ডাক্তার, পুলিশ, সাংবাদিক, ছাত্রনেতা নানা পরিচয়ে সম্মুখ থেকে লড়ছেন তারা। এমনই একজন তরুণ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ডাকসুর সদ্য বিদায়ী স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী।
করোনাকালে কল্যাণমুখী নানা কর্মসূচির কারণে তরুণদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠছেন এ ছাত্রনেতা।
করোনা মহামারিতে সঙ্কটাপন্ন রোগীদের জন্য বিনামূল্যে জরুরি অক্সিজেন সরবরাহে সাদের ‘জয় বাংলা অক্সিজেন সেবার’ উদ্যোগটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক আলোচানায় এসেছে। ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের আর্থিক সহায়তায় প্রাথমিকভাবে ১২টি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) থেকে এ সেবা কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তার এই উদ্যোগের সঙ্গে রয়েছেন ছাত্রলীগের উপ-বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ।
সাদ জানান, এ কাজে কোনো ফি কিংবা জামানত দিতে হবে না, চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র দেখালেই হবে। সেবা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ফেরত দিতে হবে সিলিন্ডার।
সাদ আরও জানান, আমরা পাঁচজনকে শনিবার (২৭ জুন) পর্যন্ত সেবা দিয়েছি। এর মধ্যে চারজন করোনারোগী এবং একজন নন কোভিড। রাজধানীর যেকোনো এলাকা থেকে ০১৬২৩০০০১০০, ০১৬৭৭১২৫৭৫৮, ০১৭২৫৩৪৩০৩৮ নম্বরে ফোন করলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বাসায় অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও করোনা মহামারির এ সময়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অসহায়-দরিদ্র শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন সাদ বিন কাদের। ঢাকা থেকে তাদের জন্য পাঠানো হয়েছে খাদ্যসামগ্রী।
এ ব্যাপারে সাদ বলেন, আমি ভালবাসার উপহার নিয়ে সংকটে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে চেষ্টা করেছি। এক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, চাকরিজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আমার পরিবার। মোট কথা মানুষের সহযোগিতায় মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি। তার উদ্যোগে ইতোমধ্যেই সহায়তা পেয়েছে প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী।
রিকশা, ভ্যান, ট্রাক্টর ও টমটম চালকদেরও সহায়তা করেছেন ছাত্রলীগের এই নেতা।
অসহায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষগুলোকে খাদ্যসামগ্রী দিয়ে সহায়তার ব্যাপারে তিনি বলেন ‘লকডাউনের কারণে সবকিছুই বন্ধ। বাসায় খাবার না থাকলে এসব মানুষ বের হবেনই। এর ফলে তাদের পরিবারের সদস্যরাও ভাইরাসের ঝুঁকিতে পড়বেন।
পরিবারগুলোকে বাঁচাতে হবে তাই রিকশা, সিএনজি, ভ্যান, ট্রাক্টর এবং টমটমচালক ভাইদের জন্য উদ্যোগ নেই। এদের ৪শ পরিবারের কাছে আমি ১৫দিনের খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেই। শুধু শিক্ষার্থী কিংবা শহরের কর্মহীন নয়-নিজ জেলা ফেনীর অসহায়, দরিদ্র সাধারণ মানুষের পাশেও দাঁড়িয়েছেন ছাত্রলীগের এ উদীয়মান নেতা। রাজনীতির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবাকেও নিয়েছেন ব্রত হিসেবে।
এ বিষয়ে সাদ বলেন, চিন্তা করি কিভাবে আমার জেলার মানুষের জন্য কিছু করা যায়। সে ভাবনা থেকে আমি গ্রামে চলে যাই। বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেই। কাউকে আমাদের কাছে আসতে হয়নি। কারো মুখের ছবি নেওয়া হয়নি। এছাড়াও কারো বাসায় খাবার না থাকলে আমাদের ফোন দেওয়া মাত্র আমরা খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছি। এছাড়াও গ্রামে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা এবং ওষুধ বিতরণ করা হয়।
ছাত্রলীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, বর্তমানে আমরা একটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। বৈশ্বিক এই সংকটে ছাত্রলীগ পুরোটা সময় ধরে মানুষের পাশে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। দুঃখজনক হলেও সত্য অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলাকে সেভাবে দেখা যায়নি। তবে বাম সংগঠনগুলোর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। শুধু ছাত্র সংগঠন নয় এই মহামারিতে সবাইকে ভাই-বন্ধু হয়ে একে অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৩ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
এসএইচডি/এএটি