রোববার (৫ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এনামুল হক বিজয় জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও জামতৈল সরকারি হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।
বিজয়ের বড় ভাই মো. রুবেল বাংলানিউজকে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসকরা বিজয়কে
মৃত ঘোষণা করেন। তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনার প্রস্তুতি চলছে।
গত ২৬ জুন বিকেলে সিরাজগঞ্জে বর্ষীয়ান জাতীয় নেতা সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ। ওই অনুষ্ঠানে আসার পথে জেলা শহরের বাজার স্টেশন এলাকায় বিজয়ের ওপর হামলা চালিয়ে মাথায় কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ। তাকে এনায়েতপুর খাজা এনায়েতপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে পরদিন ২৭ জুন ঢাকার নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই আইসিইউতে রেখে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। নয়দিন লাইভ সাপোর্টে থাকার পর রোববার তার মৃত্যু হয়।
ওই হামলার ঘটনায় বিজয়ের বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে জেলা ছাত্রলীগের দুই সাংগঠনিক সম্পাদকসহ সংগঠনের পাঁচ নেতা-কর্মীর নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা চার/পাঁচ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এরই মধ্যে মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা আশিকুর রহমান বিজয়, জাহিদুল ইসলাম ও সাগর কারাগারে রয়েছেন। জামিনে মুক্ত রয়েছেন আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আল-আমিন। গত ২৮ জুন মামলার দুই আসামি জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শহরের সয়াগোবিন্দ ভাঙ্গাবাড়ী মহল্লার আল-আমিন ও আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শহরের দিয়ারধানগড়া মহল্লার শিহাব আহমেদ জিহাদকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
অপরদিকে, ছাত্রলীগ নেতা এনামুলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে জেলা সদরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বিন আহম্মদের নেতৃত্বে একাংশের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো জানায়, প্রভাবশালী নেতা মোহাম্মদ নাসিম মারা যাওয়ার পর তার অনুসারীদের মধ্যে এক ধরনের অভিভাবকশূন্যতা তৈরি হয়েছে। মোহাম্মদ নাসিম সিরাজগঞ্জ জেলার প্রতিটি উপজেলার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেন। তার সন্তান ও সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয় কেন্দ্র কিংবা জেলার রাজনীতিতে এখনো তেমন প্রভাব গড়ে তুলতে পারেননি। এই সুযোগে নাসিমের অনুসারীদের কোণঠাসা করতে মরিয়া হয়ে পড়েছে তাদের বিরোধীপক্ষ।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, গত ২৬ জুন হামলার ঘটনার পর থেকেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যা আজও বিদ্যমান রয়েছে।
** সিরাজগঞ্জে ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদককে মারধর, ২ নেতা বহিষ্কার
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০২০
এসআরএস