দিন সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলার দায়িত্বে থাকা সৃজন ঘোষ সজীব, সাংগঠনিক সম্পাদক শওকতুজ্জামান সৈকত এবং উপ-সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক রহমতুল্লাহ খান শাকুর।
কমিটির সদস্যরা মাঠ পর্যায়ে খোঁজ খবর নিয়ে যাওয়ার পরপরই ১৮ অক্টোবর জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। ওই দিন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ২৫ অক্টোবরের মধ্যে সিলেট জেলা শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে পদ প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর শাহরিয়ার আলম সামাদকে সভাপতি ও রায়হান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা ছাত্রলীগের ১০ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি দেওয়া হয়। ওই বছর ৪ ডিসেম্বর পূর্ণতা পায় সদ্য বিলুপ্ত ঘোষিত কমিটি। তবে শুরু থেকেই নানা বিতর্ক সঙ্গী করে ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতাদের পথচলা।
এ কারণে ২০১৬ সালের ২৫ মার্চ সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করে কেন্দ্র। অবশ্য প্রায় ৯ মাস পর ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর কমিটির ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। অবশেষে এই কমিটি বিলুপ্ত করে এবার নতুন নেতৃত্বের আশায় নেতাকর্মীরা।
২০১৩ সালের ২২ জানুয়ারি সিলেট জেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি পংকজ পুরকায়স্থকে ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের পর হিরণ মাহমুদ নিপু ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান।
কিন্তু সিপিবি-বাসদের সমাবেশে ভাঙচুর ও সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের ওপর হামলার ঘটনায় ওই কমিটিও বাতিল করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৭
এনইউ/জেডএম