পথে পথে জন সমাগম। হাজার হাজার মানুষের মিছিল পেরিয়ে যেতে হয়েছে তাকে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সড়কপথ রুদ্ধ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টির বিপরীতে এই উদাহরণ দেখালেন ওবায়দুল কাদের।
জনতার ভিড় ঠেলে কক্সবাজারের পথে রওনা হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বক্তৃতায় বিষয়টি বার বার উল্লেখও করেছেন। বলেছেন, দুপুর থেকে এখন রাত সাড়ে ১০টা। পথে লাখ লাখ মানুষ। কিন্তু কোথাও রাস্তা বন্ধ করেনি আওয়ামী লীগের নেতাকমীরা। পুরুষের পাশাপাশি রাস্তায় নারীদেরও ঢল নেমেছিলো। এদিকে দলের নেতা কর্মীরা তাকে অভিবাদন জানাতে কক্সবাজার সড়কে দু’টি হাতি নিয়ে আসেন।
শনিবার (০৪ অক্টোবর) দুপুরে চট্রগ্রামে আনোয়ারায় আওয়ামী লীগের প্রয়াত প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান বাবু’র মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভা দিয়ে তার কর্মসূচি শুরু হয়। বিকেলে চন্দনাইশের পথসভায় যোগ দেন। দুই কিলোমিটার লম্বা মানুষের একের পর এক মিছিল পেরিয়ে ওবায়দুল কাদের চন্দনাইশ স্থানীয় একটি স্কুল মাঠে জনসমাগমে বক্তব্য রাখেন।
চন্দনাইশ থেকে আবারও রওনা হন কক্সবাজারের দিকে। নিধারিত আরও চারটি পথসভা করার কথা থাকলেও পথে পথে যে ঢল নামে তাতে পথসভার সংখ্যা দাঁড়ায় ১০টিতে। এদিকে কক্সবাজার সদরে গিয়ে হোটেল কক্সটুডেতে পৌঁছাতে মধ্যরাত নেমে আসে। সঙ্গে রয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফসহ কেন্দ্রীয় কমিটির একটি টিম।
বিএনপি চেয়ারপাসন খালেদা জিয়ার সফরের পর পরই আওয়ামী লীগ এই প্রথম কোনো বড় ধরনের শোডাউন করলো। যেসব স্থানে খালেদা জিয়া পথ সভা করে গেছেন সেই একই স্থানগুলোতে আওয়ামী লীগের নেতাকমীরা জনসভায় মিলিত হন। সেখানে শতাধিক গাড়ি বহর, ছোট বড় অসংখ্য মিছিল ও রাস্তার দু’ধারে নারী পুরুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পথসভার বক্তব্যে নৌকার জন্য প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের তাগিদ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন ও আন্দোলন দু’টিতেই ফেল করে। আগামী নির্বাচনেও ইনশাআল্লাহ আমরা (আওয়ামী লীগ) জয়ী হবো, বিএনপি ফেল করবে। দলের মনোনয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ তাকেই মনোনয়ন দেবে জনগণের কাছে যার গ্রহনযোগ্যতা আছে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। সংবিধানের বাইরে যাবার প্রশ্নই ওঠে না। কাউকে জেতানোর জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর কখনই আসবে না।
রোহিঙ্গা পরিস্থিতির পর থেকে ওবায়দুল কাদের প্রায় এক মাসের মতো কক্সবাজার চষে বেড়িয়েছেন। বক্তৃতায় তিনি জানান, সাত বার এসে ২২ দিন রোহিঙ্গা ইসুতে কক্সবাজার অবস্থান করেছেন। এবারের সফর নিয়ে এটা তার অষ্টম সফর।
সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে কাদের বলেছেন, উন্নয়ন হয়েছে আরও হবে। নৌকা নিয়ে প্রস্তুত হয়ে যান। ঘরে ঘরে মানুষের কাছে যান। উঠোন বৈঠক করুণ।
কাদের আরও বলেন, কোনো সাম্প্রদায়িক লোকদের দলে নেবেনে না। মনোনয়ন নিয়ে ঝগড়া করবেন না। দলে কাউকে ফ্রি-স্টাইলে চলতে দেয়া হবে না। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরা মনোনয়ন পাবেন।
তিনি বলেন, দল ভারী করার জন্য খারাপ লোকদের দলে টানবেন না। দলে কোনো পকেট কমিটি করবেন না। জনগণকে খুশি রাখুন। যারা মানুষকে কষ্ট দিয়েছেন তারা গিয়ে ক্ষমা চান। এটাই দলের নির্দেশ।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দেখার মতো বা চোখে পড়ার মতো কোনো কাজ বর্তমান সরকার করে নাই। শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন করে ক্ষান্ত নন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশেও দাঁড়িয়েছেন।
এছাড়া সাতকানিয়া, লোহাগড়া, চকোরিয়া সবশেষ রামুতে পথসভা করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা। এরপর রোববার (০৫ নভেম্বর) সকালে রোহিঙ্গাদের জন্য সোলার দেওয়ার কাযক্রম শুরু করবেন এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্প কতুপালং এলাকায় যাবেন ওবায়দুল কাদের।
আরও পড়ুন>>
** নির্বাচনে ফেল করবে বিএনপি: কাদের
** ‘বিশ্বমিডিয়ায় দেখাতে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপির হামলা’
বাংলাদেশ সময় ০২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৫, ২০১৭
এসএ/এসআরএস